Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Asha Workers

‘টাকা মিলছে না করোনা বিমার’

অভিযোগ উঠছে, বিমাকৃত অর্থের জন্য ফর্ম পূরণ করে জমা দেওয়া সত্ত্বেও তাঁদের টাকা আসছে না।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

পারিজাত বন্দ্যোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২০২১ ০৬:৫৮
Share: Save:

সামনের সারির করোনা যোদ্ধারা সংক্রমিত হলে বিশেষ বিমার এক লক্ষ টাকা পাবেন বলে ঘোষণা করেছিল রাজ্য সরকার। ৫৪,৬০০ জন আশাকর্মী এই বিমার আওতায় আছেন। জেলা ও গ্রাম স্তরে কোভিড পরিষেবার একটা বিরাট অংশ ওই কর্মীদের উপরেই নির্ভরশীল। কিন্তু কাজ করতে করতে করোনায় আক্রান্ত অনেক আশাকর্মী বিমার প্রতিশ্রুত টাকা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ।

অভিযোগ উঠছে, বিমাকৃত অর্থের জন্য ফর্ম পূরণ করে জমা দেওয়া সত্ত্বেও তাঁদের টাকা আসছে না। কোথাও কোভিড-আক্রান্ত আশাকর্মী হোম আইসোলেশনে থাকায়
তাঁকে বিমার অর্থ থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে বলা হচ্ছে, করোনা-আক্রান্ত হয়ে বাড়িতে থাকলে বিমার টাকা পাওয়া যাবে না। এর জন্য হাসপাতালে থাকতে হবে। এই শর্ত ভিত্তিহীন বলে জানান আশাকর্মীরা।

‘‘অনেক জেলায় স্বাস্থ্য আধিকারিকদের বক্তব্য, ৩০ নভেম্বরের পরে যে-সব আশাকর্মী করোনায় আক্রান্ত, তাঁদের আর বিমার টাকা দেওয়া হবে না বলে নাকি স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে,’’ বলেন পশ্চিমবঙ্গ আশাকর্মী ইউনিয়নের রাজ্য সম্পাদিকা ইসমত আরা খাতুন। অভিযোগ, অনেক জায়গায় ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে বলা হচ্ছে, ভ্যাকসিন এসে গিয়েছে বলে আশাকর্মীরা আর কোভিড হলে বিমার টাকা পাবেন না। তবে স্বাস্থ্য ভবনের কর্তারাই জানান, এ কথা ঠিক নয়। ‘‘ভুল ধারণা তৈরি হয়েছে। বিমার টাকা বন্ধের কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। বরং এই খাতে অর্থ দফতর থেকে বেশ কিছু টাকা পাওয়া গিয়েছে,’’ বলেন রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী।

ইসমতের অভিযোগ, ভুল ধারণা ভাঙানোর চেষ্টা করছে না স্বাস্থ্য ভবন। উল্টে কোভিডে আক্রান্ত হয়ে কাজে কামাই হয়েছে বলে অনেক আশাকর্মীর স্থায়ী ভাতা (৪৫০০ টাকা) কেটে নেওয়া হয়েছে। বারুইপুর ব্লকের হরিহরপুর উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের এক আশাকর্মী বলেন, ‘‘৬ ডিসেম্বর আমার করোনা ধরা পড়ে। ১৫ দিন পরে নেগেটিভ রিপোর্ট আসে। বিমার ফর্ম পূরণ করতে গেলে ব্লক অফিস থেকে বলা হল, ৩০ নভেম্বরের পরে যাঁদের কোভিড হয়েছে, তাঁরা টাকা পাবেন না। বারুইপুর ব্লকেই আশা ও সেকেন্ড এএনএম মিলিয়ে ১৮ জনকে ফর্ম পূরণই করতে দেওয়া হয়নি।’’

দক্ষিণ ২৪ পরগনার মুখ্য স্বাস্থ্য অধিকর্তা সোমনাথ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। ৭ সেপ্টেম্বর একটি সরকারি নির্দেশিকায় বলা হয়, কোভিড
বিমার মেয়াদ ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হল। তাতে অনেকের ধারণা হয়েছিল, ৩০ নভেম্বরের পরে এটা আর কার্যকর থাকবে না। তাই অনেক আশাকর্মীর টাকা আটকে গিয়েছে। আমি দ্রুত সব ফর্ম পূরণ করানোর নির্দেশ দিয়েছি।’’

নদিয়ার চাকদহ ব্লকের মদনপুর-২ এলাকার মাজদিয়া উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের এক আশাকর্মী কোভিড আক্রান্ত হন ৩০ নভেম্বর। তাঁর নেগেটিভ রিপোর্ট আসে ২৩ ডিসেম্বর। তিনি বিমার ফর্ম পূরণ করেছেন, কিন্তু সেই ফর্ম ব্লক থেকে স্বাস্থ্য ভবনে জমা পড়েনি। ওই আশাকর্মী বলেন, ‘‘ব্লক অফিস জানিয়েছে, ৩১ জানুয়ারির আগে ফর্ম জমা দেওয়া যাবে না। এমনও জানানো হয়েছে যে, ভ্যাকসিন চালু হয়েছে বলে এ বার থেকে যাঁদের কোভিড হবে, তাঁদের আর বিমার ফর্ম পূরণই করানো হবে না।’’

পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরা ১৫ জন আশাকর্মী কোভিডের পরে বিমার ফর্ম পূরণ করে জমা দিয়েছেন। তাঁদের অধিকাংশই নভেম্বরে আক্রান্ত হন। কেউ বিমার টাকা পাননি। ওই জেলার দাঁতন-১ ও দাঁতন-২ ব্লকের অনেক আশাকর্মীর বিমার টাকা বকেয়া।

ডায়মন্ড হারবার স্বাস্থ্য-জেলার আমরাবতী উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের এক আশাকর্মী ৭০০০ জনকে পরিষেবা দেন। তাঁর কোভিড হয় ১৭ নভেম্বর। তিনি হোম আইসোলেশনে ছিলেন। অভিযোগ, তাঁকে বিমার ফর্ম পূরণ করতে দেওয়া হয়নি। ব্লক অফিস বলেছে, কোভিড-আক্রান্ত হয়ে বাড়িতে থাকলে টাকা মেলে না। একই অভিযোগ নামখানা ব্লকের দেবনিবাস স্বাস্থ্যকেন্দ্রের এক আশাকর্মীরও।

অন্য বিষয়গুলি:

Corona vaccine Asha Workers
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy