—ফাইল চিত্র
ঝড়ের নামেই বুক কাঁপে সুন্দরবনের বাসিন্দাদের। আয়লার পরে ১০ বছর পার হয়ে গেলেও ঝড়ের সতর্কতা এলে পোঁটলাপুটলি বেঁধে তৈরি হয় হিঙ্গলগঞ্জ থেকে কাকদ্বীপ। ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের সতর্কতা জারি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ফের আতঙ্কের স্রোত বইতে শুরু করেছে দুই ২৪ পরগনার উপকূলবর্তী এলাকায়।
সতর্কতা জারি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই কাজে নেমে পড়েছে প্রশাসন। মাইকে করে সাবধান করা হচ্ছে নদী এবং সমুদ্র তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের। অকারণে আতঙ্কিত হতে বারণও করা হচ্ছে। তৈরি রাখা হচ্ছে আশ্রয় কেন্দ্রগুলিকে। প্রস্তুত বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরও।
হাওয়া অফিস সতর্কতা জারি করেছে, বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া নিম্নচাপ বৃহস্পতিবার রাতে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে। শনিবার তা অতি ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়ে পশ্চিমঙ্গ এবং বাংলাদেশের উপকূলের আছড়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। যদিও বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত আবহাওয়া দফতর জানাতে পারেনি, ঠিক কোন জায়গায় বুলবুল আছড়ে পড়বে। তার গতিবেগই বা কত থাকবে।
উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসক চৈতালি চক্রবর্তী বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে উপকূলবর্তী এলাকার বিডিও-দের সঙ্গে কথা বলে সব রকম ভাবে তৈরি থাকার নির্দেশ দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড়ের সাতকাহন
এ দিন দুপুর থেকেই সুন্দরবন এলাকার গ্রামে গ্রামে মানুষকে সাবধান করতে মাইকে প্রচার শুরু হয়েছে। বাসিন্দাদের শুক্রবারের মধ্যে কাছাকাছি আশ্রয়কেন্দ্রগুলিতে পৌঁছে যেতে বলা হয়েছে। হাসনাবাদ, হিঙ্গলগঞ্জ, সন্দেশখালি মিনাখাঁর এলাকায় খাবার এবং পানীয় জল মজুত করার কাজ শুরু হয়েছে।
এ দিন বিকেলে বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের ২৬ জনের একটি দল আধুনিক সরঞ্জাম নিয়ে হাসনাবাদে পৌঁছয়। হাসনাবাদের বিডিও অরিন্দম মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা ‘ফণী’র অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে পরিস্থিতি মোকাবিলার প্রস্তুতি নিচ্ছি।’’ মৎস্যজীবীদের নদী এবং সমুদ্রে যেতে বারণ করা হয়েছে। শুক্রবার নদীতে নৌ চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হতে পারে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে।
ঝড়ের মোকাবিলায় তৎপরতা শুরু হয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনাতেও। বারুইপুরের মহকুমাশাসক দেবারতি সরকার জানান, উপকূলবর্তী প্রতিটি ব্লক এবং পঞ্চায়েতে কন্ট্রোল রুম খোলা হচ্ছে। শুক্রবার রাত থেকেই চালু থাকছে কন্ট্রোলরুমগুলি। মহকুমাশাসকের কার্যালয়েও কন্ট্রোল রুম খোলা হচ্ছে।
আয়লা পরবর্তী সময়ে উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতে বেশ কিছু ‘ফ্লাড সেন্টার’ করেছে সরকার। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ফ্লাড সেন্টারগুলিকে তৈরি রাখা হচ্ছে। প্রতিটি সেন্টারে যাতে আলো, জল-সহ সব ব্যবস্থা থাকে, তা দেখতে সংশ্লিষ্ট বিডিও-দের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পর্যাপ্ত শুকনো খাবার এবং পানীয় জল মজুত করতে বলা হয়েছে। কন্ট্রোল রুম খোলা হচ্ছে ক্যানিং মহকুমার প্রতিটি ব্লকেও। মহকুমাশাসক বন্দনা পোখরিয়াল বলেন, ‘‘সুন্দরবনে পর্যটকদের আনাগোনা শুরু হয়ে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে আমরা পর্যটকদেরও এই সময়টা সতর্ক থাকার পরামর্শ দিচ্ছি। তাঁরা যাতে নদীপথে না যান, সে দিকে নজর রাখা হচ্ছে।’’ আগাম সতর্কতা জারি করেছে কাকদ্বীপ মহকুমা প্রশাসনও। ওই মহকুমার সমস্ত ব্লক ও পঞ্চায়েতে সতর্ক থাকার নির্দেশ পাঠানো হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy