মৃত আনিস খান। ফাইল চিত্র ।
আনিস খান মৃত্যুরহস্যের জট কাটেনি। তবে তদন্তের মধ্যেই মঙ্গলবার সকালে সাসপেন্ড করা হল হাওড়ার আমতা থানার দুই পুলিশকর্মীকে। পাশাপাশি বসিয়ে দেওয়া হয়েছে এক জন হোমগার্ডকে। এই তিনজনেরই সে রাতে ডিউটি ছিল। এবং তিনজনেই আমতা থানা এলাকায় টহলের দায়িত্বে ছিলেন। পুলিশের দাবি, ‘তদন্তে স্বচ্ছতার স্বার্থেই’ এই পদক্ষেপ। একই সঙ্গে থানার ওসি এবং আরও এক অফিসারকে তলব করা হয়েছে ভবানী ভবনে। ঘটনার রাতে কর্তব্যে গাফিলতির যে অভিযোগ উঠেছে থানার বিরুদ্ধে, সে ব্যাপারেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে এই দু’জনকে।
সাসপেন্ড হওয়া পুলিশ কর্মীদের মধ্যে এক জন এএসআই (নির্মল দাস), এক জন কনস্টেবল (জিতেন্দ্র হেমব্রম) রয়েছেন। কাজ থেকে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে হোমগার্ড কাশীনাথ বেরাকে (হোমগার্ডদের সাসপেন্ড করার বিধি নেই)। তিন জনই শুক্রবার রাতে থানার খাতায় সই করে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সঙ্গে নিয়ে রাউন্ডে বেরিয়েছিলেন। ওই রাতেই আমতার সারদা দক্ষিণ খাঁ-পাড়ায় বাড়ির তিনতলার ‘ছাদ থেকে পড়ে’ মৃত্যু হয় ছাত্রনেতা আনিসের। তাঁর পরিবারের তরফে অভিযোগ জানানো হয়, পুলিশের পোশাকে চার জন সে রাতে বাড়িতে ঢোকেন। আনিসকে তাঁরাই ছাদ থেকে ঠেলে ফেলে দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। সেই ঘটনার সঙ্গে মঙ্গলবারের সাসপেনশনের সরাসরি কোনও যোগ রয়েছে কি না তা অবশ্য এখনও স্পষ্ট নয়। তবে সাসপেন্ড করা তিন পুলিশকর্মী ছাড়াও, চতুর্থ এক ভিলেজ-পুলিশেরও খোঁজখবর চালাচ্ছেন তদন্তকারীরা।
আনিসের মৃত্যুর তদন্ত প্রথমে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হাওড়া গ্রামীণ) ইন্দ্রজিৎ সরকারের নেতৃত্বে শুরু হয়েছিল। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী সোমবার এই তদন্ত করার জন্য সিট (বিশেষ তদন্তকারী দল) গঠনের নির্দেশ দেন। তিন সদস্যের সিট-এ রয়েছেন রাজ্যের এডিজি (সিআইডি) জ্ঞানবন্ত সিংহ, ডিআইজি (সিআইডি) মিরাজ খালিদ এবং ব্যারাকপুরের যুগ্ম কমিশনার ধ্রুবজ্যোতি দে। ১৫ দিনের মধ্যে সিটকে রিপোর্ট পেশের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
আনিসের মৃত্যু নিয়ে বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তর এখনও মেলেনি পুলিশের তরফ থেকে। পুলিশের কাছেও এই উত্তরগুলি আছে কি না, তাও স্পষ্ট নয়।
এক) শুক্রবার রাতে পুলিশের পোশাকে যে চারজন আনিশদের বাড়িতে গিয়েছিলেন বলে অভিযোগ, তাঁরা কি পুলিশই ছিলেন?
দুই) যদি না হন, তা হলে সেই আগন্তুকরা কারা, তার হদিশ কি পুলিশ পেয়েছে? আর যদি পুলিশকর্মীরাই সে রাতে আনিশের বাড়িতে গিয়ে থাকেন তবে তাঁরা কারা? কী কারণেই বা গিয়েছিলেন?
তিন) আনিশকে কি ছাদ থেকে ঠেলে ফেলে দেওয়া হয়েছিল?
এই প্রশ্নগুলির কোনও সদুত্তর এখনও তদন্তকারীদের থেকে মেলেনি।
এর সঙ্গে মঙ্গলবার জুড়ল আরও এক প্রশ্ন: সেইদিন রাতটহলের দায়িত্বে থাকা যে তিন পুলিশকর্মীকে সাসপেন্ড করা হল এবং যে ভিলেজ পুলিশের সম্পর্কে খোঁজখবর চলছে, তাঁরা সেই রাতে কী করছিলেন...
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy