বৈঠকে: উত্তরকন্যায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক
উত্তরবঙ্গের মধ্যে একসময় শুধু কোচবিহারই তৃণমূলের ঘাঁটি বলে পরিচিত ছিল। তা রক্ষায় তিনি যে কোনও খামতি রাখবেন না, সেটা মঙ্গলবার উত্তরকন্যার প্রশাসনিক বৈঠকে ঠারেঠোরে বুঝিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিন জেলা নিয়ে ওই বৈঠক হলেও বারে বারে তিনি কোচবিহারের প্রসঙ্গে এসেছেন। প্রশাসন থেকে পুলিশ কর্তা তো বটেই, সেখানে উপস্থিত জনপ্রতিনিধিদেরও জানিয়ে দিয়েছেন, কোচবিহার খুব গুরুত্বপূর্ণ জেলা। সেখানে সময় দিয়ে কাজ করতে হবে। সেই সঙ্গে কোচবিহারে সাবেক ছিটমহল থেকে শুরু করে শিল্প, ঐতিহ্য (হেরিটেজ) শহর এবং রাজবংশীদের উন্নয়ন নিয়েও তিনি তাঁর উদ্বেগের কথা জানিয়ে দিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “কোচবিহার একটি গুরুত্বপূর্ণ জেলা। সেখানে সাবেক ছিটমহল রয়েছে, সীমান্ত রয়েছে। সেখানে গোলমাল করার চেষ্টা হচ্ছে। সবাইকে সতর্ক থাকতে। সাধারণ মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক বাড়াতে হবে।”
গত লোকসভা ভোটে কোচবিহার আসন তৃণমূলের হাত থেকে ছিনিয়ে নেয় বিজেপি। তার পর থেকে বারে বারে উত্তপ্ত হয়েছে জেলা। তৃণমূল নেতা-মন্ত্রীদের ঘেরাও করে বিক্ষোভের ঘটনাও ঘটেছে। বিজেপি সংগঠন বাড়াতে সমস্ত এলাকায় কাজ শুরু করেছে। এই অবস্থায় মুখ্যমন্ত্রী এ দিন জেলার সমস্ত বিষয় নিয়েই খোঁজ নেন। জেলার পুলিশ কর্তা এবং নতুন জেলাশাসক পবন কাদেয়ানকেও জেলার গুরুত্বের কথা জানিয়ে দেন।
তিনি যে পুলিশের কাজে খুব একটা সন্তুষ্ট নন, সে কথাও অনেকটা স্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী। সাবেক ছিটমহলে যাতে দ্রুত তফসিলি জাতি, জনজাতি এবং অন্যান্য পিছিয়ে পড়া শ্রেণিভুক্তদের দ্রুত শংসাপত্র দেওয়া হয়, সে জন্য নির্দেশ দেন। কোচবিহারে শিল্পক্ষেত্রে ছাড় দেওয়ার পরেও কেন কোনও কাজ হচ্ছে না, তোলেন সেই প্রশ্নও। তিনি সেখানে শিল্প গড়ার জন্য আবেদন জানান। ওই বৈঠকে যোগ দেওয়া কোচবিহারের শিল্পদ্যোগী অজয় গুপ্ত জানান, শিল্প তৈরির বিষয়ে তাঁরা চেষ্টা করছেন। খুব দ্রুত অগ্রগতি হবে বলে তাঁরা আশাবাদী।
একই ভাবে কোচবিহারকে হেরিটেজ বা ঐতিহ্য শহর করার ফলে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরির নির্দেশ দেন। হোম স্টে তৈরির বিষয়েও উদ্যোগ নিতে বলেন। সেই সঙ্গেই কোচবিহার পুরসভার চেয়ারম্যান ভূষণ সিংহক শহর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার নির্দেশ দেন। পথবাতি এবং রাস্তা মেরামতির নির্দেশও দেন।
রাজবংশীদের উন্নয়ন নিয়েও বংশীবদন বর্মণের কাছে জানতে চান মুখ্যমন্ত্রী। বংশীবদন বর্তমানে রাজবংশী উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে রয়েছেন। ১২ কোটি টাকায় তিনি রাজবংশী ভবন তৈরির জন্য আবেদন জানান মুখ্যমন্ত্রীর কাছে। সেখানে কর্মী নিয়োগের আর্জিও জানান। মুখ্যমন্ত্রী তখন জানান, এই মুহূর্তে ১২ কোটি টাকা খরচ করে ভবন তৈরি সম্ভব নয়। তবে ধাপে ধাপে তিনি সবটাই করার আশ্বাস দিয়েছেন।
কোচবিহার নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর ওই উদ্যোগে খুশি জেলা তৃণমূলের নেতারা। তাঁদের একজন বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী শুরু থেকেই কোচবিহারের উন্নয়ন করেছেন। সে জন্যেই বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিক্যাল কলেজ কোচবিহার পেয়েছে। এ বারেও তার অন্যথা হল না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy