Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Coronavirus in West Bengal

কোভিড আর যক্ষ্মার যুগলবন্দিতে উদ্বেগ 

গত বছরের তুলনায় গত জানুয়ারি থেকে জুলাই যক্ষ্মা রোগের বিজ্ঞপ্তির কাজ ব্যাহত হয়েছে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সৌরভ দত্ত 
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৩:২৩
Share: Save:

করোনা দেখতে গিয়ে বাংলায় ফাঁকে পড়েছে যক্ষ্মার উপরে নজরদারি। কেন্দ্রের চিঠি বা স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বেসরকারি সংস্থার সমীক্ষা নয়। স্বাস্থ্য দফতরের অভ্যন্তরীণ নির্দেশে সে কথা স্বীকার করে নিল স্বাস্থ্যভবন। নির্দেশিকায় সরাসরি উল্লেখ করা না হলেও যক্ষ্মার কারণে কোভিডে অসুস্থতা যে তরান্বিত হয়েছে তা-ও স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে।

রাজ্যে সংক্রমণের গোড়া থেকে কোভিডের উপরে অত্যধিক গুরুত্ব দেওয়ায়, নন-করোনা রোগীর চিকিৎসা ব্যাহত হচ্ছে বলে মনে করছিলেন চিকিৎসকদের একাংশ। যক্ষ্মা নিয়ে রাজ্য জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের পর্যবেক্ষণে (এনএইচএম) সেই আশঙ্কা সত্যি হল বলে মনে করা হচ্ছে। একটি নির্দেশিকার প্রথম বাক্যই হল, গত বছরের তুলনায় গত জানুয়ারি থেকে জুলাই যক্ষ্মা রোগের বিজ্ঞপ্তির কাজ ব্যাহত হয়েছে। ছ’মাস অতি মহামারীর নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি অগ্রাধিকারে থাকায় যে তা হয়েছে সেই ইঙ্গিত দিয়ে নির্দেশিকায় যক্ষ্মা রোগ চিহ্নিতকরণ কর্মসূচিতে গুরুত্ব আরোপ করেছেন মিশন অধিকর্তা।

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, কোভিড-যক্ষ্মার যুগলবন্দি স্বাস্থ্য ভবনের উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেই প্রেক্ষিতে নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, দেশে করোনা আক্রান্তদের মধ্যে যক্ষ্মা ধরা পড়ার গড় পরিসংখ্যান হল ০.৩৭-৪.৪৭ শতাংশ। যক্ষ্মার উপস্থিতি কোভিডে আক্রান্তের অসুস্থতাকেও দ্বিগুণ করে তুলছে। যার প্রেক্ষিতে সারি (সিভিয়র অ্যাকিউট রেসপিরেটরি ইলনেস) এবং আইএলআই (ইনফ্লুয়েঞ্জা লাইক ইলনেস) রোগীর ক্ষেত্রে যক্ষ্মার পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। যক্ষ্মা রোগীর কোভিড পরীক্ষা যেমন হবে তেমন করোনা পজ়িটিভ রোগীদের যক্ষ্মার পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করার কথা বলেছে স্বাস্থ্য দফতর। এ জন্য প্রতিটি কোভিড হাসপাতালে যক্ষ্মা রোগ পরীক্ষার পরিকাঠামো যাতে থাকে, তা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।

কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদার, একেবারে গোড়ায় কোভিড এবং যক্ষ্মা, দু’ধরনের সংক্রমণে আক্রান্ত রোগীর সন্ধান মিলছিল। পরে কোভিড হাসপাতালে নতুন করোনা আক্রান্তের সন্ধানও তাঁরা পান। তাঁর কথায়, ‘‘এই নির্দেশ কতখানি গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসকদের উপলব্ধি করতে হবে। কোভিড-যক্ষ্মার যুগলবন্দি থেকে রোগীকে রক্ষা করার জন্য এই নির্দেশ মেনে চলা প্রয়োজন।’’

বক্ষরোগের চিকিৎসক তথা রাজ্যের করোনা বিশেষজ্ঞ কমিটির সদস্য ধীমান গঙ্গোপাধ্যায় জানান, অসুখের প্রকাশ না ঘটলেও দেশে প্রাপ্তবয়স্ক জনসংখ্যার প্রায় সকলে কোনও না কোনও সময় যক্ষ্মার সংক্রমণের শিকার হয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘কোভিড ফুসফুসের ক্ষতি তো করছেই। এরই সঙ্গে কারও দেহে যক্ষ্মা জীবাণু ঘুমিয়ে থাকলে কোভিডের সংস্পর্শে তা জেগে উঠছে। সে জন্য কোভিড পজ়িটিভ রোগীদের যক্ষ্মার পরীক্ষা করতে বলা হচ্ছে।’’ করোনার হানায় আরও একটি বিপদ রয়েছে। প্রবীণ চিকিৎসকের কথায়, ‘‘প্রোটোকল মেনে গুরুতর অসুস্থ কোভিড রোগীদের চিকিৎসায় স্টেরয়েড ব্যবহার করা হচ্ছে। কোনও যক্ষ্মা রোগীর দেহে অজান্তে স্টেরয়েড গেলে ক্ষতি হতে পারে। সে জন্য করোনার পাশাপাশি যক্ষ্মার পরীক্ষা গুরুত্বপূর্ণ।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy