Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪
Abhishek Banerjee

নৈহাটির বড় মায়ের মন্দিরে পুজো দিলেন অভিষেক, দেখা গেল না আশপাশের কোন চার জন বিধায়ককে?

নৈহাটির বড় মায়ের পুজো এ বার ১০০ বছরে পা দিল। নবনির্মিত মন্দির উদ্বোধনের সময়েই অভিষেককে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন আয়োজকেরা। কিন্তু সেই সময়ে তিনি যেতে পারেননি। কথা দিয়েছিলেন পরে যাবেন।

Abhishek Banerjee

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। —সংগৃহীত।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ নভেম্বর ২০২৩ ২২:৪৩
Share: Save:

পূর্বনির্ধারিত সূচি মেনে মঙ্গলবার বিকেলে নৈহাটির ব়়ড় মায়ের মন্দিরে পুজো দিলেন তৃণমূলের ‘সেনাপতি’ তথা সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সঙ্গে ছিলেন উত্তর ২৪ পরগনার অধিকাংশ তৃণমূল বিধায়ক। কিন্তু দেখা গেল না ব্যারাকপুর শিল্পা়ঞ্চলের চার তৃণমূল বিধায়ককে।

অভিষেক যখন বড় মায়ের মূর্তির সামনে পুজোতে বসেছেন, তখন তাঁর ঠিক পাশেই দেখা গিয়েছে বরাহনগরের বিধায়ক তাপস রায়কে। ছিলেন পানিহাটির বিধায়ক নির্মল ঘোষ, দমদমের বিধায়ক তথা রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু, জগদ্দলের বিধায়ক সোমনাথ শামস। নৈহাটির বিধায়ক তথা রাজ্যের সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিক নিজে বড় মায়ের পুজোর অন্যতম উদ্যোক্তা। তিনি যে থাকবেন, তা বলাই বাহুল্য। এমনকি, দীর্ঘ পথ উজিয়ে অশোকনগরের বিধায়ক তথা উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের সভাধিপতি নারায়ণ গোস্বামীও পৌঁছেছিলেন নৈহাটিতে। ওই এলাকায় একটিই মাত্র বিধানসভা কেন্দ্র রয়েছে, যা বিজেপির দখলে। ভাটপাড়া। সেখানকার বিধায়ক পবন সিংহ। যিনি সাংসদ অর্জুন সিংহের পুত্র। অর্জুন বিজেপির টিকিটে ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্র থেকে জিতলেও পরে তৃণমূলে যোগ দেন। অভিষেকের পুজো দেওয়ার সময়ে সাংসদও হাজির ছিলেন মন্দির প্রাঙ্গণে।

কিন্তু দেখা যায়নি চার তৃণমূল বিধায়ককে। তাঁরা হলেন কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্র, খড়দহের বিধায়ক তথা রাজ্যের কৃষি ও পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, ব্যারাকপুরের বিধায়ক তথা চলচ্চিত্র পরিচালক রাজ চক্রবর্তী এবং নোয়াপাড়ার বিধায়ক মঞ্জু বসু।

কেন দলের সেনাপতির কর্মসূচিতে দেখা গেল না ওই চার বিধায়ককে? মঙ্গলবার রাতে আনন্দবাজার অনলাইনকে মদন মিত্র বলেন, ‘‘আমি এই কর্মসূচির কথা আগে জানতাম না। তা ছাড়া আমি জরুরি কাজে কলকাতার বাইরে রয়েছি।’’ ব্যারাকপুরের বিধায়ক রাজ বলেন, ‘‘কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব নিয়ে একটি বৈঠক ছিল। সেটি একই সময়ে হওয়ায় আমি যেতে পারিনি। আগেই বিষয়টি আমি পার্থদাকে (ভৌমিক) জানিয়ে রেখেছিলাম।’’ প্রসঙ্গত, রাজের ওয়েব সিরিজ ‘আবার প্রলয়’-এর দৌলতে মন্ত্রী পার্থকে সম্প্রতি অভিনেতা অবতারে দেখা গিয়েছে। তবে মঞ্জু বসু কেন যাননি, তা জানা যায়নি। একাধিক বার ফোন করলে এবং বার্তা পাঠালেও জবাব আসেনি। শোভনদেব বলেছেন, ‘‘কলকাতা থেকে খড়দহ যতদূর, খড়দহ থেকে নৈহাটিও ততদূর। আমার তো যাওয়ার কোনও কথা ছিল না।’’ পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব মঙ্গলবার সকালে বিধানসভায় গিয়েছিলেন।

অভিষেকের এই কর্মসূচিতে মদন এবং রাজের ‘অনুপস্থিতি’ নিয়ে তৃণমূলের অন্দরে গুঞ্জন শুরু হয়েছে। দু’জনেই অবশ্য অনুপস্থিতির কারণ জানিয়েছেন। প্রাক্তন মন্ত্রী মদন বলেছেন, তিনি ওই কর্মসূচির কথা জানতেনই না। রাজ জানিয়েছেন, তিনি কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের বৈঠকে ব্যস্ত ছিলেন। তবে সম্প্রতি রাজকে রেড রোডে দুর্গাপুজোর কার্নিভালে মূল মঞ্চে দেখা যায়নি। তাঁকে দেখা যায়নি আলিপুর জেল মিউ়জ়িয়ামে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিজয়া সম্মিলনীতেও। সাধারণত অবামপন্থী দলে বড় নেতানেত্রীদের কর্মসূচিতে তাঁদের আশপাশে কারা রইলেন, কারা রইলেন না, তা দেখে সেই দলের অভ্যন্তরীণ সমীকরণ বোঝার চেষ্টা করা হয়। এ ক্ষেত্রেও সেই জল্পনা রয়েছে শাসকদলের অন্দরে। কিন্তু তার মধ্যে কতটা সারবত্তা রয়েছে, তা নিয়ে প্রকাশ্যে কেউই মুখ খুলতে রাজি নন।

প্রসঙ্গত, নৈহাটির বড় মায়ের পুজো এ বার ১০০ বছরে পদার্পণ করল। নবনির্মিত মন্দির উদ্বোধনের সময়েই অভিষেককে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন আয়োজকেরা। কিন্তু সেই সময়ে তিনি যেতে পারেননি। কথা দিয়েছিলেন, পরে যাবেন। মঙ্গলবার সেই কথাই রাখলেন অভিষেক। প্রথমে বড় মায়ের মূর্তির সামনে পুজো দেন ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ। তার পর মায়ের কষ্টিপাথরের মূর্তির সামনে গিয়ে পুজোয় বসেন।

অন্য বিষয়গুলি:

Abhishek Banerjee TMC Naihati
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE