গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসক পড়ুয়া খুনের ঘটনার তদন্তে যে সব তথ্য উঠে এসেছে, তা থেকে এক নৃশংসতার ছবি সামনে এসেছে। ধর্ষণ-খুনের রহস্যের কিনারা করতে গিয়ে পুলিশ ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করেছে এক জনকে। বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্যও হাতে পেয়েছেন তদন্তকারীরা। সেই সব তথ্যের নেপথ্যে স্পষ্ট অভিযুক্তের নৃশংস মানসিকতা। শনিবার আদালতে ঘটনার ভয়াবহয়তা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে সরকার পক্ষের আইনজীবী দিল্লির নির্ভয়া-কাণ্ডের প্রসঙ্গ টেনে আনলেন। এমনকি, অভিযুক্ত যদি দোষী প্রমাণিত হয়, তবে ফাঁসির আবেদনও করা হতে পারে বলে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে সরকারের তরফে। অভিযুক্তকে ১৪ দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন শিয়ালদহ আদালতের বিচারক। ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে তদন্তকারীদের আতশকাচের নীচে রয়েছে ধৃতের অতীত জীবনও। তদন্তকারীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, সেই অতীতও খুব একটা ‘সুবিধের’ নয় অভিযুক্ত যুবকের।
শুক্রবার আরজি করের মেডিক্যাল কলেজের চার তলায় সেমিনার হলে এক মহিলা চিকিৎসকের রক্তাক্ত, ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার হয়। সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুক্রবার থেকেই উত্তপ্ত রাজ্য-রাজনীতি। দোষীদের কঠোরতম শাস্তির দাবিতে সরব বিরোধীরা। শাসকদল তৃণমূলও ঘটনায় নিন্দা করে সঠিক তদন্তের পক্ষে সওয়াল করেছে। ঘটনার খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল। দোষীর শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন আরজি কর-সহ কলকাতা এবং রাজ্যের বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের চিকিৎসকেরা।
ঘটনাস্থলে সিসি ক্যামেরা না থাকলেও তার আশপাশে এবং হাসপাতাল চত্বরের সিসিটিভির বিভিন্ন ফুটেজ খতিয়ে দেখে শুক্রবার রাতেই এক সন্দেহভাজন যুবককে লালবাজারে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ। টানা জিজ্ঞাসাবাদ করার পর তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। অভিযুক্ত যুবক পেশায় সিভিক ভলান্টিয়ার। কী ভাবে সকলের চোখের আড়ালে হাসপাতালে ঢুকলেন তিনি, তার পর চার তলায় উঠে এমন কাণ্ড ঘটালেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। প্রশ্নের মুখে হাসপাতালের নিরাপত্তাও। লালবাজার এই ঘটনার তদন্তে বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করেছে। সেই তদন্তেই দিনভর উঠে এসেছে ঘটনার একের পর এক নৃশংসতার ছবি। মৃতার দেহের ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে স্পষ্ট রয়েছে খুনের ইঙ্গিত। কী ভাবে ওই চিকিৎসকের উপর অত্যাচার করা হয়েছে, তা-ও স্পষ্ট হয়েছে ওই রিপোর্ট থেকে। ময়নাতদন্তের প্রাথমিক ওই রিপোর্টে মৃতার শরীরে একাধিক অংশে ক্ষতের চিহ্ন পাওয়া গিয়েছে বলে উল্লেখ রয়েছে। মুখে, ঠোঁটে, পেটে, হাতে-পায়ে, পেটে, এমনকি যৌনাঙ্গেও আঘাতের চিহ্ন মিলেছে। দু’চোখ দিয়ে রক্ত গড়িয়ে পড়ার চিহ্নও পাওয়া গিয়ে মৃতার শরীরে। এমনটাই লেখা ওই রিপোর্টে।
শনিবার দিনভর যে সব তথ্য তদন্তকারীরা হাতে পেয়েছেন, তা দেখে শিউরে উঠছেন তাঁরা নিজেরাও। তদন্ত করতে গিয়ে পুলিশ অভিযুক্তের অতীতও খতিয়ে দেখছে। সূত্রের খবর, পুলিশ জানতে পেরেছে আগেও মহিলাদের সঙ্গে অভব্য ব্যবহার করার ‘রেকর্ড’ রয়েছে অভিযুক্তের। তদন্তকারীদের সূত্রে খবর, ধৃতের কথাবার্তায় অসংলগ্নতা রয়েছে। অতীতে এক মহিলা পুলিশকর্মীর সঙ্গে তাঁর ফোনে বলা কথা নিয়েও ভাবছেন তদন্তকারীরা। তদন্তকারীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, ফোনে ধৃত ওই মহিলা পুলিশকর্মীকে বলেছেন, ‘আমার চোখ দেখে বুঝতে পারছ না...’। শুধু তা-ই নয় নানা সময়ে এ ধরনের নানা কথা তিনি বলতেন। আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে এর আগে এক মহিলা চিকিৎসকের শ্লীলতাহানির অভিযোগ ওঠে। সেই ঘটনার সঙ্গে অভিযুক্তের যোগ রয়েছে কি না তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে সূত্রের খবর। যদিও এখনও পর্যন্ত তাঁর বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ মেলেনি।
তদন্ত কোন পথে?
শুক্রবারই আরজি কর-কাণ্ডে খুনের মামলা রুজু করেছিল পুলিশ। শনিবার তার সঙ্গে জুড়েছে ধর্ষণের মামলাও। পুলিশ যা তথ্য পেয়েছে এখনও পর্যন্ত তা থেকে স্পষ্ট, ওই মহিলা চিকিৎসককে ধর্যণ করে খুন করা হয়েছে। পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে যে সন্দেহভাজন যুবকের হদিস পায়, তিনি হাসপাতালের কেউ নন বলে প্রথমে দাবি করে পুলিশ। পরে জানা যায় অভিযুক্ত এক জন সিভিক ভলান্টিয়ার। চার তলার সেমিনার হল থেকে একটি ছেঁড়া হেডফোনের অংশও পেয়েছে পুলিশ। সেই সূত্র ধরেই অভিযুক্তের সন্ধান পেয়েছেন তদন্তকারীরা। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার ভোর ৪টে নাগাদ হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজে যুবককে দেখা গিয়েছিল। ৩০ থেকে ৩৫ মিনিট পর আবার তাঁকে বেরিয়ে আসতেও দেখা যায়। এই সময়ের মধ্যেই তিনি ঘটনাটি ঘটিয়েছেন বলে পুলিশের প্রাথমিক অনুমান। এ ছাড়াও পুলিশ অভিযুক্তের মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত করেছে। সেই ফোন ঘেঁটে তদন্তকারী অফিসারেরা, পর্নোগ্রাফির বেশ কিছু ভিডিয়োও পেয়েছেন। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, ধৃত যুবকের মানসিক বিকৃতি রয়েছে। সেই দিকটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
আধ ঘণ্টার রহস্য
তদন্ত যত এগোচ্ছে, রহস্য ততই ঘণীভূত হচ্ছে। হামলা হওয়ার পর ওই যুবতী নিজেকে বাঁচানোর জন্য যতটা প্রতিরোধ করা স্বাভাবিক, তা করতে পারেননি বলেই তদন্তকারীদের সূত্রে খবর। কিন্তু কেন তিনি প্রতিরোধ করতে পারলেন না, সেই প্রশ্নই ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের। পাশাপাশি, আধ ঘণ্টায় ঠিক কী কী ঘটেছিল, সেই সূত্র জুড়েই রহস্যের কিনারা করতে চাইছেন তদন্তকারীরা। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার ভোর ৪টে থেকে সাড়ে ৪টের মধ্যে। এই আধ ঘণ্টা সেমিনার হলে কী ঘটেছিল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, শুক্রবার ডিউটিতে ছিলেন ওই মহিলা চিকিৎসক। রাতে অন্যদের সঙ্গে টিভিতে অলিম্পিক্সে নীরজ চোপড়ার জ্যাভলিন থ্রো ইভেন্ট দেখেন তিনি। তার পর খাবার খেয়ে রাত আড়াইটে নাগাদ সেমিনার হলে বিশ্রাম নিতে যান তিনি। সেমিনার হলে লাল রঙের কম্বল গায়ে জড়িয়ে মেঝেতে পাতা নীলরঙা কার্পেটেই ঘুমিয়ে পড়েন তিনি। ঘুমন্ত অবস্থাতেই তাঁর উপর হামলা করেন অভিযুক্ত। মহিলার শরীরের ক্ষত দেখে তদন্তকারীদের অনুমান, অভিযুক্ত নৃশংস ভাবে অত্যাচার করেছিলেন তাঁর উপর।
সিসিটিভি ফুটেজ থেকে কী কী পেয়েছে পুলিশ?
সেমিনার হলে সিসি ক্যামেরা না থাকলেও ঘটনাস্থল এবং হাসপাতালের আশপাশের ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখেছে পুলিশ। সেই ফুটেজ দেখেই অভিযুক্তকে শনাক্ত করা হয়েছে। অভিযুক্তকে ঘটনার রাতে দু’বার সেমিনার হলের বিল্ডিংয়ে ঢুকতে দেখা যায়। প্রথম বার বৃহস্পতিবার রাত ১১টা নাগাদ আরজি করে আসেন অভিযুক্ত যুবক। কিছু ক্ষণ পর বেরিয়ে আসেন। তার পর ৪টে নাগাদ আবারও সেই বিল্ডিংয়ে যান এবং ৩০-৩৫ মিনিট পর বেরিয়ে বাড়ি চলে যান। তদন্তকারীদের অনুমান, ওই সময়ের মধ্যেই অপরাধ সংঘটিত হয়েছে।
অভিযোগ স্বীকার করলেও অনুতপ্ত নন ধৃত
আরজি কর হাসপাতালে ঢুকে যুবতী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুনের কথা স্বীকার করে নিয়েছেন অভিযুক্ত। এমনটাই জানা গিয়েছে তদন্তকারীদের সূত্রে। তবে অপরাধের কথা স্বীকার করলেও এখনও তাঁর মধ্যে কোনও অপরাধবোধ দেখা যাচ্ছে না বলেই তদন্তকারীদের সূত্রে জানা গিয়েছে। তদন্তকারীদের একটি অংশের দাবি, কোনও অনুতাপবোধ নেই অভিযুক্তের মধ্যে। বরং অভিযুক্ত জেরার সময় বলেছেন, ‘‘ফাঁসি দিলে দিন।’’
কী বলছেন অভিযুক্তের মা?
ছেলে এমন কাজ করেছে, তা বিশ্বাসই করতে পারছেন না আরজি করের ঘটনায় ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ারের মা। অভিযুক্তের মায়ের কথায়, “ছেলে এই ঘটনা ঘটাতে পারে না।” তবে ছেলের একাধিক বিবাহের কথা তাঁর কানে এসেছিল বলে জানিয়েছেন বৃদ্ধা। একই সঙ্গে তাঁকে বিলাপের সুরে বলতে শোনা গেল, “ছেলেকে জন্ম দিয়েই বিপদে পড়েছি।” তিনি এ-ও জানান, ধৃতের সঙ্গে তাঁর তেমন যোগাযোগ নেই। কালেভদ্রে দক্ষিণ কলকাতার ছোট্ট বাড়িতে আসতেন অভিযুক্ত। কবে শেষ বার ছেলেকে বাড়িতে দেখেছেন তা-ও মনে করতে পারেননি বৃদ্ধা। কখনও দক্ষিণ কলকাতায় নিজের বাড়িতে, কখনও ফোর্থ ব্যাটালিয়নের ব্যারাকে থাকতেন অভিযুক্ত। সিভিক ভলান্টিয়ার হয়েও পুলিশের জন্য নির্দিষ্ট ফোর্থ ব্যাটালিয়নের ব্যারাকে কী ভাবে অভিযুক্ত থাকতেন, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
ধৃতের কর্মজীবন
আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ার চাকরি পেয়েছিলেন ২০১৯ সালে। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, সিভিক ভলান্টিয়ার হিসাবে প্রথমে কলকাতা পুলিশের বিপর্যয় মোকাবিলা দল (ডিজ়াস্টার ম্যানেজমেন্ট গ্রুপ বা ডিএমজি)-এ যোগ দিয়েছিলেন। তবে সেখানে অল্প কয়েক দিন কাজ করার পরেই তাঁকে পাঠানো হয় পুলিশের ওয়েলফেয়ারে।
কী দাবি পুলিশ কমিশনারের?
কলকাতা পুলিশ কমিশনার বলেছেন, তাঁরা পরিপূর্ণ ‘স্বচ্ছতা’ রেখে গোটা ঘটনার তদন্ত করছেন। কিন্তু তাঁর বাহিনীরই একাংশ মনে করছেন, ধৃতের পেশাগত পরিচয় এড়িয়ে যাওয়া নিয়ে ‘অস্বচ্ছতা’ তৈরি হয়েছে। কারণ, কমিশনার বার বার একই কথা বলে গিয়েছেন, “আমাদের কাছে ওই ব্যক্তি সর্বোচ্চ পর্যায়ের অপরাধী। তিনি যা-ই হোন না কেন, আমাদের কাছে তাঁর পরিচয়— তিনি এক জন অপরাধী।”
আরজি করের সামনে ধুন্ধুমার
মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগে সকাল থেকেই তপ্ত আরজি কর হাসপাতাল চত্বর। ঘড়ির কাঁটা যত এগিয়েছে, তত বেড়েছে অবস্থান, বিক্ষোভ, প্রতিবাদের তেজ। বিকেলে তা আরও চরমে পৌঁছয়। ‘বহিরাগত’ একদল আন্দোলনকারী আরজি করে ঢোকার চেষ্টা করেন। পুলিশ তাঁদের বাধা দিতেই শুরু হয় ধ্বস্তাধস্তি। চলে পুলিশের ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা। দীর্ঘ ক্ষণ ‘বহিরাগত’ আন্দোলনকারীদের আরজি করের ভিতরে প্রবেশ আটকাতে সমর্থ হন পুলিশকর্মীরা। ‘বহিরাগত’ বিক্ষোভকারীদের অবশ্য দাবি, এই আন্দোলনকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছে রাজ্যের শাসক শিবির। পুলিশ ‘বহিরাগত’ বিক্ষোভকারীদের আরজি করের বাইরে থামিয়ে রাখতে সমর্থ হলেও প্রথমে জমি ছাড়তে নারাজ ছিলেন বিক্ষোভকারীরাও। পুলিশ যখন ব্যারিকেড করে ‘বহিরাগত’দের আটকানোর চেষ্টা করে, তখন আরজি করের ভিতর থেকেও অবস্থানরত চিকিৎসক-পড়ুয়াদের একাংশ এগিয়ে আসেন। ‘বহিরাগত’দের প্রবেশে আপত্তি জানান তাঁরা। আরজি করের জুনিয়র ডাক্তারদের বক্তব্য, তাঁরা এই আন্দোলনে কোনও রাজনীতির রং লাগতে দেবেন না।
আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে অবস্থানরত জুনিয়র চিকিৎসকদের পাশে দাঁড়াতে শনিবার বিকেলে হাসপাতালের কাছে পৌঁছন একাধিক বাম ছাত্র-যুব সংগঠনের সদস্যেরা। স্টুডেন্টস হেল্থ হোমের চিকিৎসকেরাও ওই একই সময়ে পৌঁছে যান আরজি করের সামনে। তাঁদের মধ্যে আরজি করের প্রাক্তনীরাও ছিলেন। এ ছাড়াও শনিবার বিকেলে আরজি করে যান সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুনের বিচারের দাবিতে আরজি করের বাইরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন সিপিএম কর্মী-সমর্থকেরা।
জেলায় জেলায় বিক্ষোভ এবং কর্মবিরতির ডাক
শনিবার আরজি কর-কাণ্ডের রেশ গিয়ে পড়ল জেলায় জেলায়। বিভিন্ন জেলা হাসপাতালে প্রতিবাদে শামিল হন চিকিৎসকেরা। শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে আরজি করে জরুরি পরিষেবা ছাড়া অন্য সমস্ত বিভাগে কর্মবিরতির ডাক দিয়ে আন্দোলনে নেমেছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। শনিবার জেলাগুলির বিভিন্ন হাসপাতালেও সেই ছবি দেখা গেল। দোষীর শাস্তির দাবিতে কোথাও বিক্ষোভ মিছিল করলেন চিকিৎসকেরা, কোথাও আবার কর্মবিরতি। দোষীর কঠোর শাস্তির দাবির পাশাপাশি বিক্ষোভকারী চিকিৎসকদের প্রশ্ন, কলকাতা শহরের সরকারি হাসপাতালে যদি এ রকম ঘটতে পারে, তা হলে জেলার হাসপাতালে চিকিৎসকদের, বিশেষত মেয়েদের নিরাপত্তা কোথায়?
আরজি কর-কাণ্ডে ফাঁসির শাস্তি চান মমতা
আরজি কর হাসপাতালের ঘটনায় দোষীর ফাঁসির শাস্তি চেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানান, এই ঘটনায় ফাস্টট্র্যাক আদালতে ফাঁসির আবেদন জানানো উচিত। তাঁর কথায়, “জুনিয়র ডাক্তারেরা যে আন্দোলন করছেন তা সঙ্গত কারণ আছে।” মমতা বলেন, ‘‘জুনিয়র চিকিৎসকেরা যে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন, তা সঙ্গত বলেই আমি মনে করি। আমি ওদের দাবির সঙ্গে একমত।’’ কেউ কেউ ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবি তুলেছেন। সেই প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী জানান, রাজ্য পুলিশের উপর আস্থা না থাকলে অন্য কোনও এজেন্সির দ্বারস্থও হতে পারেন আন্দোলনকারীরা। কারণ, সরকার উপযুক্ত তদন্ত চায়।
আরজি কর-কাণ্ডে পুলিশকে কৃতিত্ব দিলেন অভিষেক
শনিবার নিজের সংসদীয় কেন্দ্রে প্রশাসনিক সভা ছিল ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সভা শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে আরজি কর-কাণ্ড নিয়ে মুখ খুলেছেন তৃণমূলের সেনাপতি। ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করার ব্যাপারে পুলিশকে কৃতিত্ব দিয়েছেন তিনি। তবে অভিষেক এই সব ব্যাপারে আরও কঠোর হওয়ার কথাও বলেন। তাঁর কথায়, ‘‘পুলিশ অভিযুক্তকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতার করেছে। তবে আমি বলব, সুরক্ষার প্রশ্নে আরও কঠোর হতে হবে।’’ যে অপরাধ আরজি করের চিকিৎসক পড়ুয়ার সঙ্গে ঘটেছে, তাকে ‘নারকীয়’ বলে উল্লেখ করেছেন অভিষেক। তিনি এ-ও দাবি করেন, ‘‘এই কাজ যারা করে, তাদের বেঁচে থাকার অধিকার নেই। কিন্তু আমাদের দেশের আইন, বিচারব্যবস্থা এমন, আমাদের হাত-পা বাঁধা।’’ অভিষেকের কথায়, ‘‘এই ধরনের অপরাধ করলে, অপরাধীকে সাত দিনের মধ্যে বিচার শেষ করে হয় এনকাউন্টার করা উচিত, না হয় ফাঁসিতে ঝোলানো উচিত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy