আগাম অনুমতি ছাড়া তাঁর স্ত্রী পাঠ্যবই লিখেছেন বলে সাসপেন্ড হয়েছেন আইসিএসই কাউন্সিলের সচিব জেরি অ্যারাথুন। এ বার নিজেরই লেখা বই পশ্চিমবঙ্গ প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (ডব্লিউবিইউটি)-এ পড়ানোর সুপারিশ করে বিতর্কে জড়িয়ে পড়লেন যাদবপুরের উপাচার্য অভিজিৎ চক্রবর্তী।
অভিজিৎবাবু ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বোর্ড অব স্টাডিজের সদস্য। কেন তাঁর লেখা বই ওই বিভাগের পাঠ্য ও ‘রেফারেন্স বুক’ হিসেবে ব্যবহারের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে, সেই প্রশ্ন তুলেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল বা শিক্ষা সংসদ। ওই সুপারিশ পুনর্বিবেচনার জন্য ফের বোর্ড অব স্টাডিজে পাঠানো হয়েছে। বোর্ড অব স্টাডিজ অবশ্য তার পরে আর কোনও বৈঠকে বসেনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিষয়ের বোর্ড অব স্টাডিজ সম্প্রতি ঢেলে সাজা হয়েছে। আগের সদস্যদের বাদ দিয়ে বোর্ডগুলি তৈরি হয়েছে অন্য বিশেষজ্ঞদের নিয়ে। সেই সূত্রেই ইলেকট্রিক্যালের বোর্ড অব স্টাডিজে এসেছেন অভিজিৎবাবু। বিভিন্ন সেমেস্টারের পাঠ্যক্রম কী হবে, কোন কোন বই পড়তে হবে, রেফারেন্স হিসেবেই বা কোনগুলি পড়ুয়ারা ব্যবহার করবেন, তা উল্লেখ করে সুপারিশ পাঠানো হয় শিক্ষা সংসদে। সেখানে ‘বেসিক ইলেকট্রিক্যাল’-এর পাঠ্য হিসেবে প্রথমেই সুপারিশ করা হয়েছে অভিজিৎবাবুর লেখা একটি বই। তার নাম ‘বেসিক ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং’। অভিজিৎবাবু এবং অন্য দু’জন যৌথ ভাবে বইটি লিখেছেন। ওই বিষয়ে রেফারেন্স বই হিসেবেও আছে অভিজিৎবাবুর লেখা একই নামের একটি বই।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, অভিজিৎবাবুর লেখা বই আগে পড়ানো হলেও বিগত কয়েক বছরে সেটি আর পাঠ্য-তালিকায় রাখা হয়নি। বিশেষত যে-রেফারেন্স বইয়ের সুপারিশ নিয়ে বিতর্ক, সেটির ব্যাপারে বছর দুয়েক আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে সরাসরি আপত্তি জানানো হয়েছিল। শিক্ষা সংসদের এক সদস্য জানান, প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পরীক্ষার প্রশ্নোত্তর আছে ওই বইয়ে। এই ধরনের বই না-ছাপার কথাও বছর দুয়েক আগে প্রকাশকদের জানিয়ে দিয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয়। এই সব বই পড়লে পাঠ্যবই খুঁটিয়ে না-পড়ার প্রবণতা বাড়ে বলেই আপত্তি জানিয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষ।
বিভিন্ন সময়ে বোর্ড অব স্টাডিজের সদস্য ছিলেন, এমন প্রবীণ শিক্ষকেরা জানাচ্ছেন, নিজেদের লেখা বই বোর্ড অব স্টাডিজের সদস্যেরা সুপারিশ করতেই পারেন। কিন্তু সেই সঙ্গে মানে-বইয়ের ধাঁচে লেখা প্রশ্নোত্তর বইয়ের সুপারিশ করার নজির প্রায় নেই।
অভিজিৎবাবু অবশ্য মনে করেন না, তিনি বিতর্ক উস্কে দেওয়ার মতো কোনও কাজ করেছেন। ওই উপাচার্যের কথায়, “সারা দেশে ছাত্রছাত্রীরা আমার লেখা বই পড়ে। ডব্লিউবিইউটি-তেও এই বই পড়ানো হয়েছে।” প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার রফিকুল ইসলাম এই বিষয়ে কোনও কথাই বলতে চাননি। উপাচার্য রঞ্জন ভট্টাচার্য ফোন ধরেননি। তাঁকে এসএমএস করেও জবাব মেলেনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy