ফেরত: একশো দিনের প্রকল্পের জন্য নেওয়া কাটমানি ফেরত দিলেন বাগদার রনঘাট পঞ্চায়েতের উত্তর কুলবেড়িয়া গ্রামের পঞ্চায়েত সুপারভাইজার। —নিজস্ব চিত্র
মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার পরে বেশ কিছু ক্ষেত্রে জনপ্রতিনিধিরা কাটমানির টাকা ফেরত দিচ্ছেন। কিন্তু কাটমানি নিয়ে বিক্ষোভ থামছে না কিছুতেই। ২২ দিনে রাজ্যে ২০৩টি বিক্ষোভের ঘটনা ঘটেছে বলে নবান্নে রিপোর্ট দিয়েছে পুলিশ ডিরেক্টরেট। রিপোর্ট জানাচ্ছে, পুলিশ সময় মতো পৌঁছে যাওয়ায় অনেক জায়গায় বড় ধরনের বিক্ষোভ সামাল দেওয়া গিয়েছে। তবে কোথাও মামলা রুজু করেনি পুলিশ। কারণ, গ্রামবাসীরা কাটমানি চেয়ে নেতাদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখালেও পুলিশের কাছে অভিযোগ জানাতে তেমন তৎপর নন বলে স্বরাষ্ট্র দফতর সূত্রে দাবি করা হয়েছে।
স্বরাষ্ট্রকর্তারা জানাচ্ছেন, ১৬ জুন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নজরুল মঞ্চে পুর প্রতিনিধিদের বৈঠকে কাটমানির প্রসঙ্গ তোলেন। প্রয়োজনে সেই টাকা ফেরানোর নির্দেশ দেন। তার পরেই উত্তর কলকাতার এক প্রোমোটার রাজ্যসভার এক তৃণমূল সদস্যের বিরুদ্ধে কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ তোলেন। ১৮ জুন রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে কাটমানি ফেরতের দাবিতে নেতাদের ঘিরে বিক্ষোভ শুরু হয়। শাসক দলের নেতাদের বাড়ি ঘেরাও, সালিশি সভা বসিয়ে টাকা ফেরানোর প্রতিশ্রুতি আদায়, কোথাও কোথাও মারধরের ঘটনাও ঘটেছে। গোয়েন্দা বাহিনী প্রতিদিনের ঘটনার রিপোর্ট স্বরাষ্ট্র দফতরে পাঠাতেও শুরু করেছে। কাটমানি বিক্ষোভের গতিপ্রকৃতি নিয়ে সরকার অবশ্য এখনও গোয়েন্দাদের কাছে কোনও বিশেষ রিপোর্ট চায়নি। যদিও ১০ জুলাই পর্যন্ত ২০৩টি বিক্ষোভ হয়েছে এবং বিভিন্ন জেলায় তা ঘটেই চলেছে।
নবান্ন সূত্রের খবর, সব চেয়ে বেশি বিক্ষোভ হয়েছে হুগলিতে। সেখানে বিক্ষোভ হয়েছে ৩২টি জায়গায়। পূর্ব বর্ধমানে ২৯, বাঁকুড়ায় ২৪ এবং বীরভূমে ২৩টি জায়গায় কাটমানি ফেরতের দাবি উঠেছে। গোয়েন্দারা জানাচ্ছেন, নদিয়া, উত্তর ২৪ পরগনা, পুরুলিয়ায় ১১টি, পশ্চিম বর্ধমান, জলপাইগুড়ি, ঝাড়গ্রাম, পূর্ব মেদিনীপুরে ছ’টি এবং মালদহ, উত্তর দিনাজপুর ও পশ্চিম মেদিনীপুরে তিনটি করে জায়গায় বিক্ষোভের মুখে পড়েছেন শাসক দলের নেতা বা জনপ্রতিনিধিরা। স্বরাষ্ট্র দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ১০, কোচবিহারে ৯, মুর্শিদাবাদ, ও কলকাতায় দুই এবং দক্ষিণ দিনাজপুর ও আলিপুরদুয়ারে একটি করে জায়গায় কাটমানি-বিক্ষোভ হয়েছে।
স্বরাষ্ট্রকর্তাদের একাংশ জানাচ্ছেন, যে-সব জায়গায় তৃণমূল জিতেছে, কাটমানি বিক্ষোভ সেখানেই বেশি। তৃণমূলের জেতা জেলাগুলিতে বিক্ষোভ তীব্র আকার নেওয়ার ঘটনা আসলে সর্বত্র শাসক দলের মাটি আলগা হওয়ার ইঙ্গিত বলে মনে করছেন ওই স্বরাষ্ট্রকর্তারা। কোনও রাজনৈতিক দলে ছত্রচ্ছায়ার বদলে গ্রামের মানুষ যে-ভাবে একজোট হয়ে স্থানীয় নেতাদের ঘিরে ধরছেন, সেটাও খুব উদ্বেগের বলে মনে করছেন তাঁরা। সেই জন্য কাটমানি বিক্ষোভের খবর পেলেই দ্রুত পুলিশ পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে নবান্ন। যদিও পুলিশ রক্ষণাত্মক ভূমিকাই পালন করছে। এক মাসের মধ্যে বিক্ষোভ নিজেই স্তিমিত হতে পারে বলে স্বরাষ্ট্রকর্তাদের আশা। নইলে মোকাবিলায় ব্যবস্থা নিতে হতে পারে বলে মনে করছে নবান্ন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy