Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

গরু পাচার করে জাল নোট নিয়ে ঘরে ফেরা

মুর্শিদাবাদে সম্প্রতি ধৃত জাল নোটের এক কারবারিকে জেরা করে এই দ্বিমুখী দুষ্কর্মের কথা জানতে পেরেছে সিআইডি। ভবানী ভবনের খবর, গত ৩০ জানুয়ারি মুর্শিদাবাদের রঘুনাথগঞ্জ থেকে ইসমাইল শেখ নামে জাল নোটের ওই কারবারিকে গ্রেফতার করা হয়। সে বাংলাদেশ থেকে জাল নোট নিয়ে এ-পারে ঢুকছিল।

শিবাজী দে সরকার
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০২:৫৪
Share: Save:

এক যাত্রায় দু’রকম দুষ্কর্মের সূত্রে সীমান্তের চোরাকারবারিরা দ্বিগুণ মুনাফা লুটছে বলে জানাচ্ছেন তদন্তকারীরা। এ-পার থেকে সীমান্ত পেরিয়ে গরু নিয়ে বাংলাদেশে যাওয়া এবং জাল টাকা নিয়ে ফেরা!

মুর্শিদাবাদে সম্প্রতি ধৃত জাল নোটের এক কারবারিকে জেরা করে এই দ্বিমুখী দুষ্কর্মের কথা জানতে পেরেছে সিআইডি। ভবানী ভবনের খবর, গত ৩০ জানুয়ারি মুর্শিদাবাদের রঘুনাথগঞ্জ থেকে ইসমাইল শেখ নামে জাল নোটের ওই কারবারিকে গ্রেফতার করা হয়। সে বাংলাদেশ থেকে জাল নোট নিয়ে এ-পারে ঢুকছিল। তার কাছে সাড়ে তিন লক্ষ টাকার জাল ভারতীয় নোট পাওয়া গিয়েছে। বেশির ভাগই দু’হাজার টাকার নোট। জাল হলেও সেগুলো উঁচু মানের বলেই জানান গোয়েন্দারা।

ইসমাইলকে জেরা করে সিআইডি জেনেছে, মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন সীমান্ত এলাকায় গরু পাচারকারীরা সক্রিয়। রাতের অন্ধকারে নদীর চর পেরিয়ে তারা যায় ও-পারে। ফিরে আসে জাল নোট নিয়ে। চর এলাকায় বিএসএফ বা সীমান্তরক্ষী বাহিনীর নজরদারি তুলনায় কম থাকে বলেও গোয়েন্দাদের দাবি। বিএসএফের সাউথ বেঙ্গল ফ্রন্টিয়ারের মুখপাত্র মানসজ্যোতি বোরা অবশ্য বলেন, ‘‘সীমান্তে নজরদারিতে খামতি নেই। নিয়মিত জাল নোট কারবারিদের ধরে আমরা পুলিশের হাতে দিই। গরু পাচারের উপরেও নজর রাখা হয়।’’

নোটবন্দির সময় কেন্দ্রীয় সরকার দাবি করেছিল, ৫০০ এবং ১০০০ টাকার নোট বাতিল হওয়ায় জাল নোটের কারবারিদের দমন করা যাবে। বাস্তবে কয়েক মাস জাল নোট পাচার বন্ধও ছিল। কিন্তু গত কয়েক মাসে সিআইডি এবং কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের অনেকেই দেখছেন, নতুন দু’হাজার টাকার নোটও দিব্যি জাল হচ্ছে। বরং এতে আরও সুবিধাই হয়েছে নোট পাচারকারীদের। কারণ, দু’হাজার টাকার নোট অল্প পরিমাণে আনলেও তার আপাত অর্থমূল্য অনেক।

বছর দেড়েক আগে গরু পাচার ঠেকানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পরে অভিযান শুরু হলেও পাচার পুরোপুরি বন্ধ হয়নি। ইসমাইলের মতো দাগি চোরাকারবারির পাকড়াও হওয়ার ঘটনাই তার প্রমাণ।

গোয়েন্দারা জানান, ইসমাইলদের জাল নোট পাচার চক্রের মূল চাঁই হিসেবে সইদুল নামে এক বাংলাদেশির নাম উঠে এসেছে। যদিও সইদুলের সঙ্গে তার সরাসরি যোগ ছিল না বলে ধৃতের দাবি। তদন্তকারীরা জানান, গরু পাচারকারীদের কাছ থেকে জাল নোট নিয়ে এ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে পৌঁছে দেওয়ার জন্য অন্তত এক ডজন এজেন্ট নিয়োগ করেছে সইদুল। এই চক্রের আরও কয়েক জন সদস্যের নামও ফাঁস করেছে ইসমাইল।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE