ফাইল চিত্র।
একই মঞ্চ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘চ্যালেঞ্জ’-এর জবাব দিলেন অমিত শাহ। কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে। কলকাতায় একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম গোষ্ঠীর আলোচনাচক্রে।
অমিতের পশ্চিমবঙ্গ সফরের দিন, বৃহস্পতিবার দুপুরে ওই আলোচনাচক্রে নন্দীগ্রাম থেকে অমিতকে তাঁর বিরুদ্ধে লড়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সন্ধ্যায় সেই আলোচনাচক্রে যোগ দেন অমিত। মমতার ‘চ্যালেঞ্জ’-এর বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘‘একজন বাঙালিই পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী হবেন। গুজরাতিরা বাংলার ভোটে লড়বেন না। লড়বেন বাঙালিরাই।’’
সেই সঙ্গে তাঁর মন্তব্য, ‘‘আমি নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি। আমার ভোটে লড়ার প্রয়োজন নেই।’’ প্রসঙ্গত, ১৯৯৭ থেকে ২০১২ পর্যন্ত ৫ বার গুজরাত বিধানসভার ভোটে জিতেছিলেন অমিত। ২০১৯-এর লোকসভা ভোটে গাঁধীনগর কেন্দ্র থেকে জিতে তিনি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হন।
ওই আলোচনাসভায় অমিতকে প্রশ্ন করা হয়, নন্দীগ্রাম বিধানসভার ভোটে কী কৌশল নেবে বিজেপি, মমতাকে হারানোই কি বিজেপি-র একমাত্র উদ্দেশ্য হবে? জবাবে অমিত বলেন, ‘‘কোনও ব্যক্তি নয়। আমাদের লড়াই তৃণমূলের বিরুদ্ধে। আমরা তৃণমূলের সব প্রার্থীকেই হারাতে চাই।’’
বৃহস্পতিবার সকালে কোচবিহারের সভায় ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল কাণ্ডের উল্লেখ করে মমতা বিরুদ্ধে নেতাজির জন্মদিবসের অনুষ্ঠানে রাজনীতি করার অভিযোগ তুলেছিলেন অমিত। ২৩ জানুয়ারির ওই অনু্ষ্ঠানে দর্শকদের একাংশের (যাঁরা বিজেপি কর্মী বলে অভিযোগ) ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগানে উষ্মা প্রকাশ করেছিলেন মমতা।
কলকাতার আলোচনাসভায় অবশ্য এ সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন জয় শ্রীরাম স্লোগানে বিরক্ত হন, তা আমি জানি না।’’ তবে সেই সঙ্গেই তাঁর প্রশ্ন, ‘‘শুধুমাত্র উন্নয়ন বা অন্য বিষয় নিয়েই তো ভোটে লড়াই হয় না। কেন আমরা সাংস্কৃতিক বা ধর্মীয় বিষয়গুলি আলোচনার বাইরে রাখব?’’ তাঁর কথায়, ‘‘জয় শ্রীরাম সং সংস্কৃতির অন্তর্গত বিষয়। একে ভোটের থেকে পৃথক রাখা যায় না।’’ তবে নির্বাচনী প্রচারে ধর্ম বা সংস্কৃতি সংক্রান্ত সমস্ত বিষয়কে বিজেপি হাতিয়ার করবে না বলেও জানিয়েছেন অমিত।
তৃণমূলনেত্রী পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রাম থেকে বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারেন ঘোষণার পর থেকেই রাজ্য রাজনীতিতে চর্চা শুরু হয়ে যায়।নন্দীগ্রামের তৃণমূল বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী অমিত শাহর হাত ধরে বিজেপি-তে যোগ দেওয়ার পরেই এই ঘোষণা করেন মমতা। জানান, তিনি একই সঙ্গে নন্দীগ্রাম ও ভবানীপুর থেকে প্রার্থী হতে চান। বৃহস্পতিবার রাজ্য সফরে এসে মমতার সেই ইচ্ছাকে কটাক্ষ করেন অমিত। কোচবিহারের জনসভা থেকে বলেন, ‘‘২০১৮ সালে আমি বলেছিলাম, উনিশের ভোটে আমরা ২০টা আসন পাব। দিদি বলেছিলেন, ‘আমরা আন্ডা পাব।’ কিন্তু আমরা আন্ডা পাইনি। বাংলার মানুষ আমাদের ১৮টি আসন দিয়েছেন। আর দিদি ভয় পেয়ে গিয়েছেন। তাই এখন সিট খুঁজছেন। একটা আসনে দাঁড়ানোর সাহস না করে দু’টো আসনে দাঁড়াতে চাইছেন।’’
কোচবিহারে এমন আক্রমণ করার পরে উত্তর ২৪ পরগনার ঠাকুরনগর হয়ে অমিত যখন কলকাতায় পা রেখেছেন, তখনই অমিতকে চ্যালেঞ্জ ছোড়েন মমতা। বললেন, ‘‘নন্দীগ্রামে আমার বিরুদ্ধে ভোটে লড়ুন উনি।’’ মমতা নন্দীগ্রামে প্রার্থী হতে চান বলার পর বিজেপি-র রাজ্য নেতৃত্ব আক্রমণ শুরু করে। ঘোষণার দিনই শুভেন্দু কলকাতায় একটি জনসভায় জানান, নন্দীগ্রামে দল যাঁকেই প্রার্থী করুক, মুখ্যমন্ত্রীকে ‘হাফ লাখ’ ভোটে হারাতে না পারলে তিনি রাজনীতি ছেড়ে দেবেন। এর পর প্রতিদিনই কোনও না কোনও সভায় এই আক্রমণ করে চলেছেন শুভেন্দু। পুরুলিয়ায় শুভেন্দু এমনও বলেন, ‘‘কোনও বিখ্যাত প্রার্থীর দরকার নেই, নন্দীগ্রামে মমতাকে হারাতে ‘ধর্ষিতা’ রমণী রাধারানি আড়িই যথেষ্ট।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy