বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
ভরা এজলাসে বিভিন্ন মামলার সওয়াল করছেন দুঁদে আইনজীবীরা। সেই সওয়াল-জবাব শুনছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এজলাসে দাঁড়িয়ে মামলার সঙ্গে যুক্ত লোকজন এবং সাংবাদিকেরাও।
সোমবার এমন একটা সময়ে এজলাসে উপস্থিত হয়ে এক বৃদ্ধা কাঁদতে কাঁদতে বিচারপতিকে জানান, তাঁর দুই ছেলে। বড় ছেলে বড় চাকরি করলেও তাঁর দেখভাল করেন না। উপরন্তু বাড়িও বিক্রি করে দিয়েছেন। রিকশাচালক ছোট ছেলে অতি কষ্টে হলেও মাকে দেখভাল করেন।
উত্তর ২৪ পরগনার কাঁচরাপাড়ার ওই বৃদ্ধার মুখে দুর্দশার কথা শুনে বৃদ্ধার বড় ছেলের ভূমিকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিচারপতি। বড় ছেলে কোথায় চাকরি করেন, তা ওই বৃদ্ধার কাছে জানতে চান বিচারপতি। বৃদ্ধা জানিয়েছেন, ছেলে শিয়ালদহে রেলে কর্মরত।
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় প্রথমে বলেছিলেন, বৃদ্ধাই যেন ছেলেকে আদালতে ডেকে নিয়ে আসেন। তবে শারীরিক অসুস্থতা বিচার করে তিনি রেজিস্ট্রার জেনারেলকে নির্দেশ দিয়েছেন, বৃদ্ধার বড় ছেলেকে খবর পাঠাতে। আজ, মঙ্গলবার বেলা ১১টায় তাঁকে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে হাজিরা দিতে হবে। বৃদ্ধার ছেলে নিজে না-এলে পুলিশ পাঠিয়ে তাঁকে কোর্টে আনা হবে বলেও মন্তব্য করেছেন বিচারপতি। ওই বৃদ্ধাকেও আদালতে উপস্থিত থাকতে বলেছেন তিনি। বৃদ্ধাকে বিচারপতির আশ্বাস, ‘‘আপনি যান। আমি দেখছি কী করতে পারি।’’
প্রসঙ্গত, সন্তানদের হাতে বৃদ্ধ বাবা-মায়ের নিপীড়নের মামলা হাই কোর্টে আগেও হয়েছে। প্রকাশ্য এজলাসে বিচারপতির নির্দেশে সন্তান বাবা-মায়ের কাছে কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা চেয়েছেন, এমন দৃশ্যও হাই কোর্টে অতীতে দেখা গিয়েছে। আইনজীবীদের অনেকে বলছেন, সেগুলি বেশির ভাগ সময়েই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে হয়েছে। কিন্তু এ দিনের ঘটনায় কোনও মামলার পরিপ্রেক্ষিতে হয়নি। বরং ওই বৃদ্ধা সটান কোর্টে এসে নিজের দুর্দশার অভিযোগ করেছেন।
আইনজীবীদের পর্যবেক্ষণ, এই ধরনের ঘটনায় বহু সময়ে মামলা-মোকদ্দমার বদলে সমস্যার সমাধানের উপায় থাকে। তাতে কাজ না হলে বিষয়টি মামলার দিকে গড়ায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy