বীরভূমের তৃণমূল সাংসদ শতাব্দী রায়। ফাইল চিত্র।
‘দিদির সুরক্ষা কবচ’ কর্মসূচিতে বেরিয়ে রবিবার রাজ্যের দু’প্রান্তে অসন্তোষের মুখে পড়তে হল দুই ‘দিদির দূত’কে।
বেহাল রাস্তার জন্য খয়রাশোলের পারশুণ্ডি পঞ্চায়েত এলাকায় বীরভূমের তৃণমূল সাংসদ শতাব্দী রায়কে শুনতে হল রাস্তা না হলে ভোট না-দেওয়ার হুঁশিয়ারি। হুগলির পোলবায় দলীয় কর্মীরা স্থানীয় বিধায়ক অসিত মজুমদারকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখালেন। অসিতকে নিগ্রহ করা হয় বলেও কর্মীদের একাংশের দাবি। এখানে কোনও পরিষেবা নিয়ে দাবিদাওয়া নয়, অসিতকে শুনতে হল, পঞ্চায়েত ভোটের টিকিট কই?
এ দিন সকালে খয়রাশোলের পারশুণ্ডি পঞ্চায়েত এলাকার নবসন গ্রামের একটি মন্দির থেকে কর্মসূচি শুরু করেন শতাব্দী। পরের গন্তব্য ছিল জামালপুর প্রাথমিক স্কুল। যে পথ ধরে শতাব্দী ওই গ্রামে পৌঁছন, সেই পথের বেহাল দশা নিয়েই অসন্তোষ। গ্রামে পৌঁছতেই তাঁর সামনে স্থানীয় বাসিন্দারা রাস্তা সংস্কার না হওয়ায় ক্ষোভ উগরে দেন।
আবু সামাদ শেখ নামে এক গ্রামবাসী বলে উঠেন, ‘‘নেতারা পকেটবাজি করছেন। বাম আমল থেকে এই রাস্তা সংস্কার হয়নি। রাস্তা না হলে ভোট পাবেন না।’’ রাস্তা তৈরির দাবি নিয়ে গ্রামের প্রাথমিক স্কুলের পড়ুয়া ও এলাকাবাসীর গণস্বাক্ষর সংবলিত একটি আবেদনপত্র সাংসদের হাতে তুলে দেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মানস কর্মকার।
শতাব্দী তাঁদের জানান, তাঁর ক্ষমতা সীমিত। স্থানীয় নেতারা এই রাস্তার বিষয়ে কোথাও আর্জি জানিয়েছেন কি না, দেখতে হবে। কেন্দ্র বা রাজ্যের থেকে রাস্তার অনুমোদন হলে তবেই করা যাবে। তবে, তিনি বিষয়টি দেখার আশ্বাস দেন।
অন্য দিকে, চুঁচুড়ার বিধায়ক অসিত মজুমদার পোলবা-দাদপুর ব্লকের রাজহাট পঞ্চায়েত ভবনের সামনে পৌঁছতেই হুলস্থুল হয়। এলাকার বর্ষীয়ান তৃণমূল নেতা কালু রহমানের নেতৃত্বে দলীয় কর্মীদের একাংশ অভিযোগ তোলেন, তাঁরা শুনছেন, পঞ্চায়েত ভোটে দলের প্রবীণ বা সর্বক্ষণের নেতা-কর্মীদের টিকিট দেওয়া হবে না। টিকিট পাবেন বিধায়কের ঘনিষ্ঠ বা পছন্দের লোকেরা। বিধায়ককে হাতের সামনে পেয়ে তাঁরা বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। বলতে থাকেন, বিধায়ক ঠান্ডা ঘরে বসে টিকিট বিলি-বণ্টনের প্রক্রিয়া চালাচ্ছেন। বিধায়ক তাঁদের বোঝানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে কার্যত উত্তেজিত হয়ে পড়েন। তাঁর হয়ে কিছু নেতা-কর্মী গোলমালে জড়ান। এই পরিস্থিতিতে ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়ে যায়। সেই সময়ে বিধায়কের গায়েও হাত পড়ে বলে তৃণমূলের একাংশের দাবি।
তৃণমূল নেতা কালু বলেন, ‘‘বিধায়ক নিজের লোককে টিকিট পাইয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করছেন বলে জেনেছি। এর প্রতিবাদেই দলের কর্মীরা বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। দলের জেলা ও রাজ্যের নেতাদের জানিয়েছি। দল যা সিদ্ধান্ত নেবে, মেনে নেব। বিধায়কের একার সিদ্ধান্ত মানব না।’’ মহম্মদ ইয়াসিন নামে আর এক নেতা বলেন, ‘‘আমরা শুনেছি, এই ব্লকে পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রার্থী তালিকা তৈরি হয়ে গিয়েছে। যাঁরা অন্য দল থেকে তৃণমূলে নতুন যোগ দিয়েছেন, তাঁদের টিকিট দেওয়া হবে। আমরা সারা বছর দল করি। টিকিট পাওয়ার মূল দাবিদার যাঁরা, তাঁদের টিকিট দিচ্ছেন না বিধায়ক।’’
গোলমালের কথা মানলেও তাঁর গায়ে হাত পড়ার কথা উড়িয়ে দিয়েছেন বিধায়ক। তাঁর কথায়, ‘‘এমন কিছুই হয়নি। এ সব বাজে কথা। প্রার্থী নিয়ে দলের কর্মীরা আমার কাছে কিছু অভিযোগ জানিয়েছেন। বিষয়টি দেখছি।’’ তবে, গোটা পরিস্থিতি নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy