Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

স্বাস্থ্যকর্তার পা জড়িয়ে ধরে কান্না আয়ার

শনিবার দুপুরে জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতাল চত্বরে দাঁড়িয়ে অনেকেই দেখলেন এই দৃশ্য। তখন রীতিমতো অস্বস্তিতে রাজ্যের স্বাস্থ্যকর্তারা।

আর্তি: জলপাইগুড়ি হাসপাতালে প্রিন্সিপাল সেক্রেটারির পা জড়িয়ে কাঁদছেন কাজ হারানো এক আয়া। —নিজস্ব চিত্র।

আর্তি: জলপাইগুড়ি হাসপাতালে প্রিন্সিপাল সেক্রেটারির পা জড়িয়ে কাঁদছেন কাজ হারানো এক আয়া। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০১৭ ০২:০৭
Share: Save:

হাসপাতাল পরিদর্শনে গিয়েছিলেন স্বাস্থ্য দফতরের প্রধান সচিব অনিল বর্মা৷ আচমকা সকলকে হকচকিয়ে দিয়ে প্রকাশ্যেই তাঁর পা জড়িয়ে ধরে কান্না জুড়ে দিলেন এক আয়া।

শনিবার দুপুরে জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতাল চত্বরে দাঁড়িয়ে অনেকেই দেখলেন এই দৃশ্য। তখন রীতিমতো অস্বস্তিতে রাজ্যের স্বাস্থ্যকর্তারা। ঘটনায় ক্ষুব্ধ অনিলকে ওই আয়ার উদ্দেশে বলতে শোনা যায়, “এখানে নাটক করবেন না!” পুলিশ ও প্রশাসনের কর্তারা দ্রুত গিয়ে ওই আয়াকে সরিয়ে
নিয়ে যান।

সম্প্রতি জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতাল থেকে তিনটি বিভাগকে সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখানে আয়া রাখার ব্যবস্থা নেই। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে বলা হয়েছে, সরকারি কোনও হাসপাতালেই আয়া রাখার ব্যবস্থা নেই। কিন্তু জেলা হাসপাতালগুলিতে ওঁরা রোগীর আত্মীয়দের উপরে চাপ তৈরি করেন। তখন ওই আত্মীয়রাই আয়া রাখতে বাধ্য হন।

সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে আয়া রাখার কোনও ব্যবস্থা না থাকায় জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতালে প্রায় পাঁচশো আয়া এই মুহূর্তে ‘কর্মহীন’। তাঁদের যাতে কাজের সুযোগ দেওয়া হয়, সেই দাবিতে এই আয়ারা এর মধ্যেই আন্দোলন শুরু করেছেন। এ দিন যিনি স্বাস্থ্য দফতরের প্রধান সচিবের পা জড়িয়ে ধরেন, সেই সাবিত্রী বিশ্বাসও তাঁদেরই এক জন।

এ দিন জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতালে ‘মাদার অ্যান্ড চাইল্ড হাব’ দেখতে এসেছিলেন স্বাস্থ্য পরিষেবার হাল খতিয়ে দেখতে অনিল বর্মার সঙ্গে ছিলেন
বিশেষ সচিব বিনোদ কুমার ও ডিরেক্টর অব হেল্থ সার্ভিস বিশ্বরঞ্জন শতপথী৷ খবর পেয়েই সেখানে যান আয়ারা৷ স্বাস্থ্যকর্তারা ‘মাদার অ্যান্ড চাইল্ড হাব’ থেকে বের হতেই তাঁদের ঘিরে ধরে নিজেদের সমস্যার কথা জানাতে চান আয়ারা৷
স্বাস্থ্যকর্তারা এগিয়ে যেতে গেলে সাবিত্রীদেবী জড়িয়ে ধরেন অনিল বর্মার পা। পরিস্থিতি সামলাতে সঙ্গে সঙ্গে এগিয়ে আসেন জেলাশাসক রচনা ভকত। তিনি এবং সেখানে হাজির পুলিশরা মিলে ওই মহিলাকে সরিয়ে দেন।

এই সময়ে অনিলকে বলতে শোনা যায়, ‘এখানে নাটক করবেন না।’ যা নিয়ে পরে ক্ষোভ জানান আয়ারা। অঞ্জলি বণিক ও দেবী দে নামে দুই আয়া বলেন, ‘‘উনি এক মিনিট দাড়িয়ে আমাদের সমস্যার কথা শুনলেন না। উল্টে এ সব বলে গেলেন। এটা মানা যায় না।’’
বিষয়টি নিয়ে পরে অনিলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনও মন্তব্য করতে চাননি৷ শুধু বলেন, ‘‘আমি এখানে স্বাস্থ্য দফতরের প্রশাসনিক বৈঠক ও কাজ নিয়ে বৈঠক করতে এসেছি৷’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE