Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Cyclone Yaas

ঘোড়ামারা দ্বীপে পেটের অসুখ, দিতে হচ্ছে স্যালাইন

অসুস্থতা নিয়ে কয়েক জন কাকদ্বীপ ও সাগরে চলে গিয়েছেন। কেউ আছেন আত্মীয়ের বাড়িতে, কেউ সরকারি শিবিরে।

এক অসুস্থকে স্যালাইন দেওয়া হচ্ছে। ঘোড়ামারা দ্বীপে।

এক অসুস্থকে স্যালাইন দেওয়া হচ্ছে। ঘোড়ামারা দ্বীপে। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ৩১ মে ২০২১ ০৪:৫১
Share: Save:

এক দিকে জমা জলের দূষণ, অন্য দিকে পানীয় জলের অভাব। এই দুইয়ে এ বার ডায়েরিয়া ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে সুন্দরবনের ঘোড়ামারা দ্বীপে। গত ৪৮ ঘণ্টায় বেশ কয়েক জনের সেই উপসর্গও দেখা দিয়েছে। হাতের কাছে থাকা সাধারণ কিছু ওষুধ দেওয়া হয়েছে। বেশ কয়েক জনকে স্যালাইনও দিতে হয়েছে।

চার দিকে জল। কিন্তু সে জল যাবে না ছোঁয়া। বরং কখন তা সরবে, সে দিকেই তাকিয়ে আছেন দ্বীপে আটকে থাকা মানুষ। কারণ সে জলে ভাঙা গাছপালা, গবাদিপশু আর মাছ মরে পচে রয়েছে। ফলে দূষণ ছড়াচ্ছে। জলোচ্ছ্বাসে বহু জায়গায় পানীয় জলের টিউবওয়েলও নষ্ট হয়ে গিয়েছে। সেই জল কোনওক্রমে পেটে গেলে অসুখ ছড়াতে পারে। তাই খাবারের সঙ্গে আরও বেশি করে পানীয় জলের জোগান চাইছেন স্থানীয়রা। ঘোড়ামারা পঞ্চায়েতের প্রধান সঞ্জীব সাগর রবিবার মোবাইল ফোনে বলেন, ‘‘এটা প্রাথমিক প্রয়োজন। যথেষ্ট পানীয় জলের ব্যবস্থা করতে হবে। আমরা মানুষকে একটু সতর্ক থাকতে বলছি। দু’একজন অসুস্থ হয়েছেন। একবার জলবাহিত রোগ ছড়ালে সব হারানো মানুষ নতুন করে সমস্যায় পড়বেন।’’

অসুস্থতা নিয়ে কয়েক জন কাকদ্বীপ ও সাগরে চলে গিয়েছেন। কেউ আছেন আত্মীয়ের বাড়িতে, কেউ সরকারি শিবিরে। দ্বীপের স্বাস্থ্য পরিকাঠামো বলতে তেমন কিছু নেই। বেশির ভাগ মানুষই প্রয়োজনে কাকদ্বীপে এসে চিকিৎসা করান। দ্বীপের বাসিন্দা গ্রামীণ চিকিৎসক শম্ভু মান্না ও মানস কারক এখন এ সব দেখভাল করছেন। মন্দিরতলা নতুন বাজারে যে দোকানে শম্ভুবাবু বসতেন সেখানে এখনও বুক ছাড়ানো জল। মানসের ঘরবাড়ি ভেসে যাওয়ায় সপরিবার তিনিও ফ্লাড শেল্টারে। তার মধ্যেই গত দু’দিনে তিন জনকে স্যালাইন দিয়েছেন তাঁরা। ওষুধপত্র তেমন কিছু নেই। কিন্তু বিভিন্ন জায়গা থেকে পেটের অসুখের খবর আসতে শুরু করেছে তাঁদের কাছে।

ফোনে শম্ভুবাবু বলেন, ‘‘অনেকেরই বমি হচ্ছে। পেট ব্যথা, বারবার পায়খানাও হচ্ছে।’’ রবিবারও মন্দিরতলার বাসিন্দা রাধেশ্যাম পড়ুয়ার স্ত্রীর বমি-পায়খানা শুরু হয়। বাড়িতেই স্যালাইনের ব্যবস্থা করেন মানস। একই রকম সমস্যা হচ্ছে ত্রাণ শিবিরেও। এ দিন সকালে অসুস্থতা থাকায় দেবজিৎ মালি নামে বছর দশেকের একটি শিশুর শিবিরেই চিকিৎসা করেন গ্রামীণ চিকিৎসকেরাই। তবে তাঁদের হাতে ওষুধ বা অন্যান্য চিকিৎসার সরঞ্জাম পর্যাপ্ত নেই।

সরকারি তরফে কিছু খাদ্য সামগ্রী এসেছে। বেশ কিছু স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাও ইতিমধ্যেই ছোট ছোট দলে পানীয় জল ও অন্যান্য সামগ্রী নিয়ে পৌঁছেছে। সকালে মুড়ি, বিস্কুট আর বেলায় ভাত- তরকারিই এখন সার বেঁধে নিতে হচ্ছে ঘোড়ামারার মানুষকে। সরকারি ভাবে রান্না করা খাবার দেওয়া না গেলেও দু’একদিনের মধ্যে সকলের কাছেই খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দেওয়া যাবে বলে দাবি করেছেন ব্লক প্রশাসনের কর্তারা।

শনিবার সাগরে তছনছ হয়ে যাওয়া সুন্দরবনের ত্রাণ ও পুনর্গঠন জেলা প্রশাসনের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে ছিলেন ঘোড়ামারার পঞ্চায়েত প্রধান সঞ্জীবও। তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের বিধায়ক বঙ্কিম হাজরা (সাগরের) এখন সুন্দরবন উন্নয়নমন্ত্রী। তিনি এই দ্বীপের সমস্ত ক্ষয়ক্ষতির কথা জানেন। সরকারি তরফে প্রথমে ত্রাণের বিষয়টিতে জোর দেওয়া হচ্ছে। তার পর বাঁধ মেরামতির কাজ শুরু হয়ে যাবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Drinking Water Crisis Cyclone Yaas
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy