বৈশালী ডালমিয়া তৃণমূল থেকে বহিষ্কৃত। —ফাইল চিত্র।
বালির বিধায়ক বৈশালী ডালমিয়াকে বহিষ্কার করল তৃণমূল। দলবিরোধী কাজের অভিযোগে তৃণমূলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি তাঁকে বহিষ্কার করেছে। বেশ কিছু দিন ধরেই প্রকাশ্যে তৃণমূলের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে শুরু করেছিলেন বৈশালী। শুক্রবার রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় মন্ত্রিত্ব ছাড়ার পরও সংবাদমাধ্যমে রাজীবের সমর্থনে সরব হয়েছিলেন তিনি। তার পরই তাঁর বিরুদ্ধে এমন পদক্ষেপ করা হল। তিনি এখন দলহীন বিধায়ক। তবে তাঁর বক্তব্য, ‘‘মানুষকে আগলে রাখা যদি দলবিরোধী কাজ হয়, তাহলে অপরাধী আমি।’’
বৃহস্পতিবারই বনমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন রাজীব। তার পর দুপুরেই সংবাদমাধ্যমে রাজীবের সমর্থনে মুখ খোলেন বৈশালী। তিনি বলেন, ‘‘রাজীবের পদত্যাগে দলের অনেক বড় ক্ষতি হয়ে গেল। শুধু দলেরই নয়, এটা সাধারণ মানুষেরও ক্ষতি। এমন একজন দায়িত্ববান মন্ত্রীর ইস্তফা দলের জন্য সত্যিই দুশ্চিন্তা এবং অত্যন্ত দুঃখের বিষয়। সত্যিই কাজ করতে খুব অসুবিধা হচ্ছে। প্রত্যেকেই দলকে ভালবাসেন। কিন্তু আত্মমর্যাদাও তো রয়েছে। যাঁদের আত্মসম্মান রয়েছে, তাঁরা দিনের পর দিন এই অপমান মেনে নিতে পারেন না।’’
হাওড়া জেলায় দুই মন্ত্রী অরূপ রায় এবং রাজীবের মধ্যে বিবাদ সর্বজনবিদিত। কয়েক মাস আগে অরূপকে সরিয়ে জেলা সভাপতি করা হয় লক্ষ্মীরতন শুক্লকে। তিনিও সম্প্রতি মন্ত্রিত্ব এবং তৃণমূলের জেলা সভাপতির পদ ছেড়েছেন। জেলা তৃণমূলের সমীকরণে বৈশালীও বরাবরই রাজীবের পক্ষ নিয়ে এসেছেন। রাজীবের পদত্যাগের পরও নাম না করে অরূপকে একহাত নেন বৈশালী। বলেন, ‘‘সবাইকে তাচ্ছিল্য করেন উনি। মন্ত্রিত্ব একটা আলঙ্কারিক পদ। জনগণ সেটা দেয়নি। জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমরা সবাই সমান।’’
এই প্রসঙ্গে হাওড়া জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান অরূপ রায় বলেন, ‘‘দল সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দলের বিরুদ্ধে কথা বলে যাঁরা দলের ক্ষতি করছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। কারও কোনও ব্যক্তিগত অভিযোগ থাকতেই পারে। সেটা দলের ভিতরেই বলা উচিত।’’
তাঁর বিরুদ্ধেও বিভিন্ন সময় বৈশালী যে অভিযোগ তুলেছেন, সে প্রসঙ্গে অরূপ বলেন, ‘‘আমার বিরুদ্ধে কে কী বললেন, তাতে কিছু যায় আসে না আমার। আমি প্রথম দিন থেকে তৃণমূলে আছি। এঁদের কোনও গুরুত্ব নেই। এঁরা চলে যাওয়ায় দলের কোনও ক্ষতি হবে না। দলের প্রতীক না থাকলে এঁরা কেউ বিধায়ক হতে পারতেন না।’’
শুভেন্দু অধিকারী বিজেপি-তে যাওয়ার পর তৃণমূলের যে সমস্ত নেতাদের পদ্মশিবিরে যাওয়া নিয়ে জল্পনা চলছে, তার মধ্যে রয়েছেন রাজীব ও বৈশালী। এক জন সকালে মন্ত্রিত্ব ছেড়েছেন আর অন্য জনকে সন্ধ্যায় দলই বহিষ্কার করল। রাজীবকে ইতিমধ্যেই পদ্মশিবিরে স্বাগত জানিয়েছেন বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। বৈশালীর অপসারণের পর তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূলের মুষলপর্ব শুরু হয়েছে। আগামী দিনে আরও অনেক কিছু হবে দেখতে পাবেন।’’
২০১৬-র বিধানসভা নির্বাচনের আগে একই দিনে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন লক্ষ্মীরতন এবং বৈশালী। লক্ষ্মীরতন পদ ছাড়ার পর থেকেই বৈশালী দলের বিরুদ্ধে সরব। দলে কিছু মানুষ কাজ করতে দিচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেন তিনি। দলে থেকে যাঁরা উইপোকার মতো দলটাকে নষ্ট করছেন, তাঁরা বেইমান, এমন মন্তব্যও করেন তিনি। তবে বৈশালীকে নিয়ে তৃণমূলের অন্দরেও অসন্তোষ তৈরি হচ্ছিল। সম্প্রতি বালির একাধিক জায়গায় বৈশাখীর বিরুদ্ধে পোস্টার পড়া হয়। তাতে ‘বহিরাগত’ বৈশালীর বিরুদ্ধে ভূমিপূত্রদের প্রার্থী করার দাবি ওঠে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy