পার্থ চট্টোপাধ্যায়ই (বাঁ দিকে) ‘মাস্টারমাইন্ড’, আদালতে দাবি করেছেন অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের (ডান দিকে) আইনজীবী। —ফাইল চিত্র।
নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডের ‘মাস্টারমাইন্ড’ হলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। দুর্নীতির বিষয়ে অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের কোনও ভূমিকা নেই। সোমবার আদালতে দাঁড়িয়ে দাবি করলেন অর্পিতার আইনজীবী। দীর্ঘ দিন পর এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-এর বিশেষ আদালতে সশরীরে হাজির হয়েছিলেন অর্পিতা। তাঁর জামিনের আবেদনের শুনানি ছিল। সেখানেই তাঁর আইনজীবী দাবি করেছেন যে, অর্পিতা পরিস্থিতির শিকার।
সোমবার আদালতে আইনজীবীর মাধ্যমে অর্পিতা বলেছেন, ‘‘আমার বাড়ি থেকে টাকা গয়না উদ্ধার হয়েছে। কিন্তু আমি পরিস্থিতির শিকার। মাস্টারমাইন্ড হলেন পার্থ।’’ যদিও ইডির দাবি, অর্পিতা দায় অস্বীকার করতে পারেন না। যা হয়েছে, তার জন্য তিনি সমান ভাবে দায়ী। অর্পিতা যে সব সংস্থার সঙ্গে জড়িত, সেই সব সংস্থার কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে এই দাবি করেছে ইডি। তবে অর্পিতার আইনজীবী দাবি করেছেন, তাঁর মক্কেল এ সব সংস্থা নিয়ন্ত্রণ করতেন না। সবটাই নিয়ন্ত্রণ করতেন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ।
নিয়োগ দুর্নীতিতে অভিযুক্ত অর্পিতার হয়ে সোমবার আদালতে সওয়াল করেন বৃন্দা গ্রোভার। তিনি দিল্লি থেকে এসেছেন অর্পিতার হয়ে সওয়াল করতে। সোমবার এজলাসে অর্পিতার আইনজীবী দাবি করেন, তাঁর মক্কেলের বিরুদ্ধে যত অভিযোগ আনা হয়েছে, সবই মিথ্যে। এমনকি অর্পিতাকে গ্রেফতারের আগে তাঁর বয়ানও রেকর্ড করা হয়নি। তাঁর ব্যক্তি স্বাধীনতা হরণ করা হচ্ছে বলেও দাবি করেছেন আইনজীবী।
ইডি দাবি করেছে, তদন্তে অসহযোগিতা করছেন অর্পিতা। যদিও তাঁর আইনজীবী সেই কথা মানেননি। আদালতে প্রশ্ন উঠেছে, অনন্ত টেক্সট ফ্যাব প্রাইভেট লিমিটেডের সঙ্গে অর্পিতার কী সম্পর্ক ছিল? তাঁর আইনজীবী জানিয়েছেন, ওই সংস্থা পার্থ নিয়ন্ত্রণ করতেন। অর্পিতা নিয়ন্ত্রণ করতেন না। তিনি এই সংস্থা থেকে লাভবানও হননি। সংস্থার ডিরেক্টর হিসাবে যাঁদের দেখানো হয়েছে, তাঁরা সকলেই ভুয়ো। পার্থই তাঁদের সকলকে কাজ করাতেন। আইনজীবীর অভিযোগ, সংস্থার ডিরেক্টর হিসাবে যাঁদের নাম উঠেছে, তাঁদের এখনও স্পর্শ করেনি ইডি। কেন, সেই প্রশ্নও তুলেছেন তিনি।
তবে ইডি বার বার দাবি করেছে, নিয়োগ দুর্নীতিতে অর্পিতারও ভূমিকা রয়েছে। পুরো বিষয় থেকে তিনি লাভবানও হয়েছেন। পার্থের ৩১টি এলআইসি পলিসির নমিনি ছিলেন অর্পিতা। প্রত্যেকটিতে তাঁর সই রয়েছে। এই প্রসঙ্গে পার্থ এবং অর্পিতার সম্পর্ক নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন ইডির আইনজীবী। তিনি জানিয়েছেন, পার্থ যদি ‘রাজা’ হন, অর্পিতা কি ‘ডিফ্যাক্টো রানি’? নাকি ‘ভাইঝি’? আদতে সম্পর্কে কী? এই প্রসঙ্গে ইডির আইনজীবী বলেন, ‘‘এখন দু’টোই কাকু। কালীঘাটের কাকু এবং পার্থ কাকু।’’
ইডি আরও দাবি করেছে, অর্পিতার ফ্ল্যাট থেকে যে টাকা ও গয়না মিলেছে, তারও হিসাব দিতে পারেননি তিনি। ইডির মনে করছে, অর্পিতা বিলাসবহুল জীবন চেয়েছিলেন। তার জন্যই ওই টাকা প্রয়োজন ছিল তাঁর। অর্পিতার আইনজীবী যে গাড়ি করে এসেছেন, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে ইডি। গাড়িতে কেন্দ্রীয় সরকারের বোর্ড লাগানো রয়েছে। ইডির দাবি, এর থেকেই স্পষ্ট যে, অর্পিতা কতটা প্রভাবশালী।
নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে নেমে গত বছর জুলাই মাসে পার্থের নাকতলার বাড়িতে গিয়ে জেরা করে ইডি। পাশাপাশি, অর্পিতার টালিগঞ্জের ফ্ল্যাটেও তল্লাশি চালানো হয়। সেখান থেকে কোটি কোটি টাকা উদ্ধার করা হয়। এর পরেই গ্রেফতার হন অর্পিতা এবং পার্থ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy