উত্তর ২৪ পরগনার দত্তপুকুরে বিস্ফোরণের পরে পুলিশি অভিযানে উদ্ধার হওয়া ১৫০ টন নিষিদ্ধ বাজি নিষ্ক্রিয় করা হবে হলদিয়া পুর এলাকার শ্রীকৃষ্ণপুরের ‘পশ্চিমবঙ্গ বর্জ্য ব্যবস্থাপনা লিমিটেডে’।
বছরদুয়েক আগে পুলিশ নৈহাটিতে বেআইনি বাজি নিষ্ক্রিয় করতে গিয়ে জনরোষের মুখে পড়েছিল। অভিযোগ ছিল, বাজি নিষ্ক্রিয় করার সময়ে বিস্ফোরণের অভিঘাতে এলাকার বহু বাড়িতে ফাটল দেখা দিয়েছে। অথচ হলদিয়ায় হাজার হাজার টন বাজি নিষ্ক্রিয় করা হলেও স্থানীয় মানুষ জানতেই পারেন না। কেন? সংস্থা সূত্রের খবর, বিস্ফোরণ না ঘটিয়ে, শুধু রাসায়নিক ব্যবহার করে হলদিয়ায় বাজি নিষ্ক্রিয় করা হয়। বাজেয়াপ্ত বাজির নমুনা সেখানকার পরীক্ষাগারে পাঠিয়ে সিদ্ধান্ত হয়, নিষ্ক্রিয় করতে কী ধরনের রাসায়নিক মেশানো হবে।
সংস্থার এক আধিকারিক জানান, নিষ্ক্রিয় করার পদ্ধতিতে বায়ুমণ্ডল ও ভূগর্ভস্থ জল যাতে দূষিত না হয়, সেই দিকে বিশেষ নজর দেওয়া হয়। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে প্রথমে পুকুর খোঁড়া হয়। পুরু মাটির স্তরের উপর বিশেষ পদার্থ দিয়ে আচ্ছাদন তৈরি করা হয়। একই ভাবে তার উপরে আরও একটি আচ্ছাদন তৈরি করা হয়, যাতে প্রথম আচ্ছাদনে সমস্যা হলেও দ্বিতীয় আচ্ছাদন দূষণ রোধ করতে পারে। উদ্ধার হওয়া বাজির মশলার সঙ্গে মিশ্রিত রাসায়নিক টিলার আকার নিলে ফের তার উপরে ওই রকম আচ্ছাদন করা হয়। অর্থাৎ পুরো মিশ্রণটি দূষণ প্রতিরোধী ক্যাপসুলে আটকে থাকে। এই প্রক্রিয়া চলে বিরাট কারখানা চত্বরে। সূত্রের খবর, বাজি ছাড়াও কারখানার বর্জ্য, নার্কোটিক্স দফতরের বাজেয়াপ্ত করা হেরোইন, ব্রাউন সুগার, গাঁজা এখানে নষ্ট করা হয়। করোনা-বর্জ্যেরও শেষ ঠিকানা ছিল এই কারখানা।
এই পদ্ধতিতে কি দূষণ ছড়ায় না? রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের আধিকারিক শৌভিক গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বাজিতে ব্যবহৃত রাসায়নিকে দূষণ বৃদ্ধির আশঙ্কা থাকে। তবে হলদিয়ায় গর্ত খুঁড়ে বাজি নিষ্ক্রিয়করণের কাজে নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ায় দূষক আলাদা করা হবে। এতে দূষণের আশঙ্কা নেই।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)