গ্রাফিক— সনৎ সিংহ
বিজেপির শুভেন্দু অধিকারী এখন শেখ শাহজাহানের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে গলা ফাটালেও এক কালে তাঁদের দু’জনকে একসঙ্গে এক ফ্রেমে দেখা যেত! রবিবার এমনই জানালেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর প্রশ্ন, ‘‘তখন শুভেন্দু শাহজাহানকে নিয়ে কিছু বলেননি কেন?’’
রাজ্যের বিধানসভার বিরোধী দলনেতা তথা একদা অভিষেকের দলীয় সতীর্থ শুভেন্দুকে নিয়ে এই প্রশ্ন করলেও, অবশ্য উত্তরও দিয়েছেন অভিষেকই। তৃণমূলের সেনাপতি বলেছেন, ‘‘ধরে নিচ্ছি, তৃণমূলে ছিলেন, তাই বলেননি। কুড়িতে আপনি বিজেপিতে জয়েন করেছেন। একুশে কেন বলেননি? বাইশে কেন বলেননি? তেইশে কেন বলেননি? কেন বলেননি?’’
রবিবার নিজের ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্রের মহেশতলায় দু’টি প্রকল্পের উদ্বোধনে গিয়েছিলেন অভিষেক। সেখানেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সন্দেশখালি সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাব দেন তিনি। সেখানেই উঠে আসে বিধানসভার বিরোধী দলনেতা তথা একদা অভিষেকের দলীয় সতীর্থ শুভেন্দুর নাম। অভিষেক বলেন, ‘‘এখন এক দিন শুভেন্দু, এক দিন সুকান্ত মজুমদার সন্দেশখালি যাচ্ছেন। কারণ, দিল্লি থেকে নির্দেশ এসেছে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ৮ তারিখ আসছেন, ইস্যু যেন বেঁচে থাকে। আমার প্রশ্ন, এঁরা এত দিন কেন চুপ করে ছিলেন?’’
অভিষেকের যুক্তি, সন্দেশখালির তৃণমূল নেতা শাহজাহানকে শুভেন্দুর সঙ্গে একত্রে দেখা গিয়েছে বহু বার। অভিষেক বলেছেন, ‘‘আপনি দেখুন না, সংবাদমাধ্যমে, গণমাধ্যমে সোশ্যাল মিডিয়ায় একাধিক ছবি পাবেন শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে শেখ শাহজাহানের।’’ এর পরেই বিরোধী দলনেতার নাম না করে অভিষেকের প্রশ্ন, ‘‘তখন কেন বলেননি ? আমার প্রশ্ন। আমি জানতে চাই।’’ মুখে না বললেও অভিষেকের প্রশ্নে স্পষ্ট, বিরোধীরা লোকসভা ভোটের ইস্যু বানাতেই এখন শাহজাহানকে নিয়ে কথা বলছেন বলে মনে করছেন তিনি।
তবে একা শুভেন্দু নন, সন্দেশখালির প্রশ্নে রাম-বামকে এক বন্ধনিতে রেখে প্রশ্ন করেছেন অভিষেক। সিপিএমের উদ্দেশে তাঁর প্রশ্ন, ‘‘২০১৬ পর্যন্ত তো ওই আসন তো সিপিএমের ছিল। ২০১৬ অবধি সিপিএমের বিধায়ক ছিলেন ওখানে। ছিলেন বিজেপির নেতারাও। বিকাশ সর্দার, নিরাপদ সরকার কেন প্রকাশ্যে কথা বলেননি এ নিয়ে। আর আজ শুভেন্দু, সুকান্ত বলছেন, শেখ শাহজাহান!’’
অভিষেকের কথায়, ‘‘আমি প্রশ্ন করছি, নিরাপদ সরকার তো সন্দেশখালিতে থাকেন, বিকাশ সর্দার তো সন্দেশখালিতে থাকেন, তা তাঁরা চারটে সংবাদমাধ্যমকে ডেকে বা একটা চিঠি দিয়ে রাজ্য প্রশাসনকে জানাননি কেন? বা ডেকে বলেননি কেন? কেন এই পদক্ষেপ আগে করা হয়নি?’’ উল্লেখ্য, সন্দেশখালি নিয়ে বিজেপি এবং সিপিএমের নেতাদের এই নীরব থাকা নিয়ে আগেই প্রশ্ন তুলেছিল তৃণমূল। দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষও এই একই কথা বলে প্রশ্ন তুলেছিলেন, ‘‘মহিলারা নয়, ভয় পেয়ে বলেননি! বিজেপি আর সিপিএমের নেতারা কিসের ভয় পেয়েছিলেন?’’ অভিষেকের কথাতেও রবিবার সেই একই সুর শোনা গেল।
রবিবার বিরোধীদের সরাসরি সন্দেশখালি নিয়ে সতর্ক করে অভিষেক বলেছেন, ‘‘কেউ যদি ভাবেন, আগুন লাগিয়ে, অশান্তি তৈরি করে, বিভ্রান্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করে, চারিদিকে মিথ্যা কথা বলে, বিভাজন-বৈষম্য তৈরি করে রাজনৈতিক ফয়দা লুটবেন, তবে মানুষ এর বিরুদ্ধে জবাব দেবে।’’ নাম না করে বিরোধীদের কটাক্ষের সুরেই অভিষেক ২০২১ সালের ভোটের ফলাফলের কথা মনে করিয়ে দিয়ে বলেছেন, ‘‘আসলে এরা ঠকে শেখে না। এরা ভাবে অন্যায় অবিচার করে বাংলাকে জোর জবরদস্তি দখল করবে। ২০২১ সালে সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। মানুষ ওদের জবাব দিয়েছেন। এ বারও এই ঘটনার প্রতিফলন ভোট বাক্সেই দেখতে পাবে ওরা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy