—প্রতীকী চিত্র।
নিম্নচাপের প্রভাবে আরও তিন দিন রাজ্যের প্রায় সব জেলাতেই বৃষ্টি হবে বলে জানিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। তার মধ্যে রাজ্যের উত্তর এবং দক্ষিণের একাধিক জেলায় ভারী বৃষ্টির সতর্কতাও দিয়েছে হাওয়া অফিস। এই অবস্থায়, রাজ্যে কী পরিস্থিতি তা নিয়মিত ভাবে জানাতে প্রশাসনের অফিসারদের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রয়োজনীয় ত্রাণসামগ্রী মজুত করার পাশাপাশি ২৪ ঘণ্টার জন্য কন্ট্রোল রুম চালু করতেও বলেছেন তিনি। আবহবিদেরাও জানিয়েছেন, আগামী কয়েক দিন বৃষ্টির পাশাপাশি সাগর উত্তাল থাকবে। আজ, রবিবার পর্যন্ত মৎস্যজীবীদের সমুদ্রযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা আছে। পাহাড়ি এলাকায় ভারী বৃষ্টিতে ধসের শঙ্কা রয়েছে।
শনিবার ডেঙ্গি নিয়ে জেলা প্রশাসনগুলির সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। সেই বৈঠকেই টেলিফোন-মাধ্যমে যোগ দেন মমতা। সূত্রের দাবি, বৈঠকে ঢুকেই মাটির দেওয়াল ভেঙে হওয়া দুর্ঘটনা সম্পর্কে জানতে চান তিনি। তাঁর নির্দেশ, বিডিওরা নিজেদের এলাকায় খেয়াল রাখবেন। যেখানে এমন মাটির বাড়ি রয়েছে বা বিপদ ঘটার সম্ভাবনা থাকবে, সেখানকার মানুষজনকে নিরাপদ জায়গায় পৌঁছে দিতে হবে বিডিওদেরই। এর পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, খারাপ আবহাওয়ার কারণে কোথায় কী পরিস্থিতি হচ্ছে, সেটার নিখুঁত বিবরণ প্রতিদিন রিপোর্ট আকারে জানাতে হবে তাঁকে। কোথাও কোনও মানুষ বিপদে পড়লে সঙ্গে সঙ্গে পদক্ষেপ করতে হবে।
এ দিকে আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, নিম্নচাপটি উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে আছে। আজ, রবিবার সেটি ওড়িশা-পশ্চিমবঙ্গ উপকূল দিয়ে স্থলভূমিতে প্রবেশ করবে। এই নিম্নচাপের প্রভাব আগামী মঙ্গলবার পর্যন্ত চলবে। এর প্রভাব রাজ্যের প্রায় সব জেলাতেই পড়বে। জোরালো বৃষ্টির ফলে নদীগুলিতে জলস্তর বাড়তে পারে। বস্তুত, এ দিন সকাল থেকেই কলকাতা-সহ রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় দফায়-দফায় জোরালো বৃষ্টি হয়েছে। বিকেল পর্যন্ত শুধু কলকাতা শহরে প্রায় ৫৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। মেঘলা আকাশ এবং জোরালো বৃষ্টির জন্য তাপমাত্রাও সে ভাবে বাড়তে পারেনি। এরই মধ্যে হুগলির ত্রিবেণী থেকে চুঁচুড়ার বেনাভারুই পর্যন্ত প্রায় ১৫ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ছোট ‘টর্নেডো’ হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, ত্রিবেণীতে গঙ্গার মাঝ বরাবর আচমকা ওই ঝড় দেখা যায়। তার তাণ্ডবে কেউ হতাহত না হলেও বেশ কিছু পুরনো পাঁচিল ভেঙে পড়ে। উপড়ে যায় গাছপালা, উড়ে যায় কিছু টিনের চাল। বিস্তীর্ণ এলাকায় চাষাবাদেরও ক্ষতি হয়েছে। বাঁশবেড়িয়ার পুরপ্রধান আদিত্য নিয়োগী জানান, ত্রিবেণী শ্মশানঘাটের একাংশের টিনের চাল উড়ে গিয়েছে। বিদ্যুতের তার ও কেবল লাইন ছিঁড়েছে। একটি লোহার বিদ্যুতের খুঁটি বেঁকে গিয়েছে। ত্রিবেণীর একাংশ টানা কয়েক ঘণ্টা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন ছিল। আবহবিদেরা জানান, কাছাকাছি কোনও শক্তিশালী নিম্নচাপ থাকলে তার প্রভাবে গঙ্গার উপরে এমন ঘূর্ণিপাক বা ছোট টর্নেডো হতে দেখা যায়।
এ দিন স্থানীয় ভাবে ঝড় হয়েছে উত্তর ২৪ পরগনার মিনাখাঁয়। কুমারজোল পঞ্চায়েতের আমতলা বাজার এলাকায় ভেঙে পড়ে পাঁচটি বাড়ি। বাজারের চিলেকোঠার ছাউনি উড়ে আহত হন মোসলেম মোল্লা নামে এক ব্যবসায়ী। তাঁকে কলকাতার আর জি কর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। তার ছিঁড়ে যাওয়ায় দীর্ঘক্ষণ বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল এলাকায়। রাস্তায় বিদ্যুতের তার পড়ে থাকায় যান চলাচল বন্ধ ছিল।
নিম্নচাপের প্রভাবে শুক্রবার রাত থেকেই উত্তরবঙ্গে বৃষ্টি শুরু হয়েছিল। এ দিনও দফায় দফায় পাহাড় এবং সমতলের জেলাগুলিতে বৃষ্টি হয়েছে। তার জেরে এ দিন দার্জিলিং মেল, পদাতিক এক্সপ্রেসের মতো ট্রেনগুলি দেরিতে চলেছে বলে খবর। এ দিনই মৌসম ভবনের খাতায় বর্ষা শেষ হয়েছে। সেই হিসাবে শেষ লগ্নে জোরালো বৃষ্টি সত্ত্বেও ঘাটতি মেটাতে পারেনি গাঙ্গেয় বঙ্গ। মৌসম ভবন জানিয়েছে, গাঙ্গেয় বঙ্গ-সহ দেশের সাতটি অঞ্চলে ঘাটতি মাথায় নিয়েই বর্ষা শেষ হয়েছে। তিন-চার দিন থমকে থাকার পরে কিছুটা গতি পেয়েছে বর্ষা বিদায়। এ দিন পঞ্জাব-হরিয়ানা থেকে বর্ষা বিদায় নিয়েছে। বর্ষা বিদায় নিয়েছে উত্তর এবং উত্তর-পশ্চিম ভারতের কিছু এলাকা থেকে। আগামী ২-৩ দিনে উত্তর ভারতের আরও কিছু এলাকা থেকে বর্ষা বিদায় নিতে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy