প্রতি দিন এ ভাবেই চলে পারাপার। ছবি:অরুণ লোধ।
লাইন পার করতে গিয়ে এর মধ্যেই বেশ কয়েকটি দুর্ঘটনা ঘটে গিয়েছে। যাত্রীদের একাংশের দাবি, বিকল্প রাস্তা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। নেই ফুটওভার ব্রিজও। তাই ঝুঁকি নিয়েই লাইন পার হতে হচ্ছে। এই ছবি পূর্ব রেলের শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখার বজবজ স্টেশনের।
কেন এ ভাবে লাইন পেরোচ্ছেন মানুষ? যাত্রীদের একাংশ জানান, বজবজ স্টেশনে লাইন পারাপারের জন্যে ১৪ নম্বর ও ১৫ নম্বর রেল কেবিনে গেট রয়েছে। ওই কেবিন গেট পার হতে প্রায় তিন কিলোমিটার পথ যেতে হয়। অথচ লাইন পেরিয়ে গেলে মাত্র ১০০ মিটার যেতে হয়। ফলে অধিকাংশ যাত্রী প্রাণ হাতে করে লাইন পেরোচ্ছেন।
স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, “১৪ ও ১৫ নম্বর রেল গেটের প্রায় মাঝামাঝি হালদার পাড়া এলাকা দিয়ে লাইন পারের ব্যবস্থা ছিল। কাঠের স্লিপার পাতা অংশের ওপর দিয়ে যাত্রীরা পার হতেন। কয়েক বছর আগে লাইনের সংখ্যা বাড়ানোয় সেই স্লিপার উঠিয়ে নিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ।” বর্তমানে প্রায় ন’টি লাইন পেরিয়ে স্টেশনে আসতে হয়।
স্টেশনের উল্টো দিকে রয়েছে বজবজ পুরসভার তিনটি ও মহেশতলা পুরসভার দু’টি ওয়ার্ড। হালদার পাড়া, মণ্ডল পাড়া-সহ বেশ কিছু এলাকা থেকে স্কুল, ব্যাঙ্ক কিংবা অটোস্ট্যান্ডে আসতে নিত্য দিন কয়েক হাজার মানুষকে লাইন পার হতে হয়। ওই পাড়াগুলি থেকে বজবজের বিভিন্ন স্কুলে পড়তে আসে বহু পড়ুয়া। উপায় না থাকায় ছোটরাও লাইন পার হয়। অনেক সময়েই বজবজ স্টেশনে মালবাহী ট্রেন দাঁড়িয়ে থাকে। তখন ট্রেনের নীচ দিয়েও চলে যায় অনেকে।
বজবজ স্টেশনের এ ভাবে লাইন পারাপারের কথা মানছেন রেলকর্তৃপক্ষও। পূর্ব রেল সূত্রে খবর, বজবজ শিয়ালদহ রুটে ঘন ঘন ট্রেন থাকে না। কিন্তু অনেক সময়েই এই স্টেশনে মালবাহী ট্রেন দাঁড়িয়ে থাকে। ফলে ট্রেনের নীচ দিয়ে অনেককে যেতে হয়। তবে ট্রেনগুলি ছাড়ার সময়ে মাইকে ঘোষণা করা হয়। তা সত্ত্বেও ঝুঁকি থেকেই যায় বলে জানান রেলকর্মীদের একাংশ।
বাসিন্দা প্রণব মণ্ডল জানান, ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি দুর্ঘটনা ঘটে গিয়েছে। যাত্রীদের সুবিধার্থে বারবার বিকল্প পথ করার জন্য রেলের আধিকারিকদের বলা হলেও কোনও হেলদোল নেই। বিকল্প রাস্তা বা কেবিন না করার কারণ হিসেবে রেল জানাচ্ছে, দু’টি কেবিন গেটের মধ্যে ৭০০ মিটারের কম দূরত্ব থাকলে নতুন গেট করা যায় না। বাসিন্দাদের দাবি, অথচ মেপে দেখা গিয়েছে বিকল্প রাস্তাটি যেখানে ছিল, দু’টি রেল গেট থেকেই তার দূরত্ব ১১০০ মিটার। তাঁরা জানাচ্ছেন, এ বছর ফেব্রুয়ারি মাসে পূর্ব রেলের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক বজবজে পরিদর্শনে এলে তাঁকে এই অসুবিধার কথা বলা হয়। তার পরেও কোনও সুরাহা না হওয়ায় ক্ষুব্ধ এলাকার বাসিন্দারা। এ বার তাঁরা আন্দোলনের পথে নামবেন বলে জানাচ্ছেন।
বজবজ পুরসভার উপপ্রধান গৌতম দাশগুপ্ত বলেন, “এক দশক ধরে ওই জায়গায় একটা ফুট ওভারব্রিজ হওয়ার দাবি জানিয়ে আসছেন বাসিন্দারা। এই নিয়ে বহু বার রেলকেও জানানো হয়েছে। রেলের আধিকারিকেরা পরিদর্শন করে গিয়েছে। কিন্তু কাজ কিছুই হয়নি।” পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক রবি মহাপাত্র বলেন, “খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy