Advertisement
২৯ ডিসেম্বর ২০২৪
Anubrata Mondal

মুড়ি খেয়ে রাতের অনেকটা বিছানায় বসে কাটান কেষ্ট

প্রায় ছ’মাস আসানসোলের জেলে ছিলেন অনুব্রত। কারাকর্মীদের অনেকের দাবি, এমনিতে কম কথা বললেও, মাঝে-মধ্যে গম্ভীর গলাতেই মজা করতেন তিনি।

মুড়ি খেয়ে দিন কাটাচ্ছে কেষ্ট।

মুড়ি খেয়ে দিন কাটাচ্ছে কেষ্ট। — ফাইল চিত্র।

সুশান্ত বণিক
শেষ আপডেট: ০৯ মার্চ ২০২৩ ০৭:৪৭
Share: Save:

সোমবার দুপুর থেকেই বারবার জানতে চাইছিলেন, তাঁকে দিল্লি পাঠানোর কোনও বন্দোবস্ত হচ্ছে কি না। অন্য দিন মধ্যাহ্নভোজের পরে সাধারণত বিছানায় বিশ্রাম নিতেন তিনি। কিন্তু সে দিন ঠায় বসেছিলেন একটি বেঞ্চে।মঙ্গলবার ভোরেই তাঁকে দিল্লি নিয়ে যাওয়া হবে, এ খবর পাওয়ার পরে দৃশ্যত ভেঙে পড়েছিলেন গরু পাচার মামলায় ধৃত বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল, দাবি আসানসোল সংশোধনাগারের কর্মীদের একাংশের।

প্রায় ছ’মাস আসানসোলের জেলে ছিলেন অনুব্রত। কারাকর্মীদের অনেকের দাবি, এমনিতে কম কথা বললেও, মাঝে-মধ্যে গম্ভীর গলাতেই মজা করতেন তিনি। তবে ইডি তাঁকে দিল্লি নিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করবে, এই সম্ভাবনা তৈরির পর থেকে তিনি যেন বেশি গম্ভীর হয়ে গিয়েছিলেন। আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালত সোমবার তাঁকে দিল্লি নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে যে নির্দেশ দেয়, তা শোনার পরে একেবারে চুপচাপ ছিলেন। দুপুরে জেলের মেডিক্যাল ওয়ার্ডের বেঞ্চে বসে সময় কাটান। বিকেল ৩টে নাগাদ কর্মীরা দু’টি থলিতে ওষুধ তাঁর কাছে পৌঁছে দিয়ে জানান, বাড়ি থেকে সেগুলি এসেছে। জেলের কর্মীদের একাংশের দাবি, মেয়ের সঙ্গে দেখা করার কোনও সুযোগ রয়েছে কি না, তা জানতে চান কেষ্ট।

জেল সূত্রে খবর, সোমবার সন্ধ্যায় বন্দিদের ওয়ার্ড পরিদর্শনের পরে জেল কর্তৃপক্ষ অনুব্রতকে জানিয়ে দেন, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৬টা থেকে ৭টার মধ্যে তাঁকে কলকাতা হয়ে দিল্লি রওনা করানো হবে। কর্মীদের অনেকের দাবি, রাতে দীর্ঘক্ষণ বিছানায় বসে কাটান কেষ্ট। রাতে রুটি খাননি। কর্মীদের কাছে মুড়ি চেয়ে নেন। দায়িত্বপ্রাপ্ত এক কর্মীকে ভোরে ঘুম থেকে তুলে দেওয়ার অনুরোধও করেন।

জেল সূত্রে জানা যায়, ২৪ অগস্ট অনুব্রত প্রথম এই জেলে আসার সময়ে যে কর্মীরা কর্তব্যরত ছিলেন, মঙ্গলবার সকালে কেষ্টকে দিল্লি রওনা করানোর সময়ে তাঁদের মধ্যে দু’জন জেলের গেটে উপস্থিত ছিলেন। তাঁদের দাবি, প্রথম দিন জেলে ঢোকার সময়ে নিয়মমতো তাঁর নাম জানতে চাওয়ায় তাচ্ছিল্যের দৃষ্টিতে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকার পরে নিজের নাম জানিয়েছিলেন অনুব্রত। মঙ্গলবার সকালে তাঁদের কাঁধে হাত রেখে বলেন, ‘যাচ্ছি ভাই।’

এক কর্মী জানান, রাতে নেবুলাইজ়ার প্রয়োজন হয় অনুব্রতের। সেহগাল হোসেন এই জেলে থাকার সময়ে, সে বন্দোবস্ত তিনিই করতেন। তবে নভেম্বরে তাঁকেও দিল্লি নিয়ে যাওয়ার পরে জেলে মেডিক্যাল ওয়ার্ডে কর্তব্যরত রক্ষীই সে কাজটি করে দিয়েছেন কেষ্টকে। জেল সূত্রের দাবি, সোমবার রাতে কেষ্ট ওই রক্ষীর কাছে এর পরে ওষুধ ও নেবুলাইজ়ারের বিষয়টি কী ভাবে সামাল দেওয়া যাবে, সে নিয়ে চিন্তার কথাও জানান।

কারাকর্মীদের একাংশের দাবি, মঙ্গলবার ভোরে অনুব্রতকে ঘুম থেকে তোলার জন্য গিয়ে দেখা যায়, ব্যাগপত্র গুছিয়ে তিনি প্রায় প্রস্তুত। সকাল সাড়ে ৬টা নাগাদ পুলিশ চারটি ব্যাগ-সহ তাঁকে নিয়ে রওনা দেয়। তাঁকে বিদায় দেওয়ার জন্য জড়ো হয়েছিলেন অন্য বন্দিরাও।

অন্য বিষয়গুলি:

Anubrata Mondal Bolpur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy