প্রতীকী ছবি।
স্কুল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়, সব স্তরেরই পঠনপাঠনে মোক্ষম ধাক্কা মেরেছে করোনা। স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তরের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন বা ইউজিসি ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের যে-ক্যালেন্ডার তৈরি করেছে, তাতেও দেখা যাচ্ছে, পঠনপাঠনের সময়সীমা কমছে অনেকটাই। কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী রমেশ পোখরিয়াল নিশঙ্ক মঙ্গলবার টুইটে সেই ক্যালেন্ডার প্রকাশ করেন।
উচ্চশিক্ষার নতুন ক্যালেন্ডারে জানানো হয়েছে, ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষ ১ নভেম্বর শুরু হবে। তবে কোনও কারণে ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তরের চূড়ান্ত বর্ষ বা সিমেস্টারের ফল প্রকাশে দেরি হলে ১ নভেম্বরের বদলে ১৮ নভেম্বরও ক্লাস শুরু করা যেতে পারে। কোথাও আসন ফাঁকা থেকে গেলে সেগুলি পূরণ করার জন্য ভর্তির শেষ তারিখ ৩০ নভেম্বর। পশ্চিমবঙ্গে এখন স্নাতক স্তরে ভর্তির প্রক্রিয়া চলছে। শেষ হবে ৩০ অক্টোবর। স্নাতকোত্তর স্তরে ভর্তি-প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার কথা ১ নভেম্বর। ইউজিসি জানিয়েছে, অনলাইন বা অফলাইন অথবা দু’ভাবেই ক্লাস নেওয়া যাবে। ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষ শুরু হবে ২০২১ সালের ৩০ অগস্ট।
ইউজিসি-র সুস্পষ্ট নির্দেশ, কোনও পড়ুয়া যদি কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে ৩০ নভেম্বরের মধ্যে অন্যত্র চলে যান, সে-ক্ষেত্রে করোনা-কালে অভিভাবকদের আর্থিক পরিস্থিতির কথা ভেবে ভর্তির পুরো ফি ফেরত দিতে হবে। কোনও রকম চার্জ কেটে নেওয়া যাবে না। আর কেউ যদি ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে ভর্তি বাতিল করেন, তা হলে এক হাজার টাকার বেশি প্রসেসিং ফি নেওয়া যাবে না।
স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের জন্য ইউজিসির ক্যালেন্ডার (২০২০-২১)
• দু’টি স্তরেই প্রথম সিমেস্টার ভর্তি প্রক্রিয়া ৩১ অক্টোবরের মধ্যে শেষ করতে হবে।
• প্রথম সিমেস্টার এবং প্রথম বর্ষের ক্লাস শুরু ১ নভেম্বর থেকে।
• প্রথম সিমেস্টার এবং অন্য বিজোড় সিমেস্টারের পরীক্ষার প্রস্তুতি-ছুটি ১ মার্চ থেকে ৭ মার্চ পর্যন্ত।
• প্রথম এবং বিজোড় সিমেস্টারের পরীক্ষা ৮ মার্চ থেকে ২৬ মার্চ পর্যন্ত।
• পরের সিমেস্টারের ক্লাস শুরুর আগের বিরতি ২৭ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল।
• ইভেন বা জোড় সিমেস্টারের ক্লাস শুরু ৫ এপ্রিল।
• পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতির বিরতি ১ থেকে ৮ অগস্ট।
• ইভেন সিমেস্টারের পরীক্ষা ৯ থেকে ২১ অগস্ট।
• পরবর্তী সিমেস্টার বিরতি ২২ আগস্ট থেকে ২৯ অগস্ট।
• পরবর্তী শিক্ষাবর্ষের অ্যাকাডেমিক সেশন শুরু ৩০ অগস্ট।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি কুটা-র সভাপতি পার্থিব বসু বলেন, ‘‘সারা দেশে উচ্চশিক্ষার পঠনপাঠনে সামঞ্জস্য রাখতেই এই ক্যালেন্ডার। তবু এর মধ্যে সব কিছু কেন্দ্রীয় ভাবে নিয়ন্ত্রণ করার একটা ঝোঁক রয়েছে। পরিস্থিতি অনুযায়ী রাজ্যগুলির হাতে কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা ছাড়লে ভাল হত।’’
আরও পড়ুন: ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আহ্বান, চ্যাট গ্রুপে জেহাদি বার্তালাপ
আরও পড়ুন: ‘আমার পোলাটা তো সব সময় আতিউরের সঙ্গে ঘুরত, ওর কী হবে গো!’
প্রত্যন্ত অঞ্চলে অনলাইন শিক্ষার সুফল যে পৌঁছচ্ছে না, সেটা প্রমাণিত। এই বিষয়েও চিন্তিত শিক্ষা শিবির। ‘‘শিক্ষাবর্ষ বাঁচুক, সকলেই চাই। কিন্তু পঠনপাঠনের সুফল যেন প্রান্তিক পড়ুয়াদের কাছেও পৌঁছয়। এক শ্রেণি পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারবেন আর যাঁদের স্মার্টফোন বা ইন্টারনেট নেই, তাঁরা বঞ্চিত হবেন— এমনটা যেন না-হয়,’’ বলেন রাজ্য কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির (ওয়েবকুটা) সভাপতি শুভোদয় দাশগুপ্ত। নতুন ক্যালেন্ডার অনুযায়ী যে-হেতু পঠনপাঠনের সময় কমে যাচ্ছে, তাই পাঠ্যক্রম কমানো হবে কি না, সেই প্রশ্নও তুলেছেন অনেকে। রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সব্যসাচী বসু রায়চৌধুরী জানান, আগামী বছর বিধানসভা নির্বাচন। সেই সময় ভোটের কাজে কিছু দিনের জন্য বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নিয়ে নেওয়া হবে। তখন তো পড়াশোনা হবে না। রাজ্য সরকারি কলেজ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক দেবাশিস সরকারের বক্তব্য, নতুন ক্যালেন্ডারে প্রতিটি সিমেস্টারে আগের থেকে প্রায় দু’মাস সময় কমছে। তাই পাঠ্যক্রমও কমাতে হবে। অনলাইনে প্র্যাক্টিক্যাল পরীক্ষা হলে তার পাঠ্যক্রম কী ভাবে তৈরি করা যায়, সেটাও ভাবা দরকার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy