গ্রাফিক— সনৎ সিংহ
নবান্ন অভিযানের এক দিন আগে কর্মসূচির মূল হোতা কলকাতার একটি হোটেলে দেখা করেছিলেন এক রাজনৈতিক নেতার সঙ্গে! সোমবার সকালে এমনটাই দাবি করেছিল রাজ্য পুলিশ। যে মিছিলকে প্রকাশ্যে ‘অরাজনৈতিক’ বলে প্রচার করা হচ্ছে, তার নেপথ্যে আদতে রাজনীতি রয়েছে কি না সে প্রশ্ন তুলেই ওই তথ্য প্রকাশ করেন রাজ্যপুলিশের এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতিম সরকার। সন্ধ্যায় তিনি জানালেন, তাঁর কাছে ওই সাক্ষাতের আরও বিশদ রয়েছে। ছাত্র সমাজের ওই প্রতিনিধি কে তিনি জানেন। কোন রাজনৈতিক নেতার সঙ্গে কোন হোটেলের কোন ঘরে তিনি দেখা করতে গিয়েছিলেন তা-ও জানেন। এ সংক্রান্ত কয়েকটি তথ্য প্রকাশ করে পুলিশ বলেছে, ‘‘আপনাদের কি মনে হয় না এটা একটা অদ্ভুত সমাপতন?’’
আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছে ‘পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ’। ওই সংগঠনের কর্মসূচিকে বাইরে থেকে সমর্থন জানানোর কথা বলেছে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি। এর মধ্যেই সোমবার সকালে তৃণমূল অভিযোগ করে, রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির জন্য ওই মিছিলে গুলি চালানো এমনকি, লাশ ফেলারও পরিকল্পনা করছে শকুনের রাজনীতি করা একদল রাজনীতিবিদ। এই মর্মে দু’টি ভিডিয়োও প্রকাশ করেন রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এবং তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ। ওই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন। তবে ভিডিয়োয় দুই ব্যক্তিকে একাধিক বার নানা ভাবে বলতে শোনা যাচ্ছে দুটি শব্দ— ‘বডি পড়বে’। কুণালদের ওই ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসার পরেই পুলিশ একটি সাংবাদিক বৈঠক করে জানায়, নবান্ন অভিযানে তারা অশান্তির আশঙ্কা করছে। তার কারণ, তাদের হাতে আসা বেশ কিছু ‘সূত্র’ সে দিকে ইঙ্গিত করছে। সেই সমস্ত ‘সূত্রে’রই একটি ছিল ছাত্র সমাজের প্রতিনিধির সঙ্গে কলকাতার এক বিলাসবহুল হোটেলে এক রাজনৈতিক নেতার সাক্ষাৎ। এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতিম ওই সাক্ষাৎ প্রসঙ্গেই বলেছেন, ‘‘রবিবার কলকাতার ওই বিলাসবহুল হোটেল কোন রাজনৈতিক নেতার সঙ্গে কোন ছাত্রনেতা দেখা করতে গিয়েছিলেন, তার সবটাই তাঁরা জানেন। তবে তাঁরা কারও নাম বলবেন না।’’ অবশ্য নাম না বললেও আরও অনেক কিছুই বলেছে পুলিশ।
এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতিম বলেছেন, ‘‘রবিবার অর্থাৎ ২৫ অগস্ট সকাল ১১টা বেজে ২৫ মিনিটে হোটেল হায়াত রিজেন্সিতে প্রবেশ করেন ছাত্র সমাজের অন্যতম আহ্বায়ক। তাঁর নাম করব না। কিন্তু তিনি অনেক কিছুই বলে বেড়াচ্ছেন। একটু আগেও সাংবাদিক বৈঠক করে অনেককিছু বলেছেন।’’ ঘটনাচক্রে এডিজির ওই সাংবাদিক বৈঠকের আগে প্রেস ক্লাবে একটি সাংবাদিক বৈঠক করেন ছাত্রসমাজের প্রতিনিধিরা। তাঁদের মধ্যে ছিলেন আহ্বায়ক সায়ন লাহিড়ী এবং শুভঙ্কর হালদারেরা। সুপ্রতিম জানান, যিনি গিয়েছিলেন, তাঁর সিসিক্যামেরার ফুটেজও আছে পুলিশের কাছে। পুলিশ জানিয়েছে, যে কেউ স্বাধীন ভাবে যে কোনও জায়গায় যেতে পারেন। কিন্তু একই সঙ্গে তারা প্রশ্ন তুলেছে, ‘‘নবান্ন অভিযানের মূল হোতা ছাত্র সমাজের প্রতিনিধিরা যেখানে নিজেদের সাধারণ ঘরের সন্তান বলে দাবি করছেন, সেখানে তাঁদের এক জনের হঠাৎ এই আবহেই শহরের একটি পাঁচতারা হোটেলে যাওয়া এবং রাজনৈতিক নেতার সঙ্গে সাক্ষাৎ কি কেবলই সমাপতন? আপনাদের মনেও কি এই প্রশ্ন উঠছে না?’’
সুপ্রতিম জানিয়েছেন, সোমবার সকালে ওই সাক্ষাতের তথ্য প্রকাশ্যে আসার পরে তাঁদের কাছে নানা প্রশ্ন আসতে শুরু করেছিল। ছাত্র সমাজের ওই প্রতিনিধির নাম কী? তিনি কার সঙ্গেই বা দেখা করতে গিয়েছিলেন, এমন অনেক প্রশ্ন ব্যক্তিগত ভাবে তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে। এমনকি, পুলিশের কাছেও। তাই এ সংক্রান্ত কিছু তথ্য প্রকাশ করলেন তাঁরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy