Advertisement
২৭ নভেম্বর ২০২৪
Coronavirus

ঝড় সামলানোর পরেই জনস্রোত হাওড়ায়, বাড়ছে করোনার শঙ্কা

রবিবার রাত থেকেই হাওড়া শহরের বহু জায়গায় বিদ্যুৎ পরিষেবা ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে শুরু করে।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৬ মে ২০২০ ০১:৪৬
Share: Save:

ঘূর্ণিঝড় আমপানের ক্ষয়ক্ষতি সামলে সোমবার অনেকটা সচল হয়েছিল হাওড়া। আর সেই সুযোগে লকডাউন শিকেয় তুলে, দূরত্ব-বিধির পরোয়া না-করে মানুষের ঢল নামল রাস্তায়। চলল যানবাহন। খুলে গেল অধিকাংশ দোকান। জ়োন বিভাজন ভুলে কন্টেনমেন্ট ‘এ’ জ়োনেও বাজার বসল যত্রতত্র। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের আশঙ্কা, এর ফলে হাওড়ায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দ্রুত বাড়বে। যা সামাল দেওয়ার পরিকাঠামো শহরে নেই।

রবিবার রাত থেকেই হাওড়া শহরের বহু জায়গায় বিদ্যুৎ পরিষেবা ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে শুরু করে। এ দিন সিইএসসি-র তরফে জানানো হয়, শহরের বাইরে কয়েকটি জায়গা ছাড়া হাওড়া পুর এলাকার প্রায় সর্বত্র পরিষেবা স্বাভাবিক হয়েছে। নাজিরগঞ্জ, মানিকপুর, জোরহাটে কাজ চলছে। অন্য দিকে, রবিবার রাতের মধ্যে পদ্মপুকুর জলপ্রকল্পের পাঁচটি পাম্প কাজ শুরু করায় শহরে জলের সঙ্কটও অনেকটা মিটে যায়। তবে কিছু জায়গা এখনও জলমগ্ন হয়ে থাকায় সেখানকার বাসিন্দাদের দুর্ভোগ কমেনি। ঝড়ের চার দিন‌ পরেও এলাকা থেকে জল না-নামায় এ দিন সাত নম্বর ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলরের বাড়ি ঘেরাও করেন স্থানীয়েরা।

তবে সার্বিক ভাবে এ দিন হাওড়ার পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক। এক পুরকর্তা বলেন, ‘‘ঝড়ে পড়ে যাওয়া গাছ কাটতে কলকাতা পুরসভার সাহায্যে মোট ২২টি দল কাজ করছে। এর মধ্যে আছে হাওড়া পুরসভার বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী, দমকল-সহ পূর্ত দফতরের পাঠানো বিশেষ দল। এ ছাড়াও জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর দু’টি দল এবং ওড়িশা থেকে আসা এসডিআরএফের ছ’টি বিশেষ দল গাছ কাটায় হাত লাগিয়েছে। যার জন্য অলিগলি ছাড়া বড় রাস্তায় পড়ে থাকা সমস্ত গাছ কেটে সরানো সম্ভব হয়েছে।’’

আরও পড়ুন: দেড় মিনিটের ঝড়ে বিপর্যস্ত জলপাইগুড়ি, ভারী বৃষ্টি চলবে উত্তরবঙ্গে

ওই পুরকর্তা জানান, পদ্মপুকুর জলপ্রকল্পে সব পাম্প সোমবার থেকে কাজ শুরু করেছে। ফলে সঙ্কট অনেকটাই মিটেছে। অধিকাংশ ওয়ার্ডেই স্বাভাবিক হয়েছে জল সরবরাহ।

কিন্তু এই স্বাভাবিকতার মধ্যেই সিঁদুরে মেঘ দেখছেন জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা। কারণ, এ দিন সকাল থেকে হাওড়ার বড় রাস্তা এবং গলিতে মানুষের ভিড় বাড়তে থাকে। দোকানপাট সব খুলে যায়। বাজারগুলি এখনও বন্ধ থাকলেও রাস্তার ধারে এবং অলিগলিতে অস্থায়ী বাজার বসে পড়ে। দূরত্ব-বিধি না-মেনে বাজার করতে নেমে পড়েন বাসিন্দারা। এই অবস্থা দেখা যায় কন্টেনমেন্ট ‘এ’ জ়োন হিসেবে চিহ্নিত ডবসন রোড, পিলখানা, বেলিলিয়াস রোড, নেতাজি সুভাষ রোড, জি টি রোড, ফজিরবাজার-সহ বহু এলাকায়।

জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, হাওড়া পুর এলাকায় মোট ৩৪টি ওয়ার্ডের ৮৮টি রাস্তাকে কন্টেনমেন্ট ‘এ’ জ়োন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। অর্থাৎ ওই এলাকাগুলিতে কঠোর ভাবে লকডাউন বলবৎ হবে। বন্ধ থাকবে সব দোকান। কিন্তু সরকারি সেই নির্দেশকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে এ দিন লকডাউনের আগের অবস্থায় ফিরে আসে হাওড়া। স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘যে ভাবে মানুষজন বেরিয়ে পড়েছেন, তাতে অনিবার্য ভাবে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়বে। সেই পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার মতো পরিকাঠামো হাওড়ায় নেই।’’

কিন্তু এ ক্ষেত্রে পুলিশের ভূমিকা কী? হাওড়া সিটি পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘কন্টেনমেন্ট ‘এ’ জ়োন হিসেবে চিহ্নিত জায়গাগুলি গার্ডরেল ও দড়ি দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়েছে। সব জায়গায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এর পরেও যদি মানুষ রাস্তায় বেরোন, আমরা কতটা আটকাতে পারি? তবে সবাইকে বোঝানো হচ্ছে, লকডাউন চলছে। বেরোবেন না। কিন্তু মানুষ আর শুনছেন না।’’

আরও পড়ুন: প্রবল বেগে ধেয়ে আসছে আরও একটা ঘূর্ণিঝড়! এটা কি সত্যি?

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy