নোনা জলের সুন্দরবন এলাকায় বৃষ্টির জল ধরে রেখে নতুন প্রকল্প শুরু করতে চলেছে রাজ্য সরকার। যাবতীয় পরিকল্পনা সম্পন্ন করে সেই প্রকল্পের বরাদ্দ পেতে বিশ্ব ব্যাঙ্কের থেকেও সবুজ সঙ্কেত পেয়ে গিয়েছে নবান্ন। সেই প্রকল্প বাস্তবায়িত করতে কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমতির জন্য আবেদন জানিয়েছে রাজ্য। ‘ওয়াটার ইউজ়ার্স কমিটি’ নাম দিয়ে ওই প্রকল্পটি চালু করা হচ্ছে। এই প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে রাজ্যের জলসম্পদ উন্নয়ন দফতরকে। দফতরের শীর্ষ আধিকারিকেরা ওই কমিটিকে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেবেন। নেদারল্যান্ডসের একটি বিশেষজ্ঞ সংস্থা এই কাজে সহায়তা করবে বলে জানিয়েছেন দফতরের মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া। ইতিমধ্যে প্রকল্প বাস্তবায়িত করতে উত্তর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার অধীনে থাকা সুন্দরবনের ১১টি ব্লকের মধ্যে ৩৯টি দ্বীপকে চিহ্নিত করা হয়েছে।
আরও পড়ুন:
এই প্রকল্প শুরুর আগে জলসম্পদ উন্নয়ন দপ্তর সুন্দরবনের ওই ব্লকগুলিকে চিহ্নিত করে মজে যাওয়া খালগুলি পুনরুজ্জীবিত করেছে। বৃষ্টির জল ওই খালগুলিতে ধরে রেখে কৃষিকাজ-সহ আরও নানান আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের কাজ করা হবে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী। এই কাজে মোট খরচ হবে চার হাজার ১০০ কোটি টাকা। বিশ্ব ব্যাঙ্কের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে এই প্রকল্পের কাজ করবে রাজ্য সরকার। যেখানে রাজ্য সরকার খরচ করবে ৩০ শতাংশ অর্থ। বাকি ৭০ শতাংশ দেবে বিশ্ব ব্যাঙ্ক। জলসম্পদ উন্নয়ন দফতর সূত্রে খবর, এই কাজের জন্য রাজ্য সরকারের খরচ হতে পারে ১২৩০ কোটি টাকা। আপাতত সুন্দরবনের ব্লকগুলিতে এই প্রকল্পের কাজ শুরু করতে কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমোদন চাওয়া হয়েছে। তারা অনুমতি দিলেই এই প্রকল্পের কাজ শুরু হয়ে যাবে সুন্দরবনের প্রান্তিক জেলাগুলিতে। ওই ৩৯টি দ্বীপে মানুষ যাতে সুলভে পানীয় জল পেতে পারেন, সেই ভাবনাও অন্তর্ভুক্ত হয়েছে নতুন এই প্রকল্পে।
ধরে রাখা মিষ্টি জলে কৃষিকাজের পাশাপাশি মৎস্যচাষ, হর্টিকালচার উন্নয়নের কাজ হবে। এই প্রকল্পে সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ অরণ্য রক্ষা করার বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তবে এই প্রকল্পের অধীনে সুযোগ-সুবিধা পেতে গেলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে নিজের নাম সরকারি ভাবে নথিভুক্ত করাতে হবে। দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, গত বছর মধ্যপ্রদেশের ভোপালে জল নিয়ে যে জাতীয় স্তরের সম্মেলন হয়েছিল, তাতে রাজ্য সরকারের এই প্রকল্পের কথা তুলে ধরেছিল জলসম্পদ উন্নয়ন দফতর। সেখানেও রাজ্য সরকারের এই ভাবনাকে প্রশংসা করেছিলেন জাতীয় সম্মেলনের আয়োজকরা। এর পাশাপাশি আগামী কয়েক মাসের মধ্যে সুন্দরবন উন্নয়নে আরও একটি বড় প্রকল্প রাজ্য সরকার চালু করতে চলেছে বলেই নবান্ন সূত্রে খবর।