পোলিওর প্রকোপে পঙ্গু, চলতে পারেন না। তা বলে ব্যবসা চালাতে অসুবিধে হয় না তাঁর। দারিদ্র এবং প্রতিবন্ধকতার সঙ্গে লড়াই করে ৩৮ বছরের বিশ্বজিৎ মিদ্যা একজন সফল ব্যবসায়ী। তাঁর লড়াইকে মর্যাদা দিতে আজ, বুধবার, বিশ্ব প্রতিবন্ধী দিবসে তাঁকে সম্মান জানাচ্ছে মেদিনীপুর টাউন প্রতিবন্ধী কল্যাণ সমিতি।
পোলিও হয়ে পাঁচ বছর বয়সেই পা দু’টি সরু হয়ে যায়মেদিনীপুর শহরের দারিবাঁধের বাসিন্দা বিশ্বজিতের। কিন্তু তাঁর মনে আছে জেদ, আর হাতে জাদু। খেলার ছলে মাটির পুতুল, গয়না তৈরি শিখেছিলেন। সোনার গয়না তৈরির কাজ শিখতে চাইলেন, কিন্তু ব্যবসায়ীরা কাজে নিতে রাজি নন। দাঁড়িয়ে কাজ করতে হয় যন্ত্রে, বিশ্বজিৎ পারবেন কী করে? বিশ্বজিৎ কিন্তু হাঁটুতে ভর দিয়ে, কাঠের সাপোর্ট নিয়ে দাঁড়িয়ে সোনার গয়না তৈরির কাজ রপ্ত করে নিয়েছিলেন। সেই তাঁর রোজগারেরশুরু। এরপরমেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ-লাগোয়া একটি ফুটপাত ঘিরে ছোট্ট দোকান করে শুরু করেন ইমিটেশনের গয়না বিক্রি। নিজেই বানাতে শুরু করেন সেই সব গয়না। অন্যের থেকে কিনে বিক্রির চাইতে নিজে বানালে রোজগার হয় অনেকটা বেশি।
কিন্তু উৎসবের মরসুম ছাড়া নকল গয়নার বিক্রি তেমন ভাল নয়। তাই শুরু করেন দোকানে পান, সিগারেট, বিস্কুট রাখা। এ ভাবে নানা উপায়ে রোজগার বাড়িয়ে বিশ্বজিৎ প্রতিপালন করছেন বৃদ্ধ বাবা-মা, দুই সন্তান-সহ ছ’জনের সংসার। কারও মুখাপেক্ষী হয়ে থাকেননি।
পোলিওতে জখম পা, তা সত্ত্বেও যে ভাবে নিজের পায়ে দাঁড়াতে পেরেছেন বিশ্বজিৎবাবু, তাকে কুর্নিশ জানাচ্ছে প্রতিবন্ধী কল্যাণে তৈরি শহরের সংস্থাটি। যা তৈরি করেছেন প্রতিবন্ধী পরিবারের অভিভাবকেরা। সম্পাদক অলোক ঘোষের মেয়ে সেরিব্রাল পলসিতে আক্রান্ত। অলোকবাবুর কথায়, “প্রতিবন্ধীরা যাতে একটু সুস্থ স্বাভাবিক জীবন পেতে পারে, তার জন্য লড়াই চালাতেই সংস্থা তৈরি করি। বিশ্বজিতের মতো মানুষের লড়াইকে তুলে ধরতে পারলে অন্যরাও উৎসাহ পাবে। তাই তাঁকে সংবর্ধনা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy