‘বাংলা ভাষাকে অস্তিত্বহীন’ বলে উল্লেখ করে বাংলার শিক্ষিকার প্রয়োজন নেই বলেও চিঠিতে জানানো হয়েছে। প্রতীকী ছবি।
নবীন প্রজন্ম বাংলা ভাষা নিয়ে আগ্রহী নয়, এ অভিযোগ খুব নতুন নয়। তবে শনিবার সোশ্যাল মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি চিঠির সুবাদে ফের সেই বিতর্কের পালে হাওয়া লেগেছে। সেই চিঠির বিষয় আড়িয়াদহের একটি বেসরকারি স্কুলে বাংলার শিক্ষিকাকে চাকরি থেকে ছাঁটাই করা। তাতে বলা হয়েছে, স্কুলে বাংলা এবং হিন্দি দ্বিতীয় ভাষা। তবে বাংলা ভাষার পড়ুয়া দু’-তিন জন। তারা বাড়িতেই পড়ে নেবে। ‘বাংলা ভাষাকে অস্তিত্বহীন’ বলে উল্লেখ করে বাংলার শিক্ষিকার প্রয়োজন নেই বলেও চিঠিতে জানানো হয়েছে। দেবস্মিতা রায় নামে সংশ্লিষ্ট শিক্ষিকাই চিঠিটি সমাজ মাধ্যমে প্রকাশ করেছেন।
অনেকেরই প্রশ্ন, আড়িয়াদহের মতো উত্তর শহরতলিতে সত্যিই কি বাংলা ভাষার প্রতি অনাগ্রহ তৈরি হয়েছে? নাকি স্কুল কর্তৃপক্ষই বাংলার বদলে হিন্দিকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন? শিক্ষাবিদ নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ির মতে, ‘‘স্কুল বাংলার বদলে হিন্দিকেই প্রাধান্য দিতে চাইছে বলেই এমন বয়ানে চিঠি লিখেছে। পশ্চিমবঙ্গের বুকে বাংলা দ্বিতীয় ভাষা হিসাবে পড়ার ছাত্র নেই বলে বাংলার শিক্ষিকার প্রয়োজন নেই, পশ্চিমবঙ্গে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়নি।’’ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনামূলক সাহিত্যের অধ্যাপক অভীক মজুমদার বলেন, ‘‘চিঠির ইংরেজি বয়ানেও বহু ভুল আছে। যাঁরা বাংলা ভাষা সম্পর্কে এমন কথা বলছেন তাঁদের ভাষা সম্পর্কে ধারণাই খুব নিম্নমানের। বাংলাকে অস্তিত্বহীন বলার মত কোনও তথ্য প্রমাণ স্কুলের নেই। স্কুল যে কোনও সিদ্ধান্তই নিতে পারে কিন্তু বাংলাকে অপমান করার অধিকার তাদের নেই।’’
আড়িয়াদহের ওই ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে নার্সারি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানো হয়। সব মিলিয়ে সাড়ে পাঁচশোর মতো পড়ুয়া আছে। তবে সিবিএসই অথবা আইসিএসই, কারও অনুমোদন নেই স্কুলের। পড়ুয়ারা অন্য স্কুল থেকে পরীক্ষা দেয়। স্কুলের কর্ণধার কমলেশ বসুর অবশ্য দাবি, পড়ুয়ারাই বাংলা পড়তে চাইছে না। তিনি বলছেন, প্রাথমিকের পরে মাধ্যমিক স্তরে মাত্র দু’-তিন জন দ্বিতীয় ভাষা হিসাবে বাংলা পড়ছে। বাকিরা হিন্দি নিয়েছে। তবে তিনি এ-ও বলছেন, ‘‘আমার ওই চিঠির বয়ানে বাংলাকে অস্তিত্বহীন বলা অন্যায় হয়েছে। আমি তা সংশোধন করে দিয়েছি।’’ দেবস্মিতা অবশ্য বলছেন, ‘‘নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরুর আগেই কী ভাবে কর্তৃপক্ষ বুঝলেন যে বাংলাকে দ্বিতীয় ভাষা হিসাবে নেওয়া পড়ুয়ারা ভর্তি হবে না? আমার যত দিন পড়িয়েছি, তত দিন বাংলার পড়ুয়া বেশ কয়েক জন ছিল। পরিস্থিতি এত খারাপ তা চিঠি থেকে জানতে পারলাম।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy