—প্রতীকী ছবি।
নবনির্বাচিত গ্রাম পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠনে দলের অন্দরের বিশৃঙ্খলায় ‘সিঁদুরে মেঘ’ দেখছে তৃণমূল কংগ্রেসের একাংশ। সংখ্যায় কম হলেও দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করা বা নিজেদের মতো পদাধিকারী স্থির করে নেওয়ার প্রবণতায় এই আশঙ্কা তৈরি হয়েছে শাসক দলের অন্দরে। এই প্রবণতার জন্য প্রাথমিক ভাবে বোর্ড গঠনে দলের সঙ্গে সমন্বয়ের অভাবকেই চিহ্নিত করা হচ্ছে। সেই সূ্ত্রেই নতুন বোর্ডের কাজকর্ম নজরে রাখার যে সিদ্ধান্ত দল নিয়েছিল, সংশয়ের সূত্রপাত হয়েছে তা নিয়েও।
ভোট গণনার পর থেকেই পঞ্চায়েত গঠন নিয়ে সমন্বয়ের অভাব তৈরি হয়েছিল তৃণমূলের অন্দরে। বিচ্ছিন্ন ভাবে কোথাও কোথাও দলের পরামর্শদাতা সংস্থা বার্তা পাঠালেও সাধারণ ভাবে এ নিয়ে কোনও নির্দেশ বা পরামর্শ দেননি তৃণমূল নেতৃত্ব। সেই ফাঁকেই দলের নির্বাচিত সদস্যদের ভাবনার একাংশ ‘এলোমেলো’ হয়ে গিয়েছে বলে মনে করছেন তৃণমূলের একাধিক জেলার নেতারা। তাঁদের মতে, নির্বাচিত সদস্যদের অন্য একটি অংশ এই সময়ে নিজেদের পছন্দ-অপছন্দের হিসেব কষতে শুরু করেন। ফলে, প্রধান পদ বাছাই নিয়ে তলায় তলায় নানা অনিয়মের অভিযোগ সামনে আসতে শুরু করে।
শুধু গোষ্ঠী সক্রিয়তাই নয়, একাধিক জেলায় প্রধান বাছাইয়ে দলের অন্দরে টাকা-পয়সার লেনদেন নিয়েও অভিযোগ এসেছে জেলার নেতাদের কাছে। রাজ্য দলের এক নেতার কথায়, ‘‘গ্রাম পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠনে সাধারণ ভাবে কোনও নিয়ন্ত্রণ না থাকায় এই রকম কিছু অনিয়ম হয়েছে। রাজ্য নেতৃত্ব নিশ্চিত ব্যবস্থা নেবে।’’
এ বারের পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রচারে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই রাজ্য স্তরের প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক নজরদারির ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও ‘অনিয়ম ও অস্বচ্ছতা’ বন্ধে নতুন বোর্ডে নিয়মিত মূল্যায়নের ঘোষণা করেছিলেন। এই প্রেক্ষিতে একেবারে নীচের তলার বোর্ড গঠনের প্রক্রিয়া যে ভাবে এগোচ্ছে, তাতে সেই ঘোষণা নিয়েই সংশয় তৈরি হয়েছে দলের অন্দরে।
দক্ষিণবঙ্গের এক জেলা সভাপতির কথায়, ‘‘যে ভাবে প্রার্থী বাছাইয়ের রাশ নেতৃত্বের হাতে ছিল, বোর্ড গঠনের ক্ষেত্রেও তা করা উচিত ছিল। কিছু জায়গায় পরামর্শদাতা সংস্থা সুপারিশ করেছে ঠিকই, কিন্তু দলের রাশ আলগা থাকায় তার বেশ কিছু কার্যকর করা সম্ভব হয়নি।’’
প্রধান পদে পছন্দের লোককে বসাতে কোথাও কোথাও দলের স্থানীয় নেতার ‘নজরবন্দি’ থাকতে হয়েছে দলেরই সদস্যদের। কোথাও কোথাও প্রধান বা উপ-প্রধান বাছাইয়ে তাঁদের মতের তোয়াক্কা করা হয়নি বলে অভিযোগ করছেন শাসক দলের জয়ী সদস্যেরাই। একই কারণে বেশ কিছু জায়গায় দলের সদস্যেরা বিরোধীদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন, এমন প্রমাণও ইতিমধ্যেই রাজ্য নেতাদের হাতে এসেছে। এ সবের মধ্যে পরামর্শদাতা সংস্থার ‘অবাস্তব পরামর্শ’ নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে কোনও কোনও জেলায়।
সর্বত্র এই অনিয়ম বা বেপরোয়া মনোভাব দেখা গিয়েছে, তা নয়। তবে রাজ্য নেতৃত্বের একাংশের ধারণা, পছন্দ-অপছন্দের পিছনে ব্যক্তিস্বার্থ কাজ করায় বিষয়টি পরবর্তী কালে আরও বড় চেহারা নিতে পারে। সে ক্ষেত্রে টাকা-পয়সার লেনদেন নিয়ে বিরোধ তৈরি হলে তা দুশ্চিন্তায় ফেলতে পারে নেতৃত্বকে। দলেরই অনেকে প্রশ্ন তুলছেন, টাকা দিয়ে পদ নেওয়া প্রধান কী ভাবে স্বচ্ছতা আর নিয়ম মেনে চলবেন?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy