দিন কয়েক আগে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে ভাঙড়ে খুন হন দলেরই দুই কর্মী। শনিবার ওই ঘটনায় নিহত তৃণমূল কর্মী রমেশ ঘোষালের মা ময়না ঘোষালের সঙ্গে দেখা করে পাশে থাকার আশ্বাস দিলেন অধীর চৌধুরী। ছবি: সামসুল হুদা।
তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে সম্প্রতি ভাঙড়ের বেঁওতায় প্রাণ গিয়েছে দলেরই দুই কর্মীর। সেই ঘটনার পরে দলের দাপুটে নেতা আরাবুল ইসলামকে ‘সাসপেন্ড’ করেছে তৃণমূল। শাসক দলের নেতাদের বেঁওতায় পা না পড়লেও এলাকায় গিয়ে নিহতদের পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দিলেন সাংসদ তথা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী।
গত ২৫ অক্টোবর ওই জোড়া খুনের ঘটনাটি ঘটে। নিহত হন তৃণমূল কর্মী বাপন মণ্ডল এবং রমেশ ঘোষাল। শনিবার শ-দু’য়েক কংগ্রেস কর্মী নিয়ে বেঁওতায় পৌঁছে প্রথমেই বাপনের বাড়িতে যান অধীর। বাপনের ঠাকুমা লক্ষ্মী মণ্ডলের মুখে ঘটনার বিবরণ শোনেন। কংগ্রেস সাংসদ তারপর যান রমেশের বাড়িতে। রমেশের মা ময়না ঘোষালের সঙ্গে কথা হয় তাঁর। কান্নায় ভেঙে পড়ে ময়নাদেবী বলেন, “সে দিন ছেলে ভাইফোঁটা নেওয়ার জন্য তৈরি হচ্ছিল। হঠাৎ এক দল দুষ্কৃতী বাড়িতে হামলা চালায়। আমার ছেলে-বৌমা তাদের হাতে-পায়ে ধরেছিল। ওরা শুনল না। চোখের সামনে আমার ছেলেকে গুলি করে খুন করল। বাড়ি-ঘর পুড়িয়ে দিল। আরাবুলের লোকেরাই এই কাণ্ড ঘটিয়েছে।” অধীরবাবু তাঁদের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দেন। কংগ্রেসের জেলা সভাপতি অর্ণব রায় আশ্বাস দেন, “যে কোনও সমস্যায় আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন।”
এ দিন বেঁওতা অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে ম্যাটাডোরে দাঁড়িয়ে বক্তব্যও রাখেন অধীর। তিনি বলেন, “মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর দলেরই দুই কর্মী তাঁরই দলের সদস্যদের হাতে খুন হলেন। অন্তত একবার তিনি নবান্নে ডেকে তাঁদের পরিবারের দুঃখ ভাগ করে নিতে পারতেন। তা না করে, তাঁদের বোকা বানিয়ে আরাবুলকে লোক দেখানো বহিষ্কার করা হয়েছে।” পুলিশের নিষ্ক্রিয়তারও সমালোচনা করেন প্রদেশ সভাপতি। তাঁর কথায়, “চৌমণ্ডলপুর, রামপুরহাট-সহ রাজ্যের সর্বত্র পুলিশ আক্রান্ত। পুলিশের সামনেই বেঁওতায় এত বড় ঘটনা ঘটে গেল। অথচ যে সব নেতা পুলিশকে বোম মারতে বলছেন, তাঁদের তিনি নবান্নে ডেকে মাথা ঠান্ডা করতে বলছেন। আসলে ওই নেতা এবং তাঁদের আশ্রিত দুষ্কৃতীদের দিয়ে উনি এলাকা দখলে রাখতে চাইছেন।” সব বিষয় রাজ্যপালকে জানাবেন বলেও আশ্বাস দেন অধীর।
বেঁওতা থেকে বেরিয়ে কলকাতার রওনা দেন অধীর। এরপর জেলা কংগ্রেস সভাপতির নেতৃত্বে দলীয় কর্মী-সমর্থকেরা কেএলসি থানায় গিয়ে আধ ঘণ্টা বিক্ষোভ দেখান। সাত দিনের মধ্যে আরাবুল-সহ ঘটনায় জড়িত প্রকৃত দোষীদের গ্রেফতার, শান্তি ফেরাতে এলাকায় পুলিশ ক্যাম্প-সহ চার দফা দাবিতে থানায় স্মারকলিপিও জমা দেন তাঁরা।
পথ অবরোধ। ফের অবরোধ কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ে। বিজেপি’র দেওয়াল লিখনের জায়গা তৃণমূল কেড়ে নিচ্ছে, এই অভিযোগে জগদ্দলের উচ্ছেগড়ের কাছে বেলা একটা থেকে অবরোধ চলল। প্রায় এক ঘন্টা এই অবরোধ চলে। আচমকা অবরোধে জেরবার হলেন ওই পথের যাত্রীরা। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে অবরোধকারীদের বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিলে অবরোধ উঠে যায়। এ প্রসঙ্গে বিজেপির পক্ষ থেকে অরুণ ব্রহ্ম বলেম, “ইনুমতি সাপেক্ষে যে দেওয়ালগুলি আমরা নিয়েছি সেগুলিতে রাতারাতি তৃণমূল নিজেদের নাম লিখে দখল করে নিয়েছে।’’ ততৃণমূল বিধায়ক তথা উত্তর২৪ পরগনার জেলার যুব সভাপতি পার্থ ভৌমিক বলেন, “এই অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy