মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
তিনি নিজে বলেছেন, ‘‘চেয়ারকে কেয়ার করি না।’’ কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই প্রধানমন্ত্রী চেয়ে লোকসভার ভোট প্রচারে নামতে চাইছে তৃণমূল কংগ্রেসের একাংশ। দলের সমাজমাধ্যম প্রচার সংগঠনের একটি সভায় রবিবার এই দাবিই সামনে এসেছে। সভায় উপস্থিত ছিলেন তৃণমূলের একাধিক নেতা-মন্ত্রী। এমন দাবি ওঠা মাত্রই প্রতিক্রিয়া এসেছে অন্যান্য দলের তরফে। দেশ ও দুনিয়ার দিকে মন দিতে গিয়ে মমতা বাংলাকে ‘অন্ধকারে’ ঠেলে দিচ্ছেন বলে কটাক্ষ করেছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জগৎ প্রকাশ নড্ডা।
‘ইন্ডিয়া’-র প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী কে? বিজেপির এই প্রশ্নের মুখে জোটের নেতৃত্ব বলেছেন, সময় তা ঠিক করে দেবে। কংগ্রেস বা তৃণমূলের মতো একাধিক দলই বলেছে, প্রধানমন্ত্রী পদ তাদের লক্ষ্য নয়। তাদের লক্ষ্য বিজেপিকে ক্ষমতাচ্যুত করা। লোকসভা ভোটকে সামনে রেখে এই চর্চার মধ্যেই এ দিন প্রধানমন্ত্রী পদে মমতার নামই সামনে নিয়ে এসেছে তৃণমূলের একাংশ। উত্তম মঞ্চে দলের সমাজমাধ্যম প্রচার সংগঠন ‘ফ্যাম’-এর সভায় রাজ্য তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘রাজ্যে সর্বোচ্চ সংখ্যায় আসন পেতে আমাদের এই প্রচারে যেতে হবে। কারণ, এ রাজ্যের মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বের উপরেই আস্থা রাখেন। সর্বোচ্চ শক্তি নিয়েই দিল্লির দরবারে তৃণমূলকে হাজির করতে হবে।’’ কুণালের এই দাবিকে সমর্থন করেছেন সভায় উপস্থিত মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, অরূপ বিশ্বাস, দলের শ্রমিক সংগঠনের নেতা ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়েরা।
কিন্তু জোট প্রক্রিয়া দানা বাঁধার আগেই তৃণমূলের এই দাবি কি তাতে ভিন্ন মাত্রা যোগ করবে না? কুণালের ব্যাখ্যা, ‘‘দলগত ভাবে এটা কোনও দাবি নয়। আমরা এখানে তৃণমূলের হাতে সব থেকে বেশি আসন সংগ্রহ করতে চাই।’’ সেই সঙ্গেই তাঁর মন্তব্য, ‘‘প্রধানমন্ত্রিত্ব নিয়ে আলোচনাতেও বিরোধী জোটে মমতাই যোগ্যতম। যে অঙ্কে সিপিএমের সামনে সুযোগ এসেছিল জ্যোতি বসুকে প্রধানমন্ত্রী করার, সেই অভিজ্ঞতার হিসেবেই তৃণমূলের সামনে এই সুযোগ আসবে।’’ এ ছাড়াও, দলের সমাজমাধ্যমে তৃণমূলের ভাল কাজের পাশাপাশি বাম আমলের কথাও তুলে ধরতে বলা হয়েছে।
ঘটনাচক্রে, এ দিনই কলকাতায় দলীয় বৈঠকে বিজেপি সভাপতি নড্ডা কটাক্ষ করেছেন, ‘‘আমাদের দুর্ভাগ্য যে, দিদি দুনিয়াকে দিশা দিতে গিয়ে বাংলাকে অন্ধকারে ঠেলে দিচ্ছেন! দিদি, আপনি বরং বাংলার দিকে মন দিন!’’ তাঁর দাবি, ‘‘সত্যের জয় হবেই। গণতান্ত্রিক লড়াইয়ে আমরা আপনাকে পরাজিত করব।’’
এক্স হ্যান্ডলে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্য, ‘‘বিশেষ ২৬-এর ‘ইন্ডিয়া’-য় প্রধানমন্ত্রী পদের প্রথম দাবিদার রিং-এ নেমে পড়লেন! বিরোধী জোটে প্রধানমন্ত্রিত্বের অন্য দাবিদারেরা ব্যাপারটা কী ভাবে হজম করবেন, দেখতে হবে!’’ তাঁর আরও মন্তব্য, ‘‘অ্যাকশন শুরু! পপকর্ন নিয়ে বসে পড়ুন, ছোরা-ছুরি আরও বেরোল বলে!’’
সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর প্রতিক্রিয়া, ‘‘রাহুল গান্ধী প্রধানমন্ত্রী হবেন, এই কথা কিন্তু কংগ্রেস বলেনি। তৃণমূলের নেতারা বলছেন কার কথায়? নেত্রীর কথায়। নেত্রী বলছেন কার কথায়? আরএসএসের কথায়! নাগপুরের আরএসএস চায়, বিজেপি যদি টেকে, টিকল। না হলে একটা বিকল্প থাক।’’ ধূপগুড়িতে এ দিন তাঁর আরও মন্তব্য, ‘‘বিজেপির কাছে এটা বিকল্প হতে পারে, ‘ইন্ডিয়া’র কাছে নয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy