অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের শনিবারের মহাবৈঠকে যোগ দেবেন তৃণমূলের ৪,৫০০ নেতা। বৈঠকের ‘বহর’ যে বাড়ানো হয়েছে, তা বৃহস্পতিবারই জানা গিয়েছিল। শুক্রবার তৃণমূল সূত্রে জানা গেল, যোগদানকারীর সংখ্যা়টা প্রায় ৪,৫০০। বৈঠক হবে ভার্চুয়াল মাধ্যমে। যাঁদের থাকার কথা, তাঁদের মোবাইলে নির্ধারিত সময়ের আগেই চলে যাবে বৈঠকের ‘লিঙ্ক’। তার মহড়াও সারা। যেন কোনও প্রযুক্তিগত সমস্যা না হয়, সে কারণে বৃহস্পতিবারেই মহড়া সেরে রেখেছে অভিষেকের ক্যামাক স্ট্রিটের দফতর।
রাজ্যসভা এবং লোকসভার সমস্ত সাংসদকে বৈঠকে ডাকা হয়েছে। আরজি কর আন্দোলনের পর্বে ‘বিদ্রোহী’ হয়ে ওঠা সুখেন্দুশেখর রায় জানিয়েছেন, তিনিও আমন্ত্রণ পেয়েছেন। লোকসভা নির্বাচনে ভাল লড়াই করে হারতে হয়েছিল, এমন কয়েক জন প্রার্থীকেও বৈঠকে থাকতে বলা হয়েছে। থাকবেন তৃণমূলের সমস্ত বিধায়ক, পুরনিগমগুলির মেয়র, ডেপুটি মেয়র এবং চেয়ারম্যান। কলকাতা পুরসভার ক্ষেত্রে সমস্ত কাউন্সিলরকে ডাকা হয়েছে। জেলা পরিষদের সভাধিপতি-সহ গোটা জেলা পরিষদকে থাকতে বলা হয়েছে। পুরসভাগুলির চেয়ারম্যান এবং ভাইস চেয়ারম্যান থাকবেন। এর সঙ্গেই থাকবে তৃণমূলের পুরো রাজ্য কমিটিও।
ছাত্র, যুব, শ্রমিক, কৃষক, সংখ্যালঘু, মহিলা— সমস্ত শাখা সংগঠনের জেলার নেতৃত্বকে থাকতে বলা হয়েছে শনিবারের বৈঠকে। তৃণমূল সূত্রে খবর, বৈঠক থেকে বাদ রাখা হয়েছে দলের অধ্যাপক, প্রাথমিক শিক্ষক, বিদ্যালয় শিক্ষক এবং পার্শ্বশিক্ষকদের সংগঠনকে বাদ রাখা হয়েছে। কেন অভিষেকের বৈঠকে শিক্ষা সেলকে ‘ব্রাত্য’ করা হল, তা নিয়ে কৌতূহল তৈরি হয়েছে দলের অন্দরে। তৃণমূল সূত্রের খবর, ভোটার তালিকা স্ক্রুটিনির বিষয়েই মূল সাংগঠনিক কাজের রূপরেখার কথা বলবেন অভিষেক। পাশাপাশিই বলবেন ২০২৬ সালের বিধানসভা ভোটের প্রস্তুতির কথাও। ভোটপ্রক্রিয়ায় শিক্ষকেরা যুক্ত থাকেন। তবে পৃথক মতও রয়েছে। সেই অভিমত বলছে, ভোটার তালিকা স্ক্রুটিনিটাই এখন মুখ্য। সেই কাজে শিক্ষকদের ভূমিকা নেই। তাই তাঁদের ডাকা হয়নি।
আরও পড়ুন:
উল্লেখ্য, প্রায় এক বছর পরে অভিষেক এত বড় আকারে নিজে বৈঠক ডেকেছেন। শেষ বার তিনি এমন বৈঠক করেছিলেন গত লোকসভা ভোটের আগে। যেখানে ভোটের কাজ, গণনাকেন্দ্রের কাজ কী ভাবে হবে, তা বুঝিয়ে দিয়েছিলেন নেতাদের। গত কয়েক মাস ধরে অভিষেকের ‘সরে থাকা’ নিয়ে বিস্তর আলোচনা চলেছে দলে। রাজ্যের সংগঠনের পরিবর্তে নিজেকে ডায়মন্ড হারবারেই আবদ্ধ রেখেছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। সর্বোচ্চ নেতৃত্বের ‘সমীকরণ’ নিয়েও নানা কথা আলোচিত হয়েছে শাসকদলের অন্দরে। সেই প্রেক্ষাপটে শনিবার অভিষেকের বৈঠক তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ সমীকরণের নিরিখেও ‘তাৎপর্যপূর্ণ’। অনেকের বক্তব্য, শনিবারই অভিষেক দলকে বার্তা দিয়ে দিতে চাইবেন, তিনি ‘সক্রিয়’।