হাসপাতালে ঠিকাদার-দৌরাত্ম্য। প্রতীকী ছবি।
ভুয়ো বিল না মেটানোয় খুনের হুমকি দিচ্ছেন ঠিকাদার— মাসখানেক আগে এই অভিযোগ করেছিলেন হাসপাতালের সুপার। এখনও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তারই মধ্যে, হাসপাতালে ঠিকাদার-দৌরাত্ম্যের অভিযোগে সমাজ-মাধ্যমে সরব হলেন পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের সুপার শেখ সৌভিক আলম। ওই ঠিকাদারকে প্রশ্রয় দিলে হাসপাতালে উন্নয়ন সম্ভব নয় বলে দাবি তাঁর। তৃণমূলের মদতেই ঠিকাদার-রাজ চলছে, দাবি বিরোধীদের। তৃণমূল মানতে নারাজ।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছর রোগীকল্যাণ সমিতি ৮১টি ভুয়ো বিল চিহ্নিত করে ওই ঠিকাদারকে শো-কজ় করে। বিষয়টি আদালতে গড়িয়েছে। সম্প্রতি সুপার অভিযোগ করেন, প্রায় পৌনে এক কোটি টাকার ওই বিল মেটানোর জন্য তাঁকে ফোন করে হুমকি দেন ঠিকাদার। পুলিশে অভিযোগ করা হয়। আদালতে পাল্টা অভিযোগ করেন ওই ঠিকাদার।
বুধবার সমাজ-মাধ্যমে সুপার লেখেন, ‘প্রায় পাঁচ মাস হল কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে সুপার পদে যোগ দিয়েছি। ইচ্ছে ছিল এবং এখনও ইচ্ছে আছে হাসপাতালের চিকিৎসার মান বাড়াব। এই অল্প দিনের মধ্যে যেটা বুঝেছি, এখানে মনপ্রাণ এক বিশেষ ঠিকাদারকে না দিয়ে হাসপাতালকে দিলে সব কাজেই বাধা আসে।’ তাঁর অভিযোগ— বেশির ভাগ দিনই কাটে বকেয়া বিল নিয়ে আইনি জটিলতা সামলাতে। হাসপাতাল ঋণে জর্জরিত হয়ে পড়েছে। যে কোনও কাজে বাধা দেন ওই ঠিকাদার। হাসপাতালে গোলমাল পাকানো, সমাজ-মাধ্যমে বদনাম করার চেষ্টাও করেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর পঁয়ত্রিশের ওই ঠিকাদারের বাড়ি হাসপাতালের গায়েই। চা, ওষুধের দোকানের পরে বছর পাঁচেক ধরে হাসপাতালে ওষুধ সরবরাহের বরাত পাচ্ছেন। তাঁর অ্যাম্বুল্যান্সও রয়েছে। অতীতে হাসপাতালের অনুষ্ঠানে খাবার সরবরাহের বরাতও পেতেন। খাবারের বিপুল বিল নিয়ে প্রশ্ন ওঠায়, তদন্ত চলছে। সরাসরি রাজনীতিতে যুক্ত না থাকলেও, বিভিন্ন নেতার সঙ্গে তিনি ঘনিষ্ঠতা রেখে চলেন বলে এলাকাবাসীর একাংশের দাবি। সুপার বলেন, “ওই ঠিকাদারের হুমকি ও কার্যকলাপে আমি চিন্তিত ও মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত।’’
বিজেপির জেলা (কাটোয়া সাংগঠনিক) সভাপতি গোপাল চট্টোপাধ্যায়ের অভিযোগ, “ওই ঠিকাদার তৃণমূলের কোনও নেতার ছত্রছায়ায় না থাকলে, হাসপাতালে দাপট দেখানোর সাহস পান কোথা থেকে!’’ হাসপাতালের রোগীকল্যাণ সমিতির সদস্য তথা কাটোয়ার তৃণমূল বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় অবশ্য দলের সঙ্গে ওই ঠিকাদারের যোগের অভিযোগ উড়িয়ে বলেন, “সুপারের সঙ্গে কথা বলব। ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে অভিযোগ করা হয়েছে।’’ এ দিন চেষ্টা করেও ওই ঠিকাদারের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। পুলিশ জানায়, তাঁর বিরুদ্ধে হুমকির অভিযোগের তদন্ত চলছে। বিষয়টি এখন বিচারাধীন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy