আনিসের বাড়িতে হাজির ‘সিট’। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ
ছেলের মৃত্যুর তদন্ত করতে আসা ‘সিট’কেই এবার প্রশ্ন করলেন মৃত ছাত্র নেতা আনিসের বাবা। তিনি বললেন, ‘‘দিদিই আমাদের মুখ্যমন্ত্রী, ওঁকে অমান্য করব না। কিন্তু আপনাদের কেন পাঠাচ্ছেন?’’ এই নিয়ে দ্বিতীয়বার রাজ্যের পুলিশ এবং প্রশাসনের তদন্ত প্রক্রিয়ার উপর অনাস্থা জানালেন তিনি। প্রকাশ্যে।
সোমবারই আনিস মৃত্যুর তদন্তে বিশেষ তদন্তকারী দল বা সিট গঠন করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপর মঙ্গলবার বিকেলে আমতায় আনিসের বাড়িতে পৌঁছন আনিস মৃত্যু রহস্যের বিশেষ তদন্তকারী দল ‘সিট’-এর সদস্য মিরাজ খালিদ এবং ধ্রুবজ্যোতি দে। ঘটনাস্থল এবং আশপাশের এলাকা পরীক্ষা করার পর আনিসের পরিবারের সঙ্গে কথা বলতে এলে আনিসের বাবা তাঁকে প্রশ্ন করেন, ‘‘আপনারা কেন এসেছেন? কতবার একই কথা বলব?’’ কার্যত ‘সিট’কে আলাদা করে বয়ান দিতে অস্বীকারই করেন তিনি।
উল্লেখ্য, সোমবারও আনিস মৃত্যুর তদন্তে রাজ্য সরকার সিট গঠন করার পর নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে যাননি আনিসের বাবা। শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়েছিলেন। পরে আনিসের দাদা জানিয়ে দেন, তাঁরা সিট নয় সিবিআই তদন্ত চান। মঙ্গলবার সিটের সদস্যরা তাঁর কাছে আনিসের মৃত্যুর ঘটনার বিশদ জানতে চেয়েছিলেন, তার প্রতিক্রিয়ায় ওই জবাব দেন আনিসের দাদা। বলেন, ‘‘আপনাদের কেন পাঠানো হচ্ছে? আমরা সিবিআই তদন্ত চাই জেনেও দিদি কেন সিবিআই করাচ্ছেন না। পুলিশ বা সিট-এ আমাদের বিশ্বাস নেই। পুলিশের উপর বিশ্বাস চলে গিয়েছে।’’ এর জবাবে সিট-এর সদস্যরা বলতে গিয়েছিলেন, ইতিমধ্যেই তিন জন পুলিশকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। জবাবে আনিসের বাবার প্রশ্ন, ‘‘সাসপেন্ড করে কী হবে? সাসপেন্ড চাই না। আমরা চাই আসামী ধরা পড়ুক।’’
শুক্রবার গভীর রাতে আমতায় নিজের বাড়ির সামনে থেকে পাওয়া যায় ছাত্র নেতা আনিসের রক্তাক্ত মৃতদেহ। পরিবার অভিযোগ করেছিল, পুলিশের উর্দি পরা এক অফিসার এবং তিনজন পুলিশ কর্মী রাতে তাঁদের বাড়িতে চড়াও হয়। বন্দুক দেখিয়ে আনিসের বাবাকে আটকে রেখে উপরে আনিসের কাছে যায় বাকিরা। এরপরই আনিসকে দেহ তিনতলার ছাদ থেকে পড়ে রক্তাক্ত হতে দেখেন তাঁরা। আনিসের পরিবারের দাবি, তাঁকে হত্যা করেছেন পুলিশ কর্মীরাই। ঘটনার তদন্তে নেমে সোমবার রাতেই আমতা থানায় গিয়েছিলেন সিটের সদস্যরা। পরে কর্তব্য গাফিলতি এবং আনিসের পরিবারের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগে এক জন এএসআই, একজন কনস্টেবলকে সাসপেন্ড করা হয় প্রশাসনের তরফে। বসিয়ে দেওয়া হয় একজন হোমগার্ডকেও। তারপরই মঙ্গলবার আনিসের বাড়িতে যান সিট-এর সদস্যরা।
তবে ‘সিট’কে মুখের উপর ‘আস্থা নেই’ জানিয়ে দিলেও আনিসের পরিবার জানিয়েছে, দিদিকে তাঁরা মান্য করেন। যদিও তিনি কেন শত অনুরোধ সত্ত্বেও সিবিআই তদন্তের দাবি মেনে নিচ্ছেন না, সেটা কিছুতেই বুঝে উঠতে পারছে না আনিসের পরিবার। প্রসঙ্গত, আমতার সারদা এলাকার দক্ষিণ খাঁ পাড়ায় মঙ্গলবার আনিসের মৃত্যুর সিবিআই তদন্ত চেয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন গ্রামবাসীরাও। আনিসের দাদা এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘আমি চাইছি, আমাদের বাবা চাইছেন, গ্রামবাসীরা চাইছেন তারপরও কেন সিবিআই হচ্ছে না বুঝতে পারছি না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy