Advertisement
E-Paper

দল তাড়ানোর পর ‘উইপোকা তত্ত্ব’ নিয়ে ফ্রন্টফুটে এসে পাল্টা ধারালো সুরে বৈশালী

তাঁর অভিযোগ কার বিরুদ্ধে? বৈশালী বলেন, ‘‘সবাই চলে যাচ্ছেন! যিনি পড়ে থাকবেন, তাঁর বিরুদ্ধেই হবে। আর কার বিরুদ্ধে?’’

বালির বিধায়ক বৈশালী ডালমিয়া।

বালির বিধায়ক বৈশালী ডালমিয়া। —ফাইল চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০২১ ২০:৩২
Share
Save

দলীয় ‘শৃঙ্খলাভঙ্গ’-এর দায়ে বহিষ্কৃত হওয়ার পর আরও ফ্রন্টফুটে এসে তীক্ষ্ণ আক্রমণে গেলেন বালির ‘দলহীন’ বিধায়ক বৈশালী ডালমিয়া। তাঁর ক্ষোভ যে হাওড়া জেলা নেতৃত্বের (বিশেষত, মন্ত্রী অরূপ রায়) বিরুদ্ধে, শুক্রবার দল তাড়িয়ে দেওয়ার পর বার বার সেটাই বোঝাতে চেয়েছেন বৈশালী। সরব হয়েছেন দুর্নীতির অভিযোগেও। তিনি কি এ বার বিজেপি-তে যোগ দেবেন? বৈশালীর সংক্ষিপ্ত জবাব, ‘‘লেটস সি। দেখা যাক।’’ অর্থাৎ, সেই সম্ভাবনা একেবারেই উড়িয়ে দেননি প্রয়াত জগমোহন ডালমিয়ার কন্যা। উল্টে তিনি তাঁর ‘উইপোকা’ তত্ত্বে অনড়। আগের মতোই তিনি বলছেন, ‘‘উইপোকারা দলকে ভিতর থেকে কুরে কুরে খাচ্ছে!’’

লক্ষ্ণীরতন শুক্ল মন্ত্রিত্ব এবং হাওড়া তৃণমূলের সভাপতি পদ ছাড়ার পর তাঁর সেই সিদ্ধান্ত সমর্থন করেছিলেন বৈশালী। শুক্রবার রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় মন্ত্রিত্বে ইস্তফা দেওয়ার পরেও একই অবস্থান নিয়েছিলেন বৈশালী। সঙ্গে দলের কড়া সমালোচনা করেছিলেন। বলেছিলেন, লক্ষ্মী দলের কাজ করতে পারছেন না। লক্ষ্মীর মতো তিনিও দলের কাজ করতে পারছেন না। রাজীবের ঘটনার পরেও তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে প্রকাশ্যেই দলের সমালোচনা করেছেন বৈশালী। তার পরেই দল তাঁকে বহিষ্কার করেছে।

বহিষ্কারের সিদ্ধান্তের পরেই আরও বিস্ফোরক হয়েছেন বৈশালী। বলেছেন, ‘‘মানুষ পরিষেবা পাচ্ছেন না। বিধায়কদের কাছে ত্রাণের টাকা আসে না। আমপানের সময় ত্রাণের টাকা আমরা পাইনি। কোভিডের জন্য যে পরিমাণ চাল দেওয়ার কথা, সেটা থেকেও কেটে নেওয়া হল। মানুষ বিপাকে পড়েছেন। তাঁদের পাশে দাঁড়ানো, তাঁদের আগলে রাখা যদি দলবিরোধী কাজ হয়, তা হলে আমি সেটা করেছি!’

তাঁর অভিযোগ কার বিরুদ্ধে? প্রশ্ন শুনে কার্যত ফুঁসে ওঠেন বৈশালী বলেন, ‘‘সবাই চলে যাচ্ছেন! যিনি পড়ে থাকবেন, তাঁর বিরুদ্ধেই হবে। আর কার বিরুদ্ধে?’’ নাম না করলেও জগমোহন-কন্যার নিশানায় যে হাওড়া জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান অরূপ রায়, তা একেবারেই স্পষ্ট। দলের একাংশের অবশ্য অভিযোগ, বিধানসভা নির্বাচনে তিনি টিকিট পাবেন না বুঝেই দলের বিরুদ্ধে ক্রমাগত মুখ খুলেছেন বৈশালী। বালি এলাকায় তাঁর বিরুদ্ধে ‘বহিরাগত’ বলে পোস্টারও পড়েছিল। বহিষ্কারের পর শুক্রবার নির্বাচনের টিকিট বণ্টন নিয়েও অসন্তোষের কথা জানিয়ে বৈশালী বলেন, ‘‘আমি বলেছিলাম, কাকে টিকিট দেওয়া হবে বা হবে না, সেটা জেলা নেতৃত্ব নয়, ঠিক করুন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তা হলে বিধায়করা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে দায়বদ্ধ থাকবেন। সেটা যদি দলবিরোধী কাজ হয়, তা হলে আমি দলবিরোধী।’’ তাঁর কথায়, ‘‘আমায় প্রশ্ন করা হচ্ছে বলে জবাব দিচ্ছি। কোথাও কোনও অন্যায় হলেও চুপ করে থাকতে হবে। হাসি হাসি মুখে থাকতে হবে। সেটা তো হতে পারে না!’’

দল থেকে বহিষ্কৃত হলেও তিনি সাধারণ মানুষের পাশেই থাকবেন বলে জানিয়েছেন বিধায়ক বৈশালী। তাঁর কথায়, ‘‘অনেক দিন ধরেই যেখানে অভিযোগ জানানোর, সেখানে জানিয়ে আসছি। যখন দেখলাম, অরাজকতা হচ্ছে, তখন জানিয়েছি। যাঁরা দলবিরোধী কাজ করেছেন, তাঁদের কথা জানিয়েছি। কিন্তু কোনও কাজের কাজ হয়নি। সাধারণ মানুষ আমাকে এনেছেন। আমি তাঁদের হয়ে বলব না? যাঁরা ভোট দেবেন, তাঁরা প্রতিনিয়ত অত্যাচারিত হয়ে যাচ্ছেন।’’ স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে সরাসরি দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বালির বিধায়ক বলেন, ‘‘হাওড়া পুরসভার হাতে পর্যাপ্ত টাকা নেই। মানুষ পরিষেবা পাচ্ছেন না। টাকা থাকবে কী করে? সব তো প্রাক্তন কাউন্সিলরদের পকেটে ঢুকছে!’’

বেশ কিছু দিন ধরে দলের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে মুখ খোলায় তাঁর বিজেপি-তে যোগদানের জল্পনাও তৈরি হয়েছে। সে প্রশ্নের জবাবে বৈশালী জানিয়েছেন, ‘‘কারও সঙ্গে যোগাযোগ হয়নি। এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নিইনি। নিলে সাংবাদিক বৈঠক করে সকলকে জানাব।’’ তবে তিনি তেমন কোনও সম্ভাবনার প্রশ্নে একেবারে ‘না’ বলেননি। বরং যখন তৃণমূল তাঁকে বালিতে বিজেপি-র টিকিটে দাঁড়িয়ে জেতার চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে, তখন বলেছেন, তাঁর সঙ্গে চ্যালেঞ্জ নিলে তিনি সেই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেন। এবং সাধারণত হারেন না।

TMC Bally Baishali Dalmiya

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।