অ্যাপোলো হাসপাতালকে সরকারি স্বাস্থ্যবিমা প্রকল্পের তালিকা থেকে বাদ দিল নবান্ন। শুক্রবার এই মর্মে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে অর্থ দফতর।
অ্যাপোলেকে বাদ দেওয়ার আগে ওই হাসপাতালের বিরুদ্ধে ওঠা একাধিক অভিযোগ খতিয়ে দেখেছে রাজ্য সরকার। বিজ্ঞপ্তিতে তার উল্লেখও রয়েছে। বলা হয়েছে, বিগত বেশ কিছু দিন ধরে সরকারি কর্মী ও একাধিক সরকারি দফতরের তরফে অ্যাপোলোর বিরুদ্ধে অর্থ দফতরে অভিযোগ জমা পড়ছে। সেই সব অভিযোগের ভিত্তিতে স্বাস্থ্যবিমা প্রকল্পের আওতায় ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন এমন কিছু রোগীর কাগজপত্র পরীক্ষা করে নবান্ন দেখেছে, সরকারের সঙ্গে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের যে চুক্তি হয়েছিল, তার বাইরে গিয়ে অনেক ক্ষেত্রে অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হয়েছে। সরকার মনে করছে, এটা চুক্তিভঙ্গেরই সামিল।
নবান্নের তদন্তে জানা গিয়েছে, অনেক ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিমা প্রকল্পের আওতাভুক্ত রোগীর কাছে বেশি টাকা দাবি করেছেন ওই হাসপাতালের আউটডোরের ডাক্তারদের একাংশ। সরকারের বেঁধে দেওয়া মূল্য তো তাঁরা নেননি, উল্টে রোগীর পরিবারের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে এ-ও বলা হয়েছে, রোগীদের অকারণে অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করানো হয়েছে, যা আসলে চুক্তিভঙ্গ। এমনকী কোনও কারণ না দেখিয়েই অনেক ক্ষেত্রে দামী অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ ‘প্রেসক্রাইব’ করা হয়েছে। তদন্তে নবান্ন জেনেছে, অনেক ক্ষেত্রে রোগীর পরিবার বার বার আর্জি জানিয়েও চিকিৎসার নথি পাননি। নথি জোগাড় করতে সরকারি কর্মীরা হয়রানির মুখোমুখি তো হয়েছেন, অর্থ দফতরের অধীনে থাকা মেডিক্যাল সেল-ও বহু ক্ষেত্রে চেয়েও কাগজ পাননি। অনেক ক্ষেত্রে সরকারি কর্মী ও পেনশনভোগীরা প্রাপ্য ‘ক্যাশলেস’ চিকিৎসাও পাননি। কিন্তু কেন তাঁরা পরিষেবা দিতে পারেননি, হাসপাতালের তরফে তার ব্যাখ্যাও মেলেনি— বলছেন এক শীর্ষ কর্তা।
বৃহস্পতিবার একটি সাক্ষাৎকারে মুখ্যমন্ত্রীও অ্যাপোলোর খরচ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। ক’দিন আগে ওই হাসপাতালের একজিকিউটিভ ভাইস চেয়ারম্যান পৃথা রেড্ডি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে আশ্বাস দেন, সব সমস্যা তাঁরা দূর করার চেষ্টা করবেন। কিন্তু তার পরেও যে নবান্নের সংশয় দূর হয়নি, সরকারি তালিকা থেকে অ্যাপোলোকে বাদ দেওয়াই তার ইঙ্গিত। সরকারের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে অবশ্য কোনও মন্তব্য করতে চাননি অ্যাপোলো কর্তৃপক্ষ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy