Advertisement
E-Paper

‘বার বারই ফালতু কেসে ফাঁসিয়ে দিত’! জয়নগরের তৃণমূল নেতা সইফুদ্দিনকে খুন কি তার বদলা নিতেই?

সোমবার সকালে জয়নগরের তৃণমূল নেতা সইফুদ্দিন লস্কর বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন মসজিদ যাবেন বলে। নমাজ পড়তে যাওয়ার পথেই গুলিবিদ্ধ হন তিনি। মৃত্যু হয় তাঁর। এর পর থেকেই অশান্ত হয়ে উঠেছে জয়নগর।

TMC leader Saifuddin Laskar killed to taked revenge, claims sources

(বাঁ দিকে) জয়নগরের নিহত তৃণমূল নেতা সইফুদ্দিন লস্কর। (ডান দিকে) লস্করপাড়ায় পুড়ে যাওয়া বাড়ি। —ফাইল চিত্র ।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৪ নভেম্বর ২০২৩ ১৯:৩৮
Share
Save

বদলা নিতেই খুন করা হয়েছে জয়নগরের তৃণমূল নেতা সইফুদ্দিন লস্করকে! ধৃত শাহরুল শেখকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এমন তথ্যই জানতে পেরেছে পুলিশ। তদন্তকারীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, খুন হওয়া সইফুদ্দিনের সঙ্গে আগেই কয়েক জন অভিযুক্তের চেনাজানা ছিল। তদন্তকারীদের ওই অংশের দাবি, ধৃত শাহরুল পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন, তাঁদের বেশ কয়েক বার মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। এবং সেটা হয়েছে সইফুদ্দিনের অঙ্গুলিহেলনে। পুলিশ সূত্রেও খবর, অভিযুক্তদের বিভিন্ন সময়ে ফৌজদারি মামলায় ফাঁসিয়ে ছিলেন সইফুদ্দিন। আর তার বদলা নিতেই সইফুদ্দিনকে খুন করা হয়ে থাকতে পারে বলে প্রাথমিক তদন্তে মনে করছেন তদন্তকারীদের একাংশ।

সোমবার সকালে জয়নগরের তৃণমূল নেতা সইফুদ্দিন লস্কর বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন মসজিদ যাবেন বলে। নমাজ পড়তে যাওয়ার পথেই গুলিবিদ্ধ হন তিনি। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার আগেই মৃত্যু হয়। এর পর থেকেই অশান্ত হয়ে উঠেছে জয়নগর। তৃণমূল নেতা খুনের পরে সাহাবুদ্দিন নামে এক অভিযুক্তকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ উঠেছে। অন্য দিকে, সইফুদ্দিন খুনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে সোমবার পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন শাহরুল শেখ নামের এক যুবক। মৃত সাহাবুদ্দিনের বাড়ি জয়নগরের গোদাবর এলাকায়। সাহাবুদ্দিন দর্জির কাজ করতেন।

শাহরুলও অন্য সময়ে সেলাইয়ের কাজ করতেন। সেই সূত্রেই দু’জনের আলাপ। শাহরুলের দাবি, সইফুদ্দিনকে লক্ষ্য করে তিনি গুলি চালাননি। গুলি চালিয়েছিলেন সাহাবুদ্দিন। আর পুরোটাই হয়েছিল নাসির নামে তৃতীয় এক ব্যক্তির নির্দেশে। মঙ্গলবার বারুইপুর আদালত থেকে বেরোনোর সময় শাহরুল বলেন, ‘‘নাসির খুন করার অর্ডার দিয়েছিলেন।’’ কে সেই নাসির? শাহরুল শুধু বলেন, ‘‘বড়ভাই।’’ কার ‘বড়ভাই’, তা অবশ্য জানাননি তিনি। শাহরুল বার বার দাবি করেন, ‘‘আমি গুলি চালাইনি। চালিয়েছে সাহাবুদ্দিন।’’ তবে সইফুদ্দিন খুনের সঙ্গে জড়িত এই তৃতীয় চরিত্র নাসির কে, তা পুলিশের কাছে এখনও স্পষ্ট নয়।

তদন্তকারীদের একাংশ মনে করছেন, সইফুদ্দিন খুনের মূল মাথা এই নাসিরই। নাসির-সহ বাকি অভিযুক্তদের নাকি একাধিক বার ফৌজদারি মামলায় ফাঁসিয়ে ছিলেন জয়নগরের ‘প্রভাবশালী’ তৃণমূল নেতা সইফুদ্দিন। মাঝেমধ্যে ফাঁসানোর হুমকিও দেওয়া হত। আর সেই সময় থেকেই সইফুদ্দিনের উপর চাপা রাগ ছিল নাসিরদের। আর সেই বদলার মনোভাব থেকেই সইফুদ্দিন খুন হয়েছেন বলে সূত্রের খবর।

শাহরুলকে জেরা করে পুলিশ জানতে পেরেছে, সইফুদ্দিন কখন, কোথায় যান, তাঁর গতিবিধির উপর নজর রাখতছিলেন তিনি। সে কারণেই জয়নগরের বামনগাছির যে জায়গায় সইফুদ্দিনের বাড়ি, তার একটু দূরেই কয়েক দিন ধরে থাকছিলেন তিনি। শাহরুল আদতে ডায়মন্ড হারবারের নেতড়ার বাসিন্দা। পুলিশ সূত্রে খবর, বছর তেইশের শাহরুল দর্জির কাজ করার পাশাপাশি চুরি-ছিনতাইয়ের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। পুলিশের খাতায় আগেও তাঁর নাম উঠেছে।

তদন্তকারীদের একাংশের দাবি, পুলিশি জেরায় শাহরুল জানিয়েছেন, তিনি ‘নতুন কাজের বরাত’ পান কিছু দিন আগে। তাঁকে বলা হয়, একটি ‘চুরির কাজ’ আছে। তাই একটি বাড়িতে নজর রাখতে হবে। রাজি হয়ে যান ওই যুবক। তার পর তিনি চলে আসেন বামনগাছি এলাকায়। সোমবার তৃণমূল নেতাকে গুলি করে খুনের সময় তিনিও ছিলেন। পুলিশের দাবি, শাহরুলই খবর দিতেন যে, কখন নমাজ পড়তে মসজিদে যান সইফুদ্দিন। তাঁর কথা মতোই ‘অপারেশন’-এর সময় ঠিক করে নেওয়া হয়েছিল।

জয়নগরের ‘প্রভাবশালী’ তৃণমূল নেতা খুনের পিছনে যে ভাড়াটে খুনি রয়েছে, তা আগেই আন্দাজ করেছেন তদন্তকারীদের একাংশ। আততায়ীদের গুলি করার দিনক্ষণ এবং অপারেশনের ধরন দেখে তদন্তকারীদের অনুমান, খুনের নেপথ্যে কোনও ‘পাকা মাথা’ রয়েছে। তবে এই ‘পাকা মাথা’ যে নাসেরই, তা এখনও খোলসা করেনি পুলিশ। সূত্রের খবর, তদন্তকারীরা এ-ও জানতে পেরেছেন, ওই খুনে এক লক্ষ টাকা সুপারি দেওয়া হয়েছিল। সেই ভাড়াটে খুনিদের খোঁজ চলছে। এখনও পর্যন্ত তৃণমূল নেতা খুনের ঘটনায় দু’জনের হদিস পাওয়া যায়নি বলে জানাচ্ছে পুলিশ।

Joynagar Murder Tmc Leader

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।