Advertisement
০৪ নভেম্বর ২০২৪

সাগরে এ বার অতিরিক্ত ভিড় হতে পারে, অনুমান প্রশাসনের

গোটা বছরটা জুড়ে সাগর মেলার প্রাঙ্গণে শুধুই ধূ ধূ বালিয়াড়ি। হাওয়া দিলেই চোখে-মুখে এসে ঝাপটা লাগে। কিন্তু সাগরমেলা উপলক্ষে এখন কপিলমুনির আশ্রমের আশপাশের এলাকা চেনাই মুশকিল। লোকজনের তুমুল ভিড়। অসংখ্য দোকানপাট। সারা দেশের নানা প্রদেশের মানুষের মধ্যে নানা দেহাতি ভাষায় আদান-প্রদান চলছে। সংক্রান্তির আগে ভিড়টা আরও বাড়বে, জানালেন এক ব্যবসায়ী। মেলা প্রাঙ্গণে মালা, ডালার দোকান দিয়েছেন সহদেব মাইতি। জানালেন, এ বছর মহাকুম্ভ নেই। তাই ভিড়টা অবশ্যই বাড়বে।

বর্ণময় মেলা প্রাঙ্গণ। সাগরে দেবাশিস রায়ের তোলা ছবি।

বর্ণময় মেলা প্রাঙ্গণ। সাগরে দেবাশিস রায়ের তোলা ছবি।

শিবনাথ মাইতি
সাগর শেষ আপডেট: ১৩ জানুয়ারি ২০১৫ ০০:৩৭
Share: Save:

গোটা বছরটা জুড়ে সাগর মেলার প্রাঙ্গণে শুধুই ধূ ধূ বালিয়াড়ি। হাওয়া দিলেই চোখে-মুখে এসে ঝাপটা লাগে। কিন্তু সাগরমেলা উপলক্ষে এখন কপিলমুনির আশ্রমের আশপাশের এলাকা চেনাই মুশকিল। লোকজনের তুমুল ভিড়। অসংখ্য দোকানপাট। সারা দেশের নানা প্রদেশের মানুষের মধ্যে নানা দেহাতি ভাষায় আদান-প্রদান চলছে। সংক্রান্তির আগে ভিড়টা আরও বাড়বে, জানালেন এক ব্যবসায়ী। মেলা প্রাঙ্গণে মালা, ডালার দোকান দিয়েছেন সহদেব মাইতি। জানালেন, এ বছর মহাকুম্ভ নেই। তাই ভিড়টা অবশ্যই বাড়বে।

শুধু এলাকার লোকজনের ব্যবসা বাড়ে এই সময়টায়, এমন নয়। অন্য প্রদেশ থেকেও আসেন বহু ব্যবসায়ী। তাঁদেরই এক জন সিন্ধনী বাঈ। এসেছেন মুম্বই থেকে। তাঁর পসরা বলতে মালা, মৃগনাভী, লাল-নীল হরেক রঙের সুতো। জানালেন, বছর পনেরো ধরে আসছেন সাগর মেলায়। সারা বছরই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে মেলায় মেলায় ঘুরে ফেরি করেন। তবে এত মানুষের ভিড়ে কিছু অব্যবস্থা চোখে পড়বেই। এ বার যেমন লট ৮ ঘাটে কর্তব্যরত এক পুলিশ অফিসারের কাছে জানতে যাওয়া হয়েছিল, মেলা কমিটির অফিসটা কোন দিকে বলুন তো। সটান বলে দিলেন, “বলতে পারব না।” গাঁ-গঞ্জ থেকে আসা লক্ষ লক্ষ লোকের ভিড়ে পুলিশ কোনও প্রশ্নের সদুত্তর দেবে, এটা ধরেই নেওয়া যায়। খানিক ক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে দেখা গেল, কারও প্রশ্নেরই ঠিকঠাক উত্তর দিতে চাইছেন না তিনি। হয় জানেন না, না হলে ধরে নিতে হবে, কাজে মন নেই।

লট ৮ ঘাটেই বাসস্ট্যান্ডের কাছে বেশ কিছু পাইস হোটেল বসে গিয়েছে। সেখানে খাওয়া-দাওয়া সেরে নিচ্ছেন অনেকেই। কিন্তু উচ্ছিষ্ট বা থালা-গ্লাস ফেলার কোনও জায়গা নেই। রাস্তার ধারে ডাঁই হয়ে পড়ে আছে সে সব। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ।

সংবাদমাধ্যমের থাকার ব্যবস্থা হয়েছে যেখানে, সেখানেও নানা অব্যবস্থা। কোথাও কম্বল পৌঁছয়নি, কোথাও জলের গ্লাস। কোথাও প্লাগ পয়েন্ট খারাপ। মোবাইল, ল্যাপটপ চার্জ দিতে গিয়ে নানা বাধা।


এখনই জমেছে এমন আবর্জনার স্তূপ। নিজস্ব চিত্র।

মেলার পরিস্থিতি সরেজমিন দেখতে এসেছেন পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। তিনি জানালেন, অতিরিক্ত ভিড় হতে পারে ধরেই সমস্ত রকম ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

এ দিন ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের উদ্যোগে উদ্বোধন হয়েছে গ্রামীণ উন্নয়ন ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। সাগরদ্বীপের পিছিয়ে পড়া বাসিন্দাদের জন্য সোমবার এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটির উদ্বোধন করেন সুব্রতবাবু। এই এলাকার লোকজন আগে লুকিয়ে কচ্ছপ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। এ দিন আশ্রমের প্রধান সম্পাদক স্বামী বিশ্বত্মানন্দ বলেন, “এখানকার মানুষ যাতে সুষ্ঠ ভাবে জীবন যাপন করতে পারেন, সে জন্য এই প্রকল্পে মত্‌স্য চাষ, কৃষি, ছোট কুটিরশিল্প-সহ নানা রকম পদ্ধতি শেখানো হবে। এ দিন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জেলাশাসক শান্তনু বসু, স্থানীয় বিধায়ক বঙ্কিমচন্দ্র হাজরা-সহ অনেকে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE