তৃণমূলকে আক্রমণ শাহের।—ছবি পিটিআই।
প্রতি বারের মতো এ বারের বঙ্গ সফরেও তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে কেন্দ্রের টাকা নয়ছয়ের অভিযোগ তুললেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। রবিবার শহিদ মিনার ময়দানে জনসভায় তিনি অভিযোগ করেন, কেন্দ্রের কংগ্রেস জমানার তুলনায় বর্তমানে নরেন্দ্র মোদীর আমলে রাজ্য অনেক বেশি টাকা পাচ্ছে। কিন্তু তা চলে যাচ্ছে তৃণমূল কর্মীদের কাছে। রাজ্যের মন্ত্রী তথা তৃণমূল নেতা ফিরহাদ হাকিম অবশ্য শাহের দেওয়া হিসাব এবং অভিযোগকে ‘অসত্য’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। কেন্দ্র যে রিজার্ভ ব্যাঙ্কে গচ্ছিত অর্থ ভেঙে ফেলছে, সেই প্রসঙ্গ তুলে শাহকে খোঁচা দিয়েছেন তিনি।
শাহর কথায়, ‘‘কংগ্রেসের শাসনে বাংলা কেন্দ্রের কাছ থেকে ১ লাখ ৩২ হাজার কোটি টাকা পেত। নরেন্দ্র মোদী পাঁচ বছরে বাংলাকে ৩ লাখ ৫৯ হাজার কোটি টাকা দিয়েছেন। এ ছাড়া, গ্রামজ্যোতি যোজনার চার হাজার কোটি, আবাস যোজনার ১৬ হাজার কোটি, শহরে আবাস যোজনার ১৭০০ কোটি, জাতীয় সড়ক প্রকল্পে ১০ হাজার কোটি, কলকাতা মেট্রো প্রকল্পে ১২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা, আরও ৫৯ হাজার কোটি টাকা বাংলাকে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এই সব টাকা মমতাদিদির দলের কর্মীদের দুর্নীতিতে খরচ হয়ে গিয়েছে।’’ এর প্রতিক্রিয়ায় রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ বলেন, ‘‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দেওয়া ওই হিসাবে কোনও সত্যতা নেই। কেন্দ্র কেন বাংলার প্রাপ্য ৫০ হাজার কোটি টাকা দিচ্ছে না, সেটা বরং উনি বলুন। মোদী জমানায় ২৮ জন কেন দেশের অর্থ নিয়ে বিদেশে পালিয়েছে, সে জবাবও ওঁদেরই দিতে হবে। আর তৃণমূল নিষ্ঠাবান দল। কেন্দ্রের প্রকল্পের টাকা নেওয়ার ইচ্ছা বা প্রয়োজন— কোনওটাই তাদের নেই।’’
শাহের আরও অভিযোগ, ‘‘মমতাদিদির শাসনে বাংলা পিছিয়ে গিয়েছে। বিকাশের তালিকায় দেশের মধ্যে বাংলার স্থান ২০ নম্বরে। এ রাজ্যে প্রতি পাঁচ জনে এক জন দারিদ্র্যসীমার নীচে বাস করেন। এখানকার ৭০ শতাংশ কৃষক ঋণে জর্জরিত। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী পিএম কিষাণ প্রকল্পে কৃষকদের ছ’হাজার টাকা দিতে চাইলেও সেই টাকা তাঁদের হাতে পৌঁছতে দেওয়া হচ্ছে না।’’ বাংলার ‘দুর্দশা’ বোঝাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ব্যাখ্যা দেন, ‘‘বাংলার মাথায় ১ লক্ষ ৯২ হাজার কোটি টাকার ঋণ রেখে কমিউনিস্টরা বিদায় নিয়েছিল। মমতার সরকার সেই ঋণকে নিয়ে গিয়েছে ৩ লক্ষ ৭৫ হাজার কোটি টাকায়। এখানে বিদেশি বিনিয়োগ ২ শতাংশের নিচে, বিদ্যুতের ব্যবহার জাতীয় গড়ের চেয়ে ৩০ শতাংশ নিচে। রাজ্যের প্রায় ৮০ শতাংশ শিল্প লাটে উঠেছে।’’
এই প্রেক্ষিতেই ২০২১ সালে রাজ্যে শাসক পরিবর্তনের ডাক দেন শাহ। তিনি বলেন, ‘‘মমতাদিদির নেতৃত্বে বাংলা সোনার বাংলা হবে না। আপনারা দু’দশক কমিউনিস্টদের সুযোগ দিয়েছেন। ১০ বছর মমতাদিদিকে সুযোগ দিয়েছেন। এই দু’পক্ষ কি উন্নয়ন করেছে? করেনি। আপনারা পাঁচ বছর বিজেপি তথা মোদিজিকে সুযোগ দিন। পাঁচ বছরেই আমরা সোনার বাংলা গড়ে দেব।’’
তবে রাজ্য সরকার শাহের দেওয়া বাংলার ‘দুর্দশা’র তত্ত্ব মোটেই মানছে না। মন্ত্রী ফিরহাদ বলেন, ‘‘রাজনৈতিক সভা গরম করার জন্য অমিত শাহ এ সব বলেছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যে কৃষকদের জন্য এবং গরিব মানুষদের স্বার্থে প্রকল্প চালু করেছেন। কিন্তু কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জবাব দিন, মোদী জমানায় দেশে কেন কৃষকদের মৃত্যুমিছিল চলছে?’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy