Advertisement
০৭ নভেম্বর ২০২৪

কল্পলোকে প্রয়াণ অদ্রীশ বর্ধনের

অদ্রীশবাবুর ছেলে অম্বর বর্ধন এ দিন বলেন, ‘‘বাবা দীর্ঘদিন ধরে রক্তে শর্করা, কিডনি, হৃদ্‌রোগের জটিলতায় ভুগছিলেন। মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণও হয়েছিল। শেষের দিকটায় কাউকে চিনতেও সমস্যা হচ্ছিল।’’ বাংলায় কল্পবিজ্ঞান লেখা ও প্রকাশনার মতো ছকভাঙা রাস্তায় হাঁটা সাহসী মানুষটি ক্রমশ নিস্তেজ হয়ে পড়েছিলেন।

অদ্রীশ বর্ধন

অদ্রীশ বর্ধন

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ মে ২০১৯ ০৩:২৯
Share: Save:

জুল ভার্ন, এডগার অ্যালান পো থেকে এইচপি লাভক্র্যাফ্টদের মতো লেখকদের কল্পবিশ্ব মাতৃভাষায় আমবাঙালির কাছে টেনে এনেছিলেন তিনি। বাংলা কল্পবিজ্ঞান-কাহিনির উজ্জ্বল তারকা অদ্রীশ বর্ধন সোমবার রাত ১টা নাগাদ তাঁর বাড়িতে প্রয়াত হয়েছেন। বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর। মঙ্গলবার সকালে নিমতলা শ্মশানে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। অদ্রীশবাবুর ছেলে, বৌমা ও নাতি রয়েছেন।

অদ্রীশবাবুর ছেলে অম্বর বর্ধন এ দিন বলেন, ‘‘বাবা দীর্ঘদিন ধরে রক্তে শর্করা, কিডনি, হৃদ্‌রোগের জটিলতায় ভুগছিলেন। মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণও হয়েছিল। শেষের দিকটায় কাউকে চিনতেও সমস্যা হচ্ছিল।’’ বাংলায় কল্পবিজ্ঞান লেখা ও প্রকাশনার মতো ছকভাঙা রাস্তায় হাঁটা সাহসী মানুষটি ক্রমশ নিস্তেজ হয়ে পড়েছিলেন।

কয়েক বছর আগে এক সাক্ষাৎকারে অদ্রীশবাবু বলেছিলেন, তাঁর কল্পবিজ্ঞান লেখার শুরু নেহাতই পাগলামি থেকে। বাড়িতেই ছাপিয়ে পত্রিকা প্রকাশ করতেন। তাঁর ‘আশ্চর্য’, ‘ফ্যান্টাসি’র মতো কল্পবিজ্ঞান পত্রিকা ছাপ ফেলেছিল বাংলায়। ‘কিশোর মন’ পত্রিকাটিও সম্পাদনা করেছেন। অনুবাদ ছাড়াও মৌলিক লেখায় তাঁর চরিত্র প্রোফেসর নাটবল্টু চক্রের কাহিনির চাহিদা রয়েছে এখনও। লিখেছেন কল্পবিজ্ঞান, রহস্যকাহিনি। সত্যজিৎ রায়, প্রেমেন্দ্র মিত্র প্রমুখের অশেষ স্নেহ এবং প্রশ্রয় পেয়েছিলেন অদ্রীশবাবু।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

পথিক গুহের সংযোজন: কল্পবিজ্ঞান-কাহিনিতে সাহিত্যের প্রসাদগুণে প্রেমেন্দ্র মিত্র আমার চোখে অবশ্যই এগিয়ে থাকবেন। তবে আইজ়্যাক আসিমভ, আর্থার সি ক্লার্কের আদলে পশ্চিমি সায়েন্স ফিকশনের ঘরানাকে বাংলায় আত্তীকরণে অদ্রীশবাবুর অবদান স্মরণীয়। নিছক কল্পনা নয়, বিজ্ঞানের সম্ভাবনাগুলিকে নিয়ে খেলা করে কাহিনির নির্মাণে অদ্রীশবাবুর কাজের ইতিহাস-মূল্যও রয়েছে।

সেই সঙ্গে তাঁর কল্পবিজ্ঞান-নির্ভর পত্রিকা সম্পাদনার কাজ করে যাওয়াটাও আমাকে খুব আকৃষ্ট করেছে। মনে রাখতে হবে, তখন ইন্টারনেট ছিল না। কলকাতায় বসে বিজ্ঞানের বিষয় নিয়ে চর্চা খুব সোজা ছিল না। এ ছাড়া ‘সানন্দা’ পত্রিকায় অদ্রীশবাবুর ধারাবাহিক রচনা ‘আমার মা সব জানে’-ও জনপ্রিয় হয়েছিল। পরে তা তিন খণ্ডে বই হয়ে প্রকাশিত হয়। প্রশ্নোত্তরের মোড়কে রোজকার জীবনে বিজ্ঞানের প্রয়োগ নিয়ে নানা কথা উঠে এসেছিল তাতে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE