Advertisement
০৪ নভেম্বর ২০২৪
ভাঙড়-আন্দোলন

নেতাদের সঙ্গে থানায় হাজির কিছু গ্রামবাসী

সকাল সওয়া ১০টা। একদল লোককে সঙ্গে নিয়ে কাশীপুর থানায় ঢুকলেন তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলাম ও তাঁর ছেলে হাকিমুল। ওসি বিশ্বজিৎ ঘোষের সামনে হাতজোড় করে লোকজন বলতে থাকলেন, ‘‘স্যার, আমরা ভুল করেছি। আর আন্দোলনের সঙ্গে থাকতে চাই না।’’

থানায় আরাবুল।—নিজস্ব চিত্র

থানায় আরাবুল।—নিজস্ব চিত্র

সামসুল হুদা
ভাঙড় শেষ আপডেট: ২০ মে ২০১৭ ০২:১৮
Share: Save:

সকাল সওয়া ১০টা। একদল লোককে সঙ্গে নিয়ে কাশীপুর থানায় ঢুকলেন তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলাম ও তাঁর ছেলে হাকিমুল। ওসি বিশ্বজিৎ ঘোষের সামনে হাতজোড় করে লোকজন বলতে থাকলেন, ‘‘স্যার, আমরা ভুল করেছি। আর আন্দোলনের সঙ্গে থাকতে চাই না।’’

আরাবুল বলেন, ‘‘বড়বাবু, এরা সকলে পাওয়ার গ্রিডের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমেছিলেন। এখন নিজেদের ভুল বুঝতে পেরেছেন। সকলেই শান্তিতে থাকতে চান এলাকায়।’’

শুক্রবার সকালে যে শ’খানেক মানুষ জড়ো হয়েছিলেন থানায়, তাঁরা ভাঙড়ের খামারআইট, মাছিভাঙা, স্বরূপনগর, উড়িয়াপাড়া, পদ্মপুকুর গ্রামের বাসিন্দা। সকলেরই দাবি, পাওয়ার গ্রিড আন্দোলনে জড়িয়ে বড়সড় ‘ভুল’ করে ফেলেছিলেন।

আন্দোলন: শুক্রবার গ্রিড বিরোধীদের মিছিল।—নিজস্ব চিত্র

ভাঙড়ের স্থানীয় রাজনীতিতে আরাবুলের বিরোধী শিবিরের নেতা বলে পরিচিত কাইজার আহমেদ। তিনিও একই কায়দায় সন্ধের দিকে শ’দুয়েক লোক নিয়ে হাজির হন থানায়। এফআইআর-এ নাম থাকায় তাঁদের কেউ এসেছিলেন আত্মসমর্পণ করতে। কেউ আবার নিজেদের ‘ভুল’ বুঝতে পেরে আন্দোলন থেকে সরে দাঁড়াতে চান বলে জানালেন পুলিশকে।

১৭ জানুয়ারি ভাঙড়ে গ্রিড বিরোধী আন্দোলনে গোলমালের ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে বেশ কয়েকজনের নামে অভিযোগ হয়েছিল। অনেকে ধরা পড়েছেন। এফআইআর-এ নাম আছে, এমন কয়েকজন এ দিন থানায় আত্মসমর্পণ করেছেন। পুলিশ জানিয়েছে, আন্দোলনের নামে জনজীবন বিপন্ন করা যাবে না।

আরাবুল-কাইজারদের নেতৃত্বে এই ঘটনাকে আমল দিতে রাজি নন আন্দোলনের সঙ্গে যুক্তদের বড় অংশ। ভাঙড়ের ‘জমি, জীবিকা, বাস্তুতন্ত্র ও পরিবেশ রক্ষা কমিটি’র পক্ষ থেকে জানানো হয়, পুলিশের সহযোগিতায় আরাবুল ভয় দেখিয়ে কিছু লোককে জড়ো করে থানায় নিয়ে গিয়ে নাটক করেছেন।

এ দিনই বিধানসভার বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তীর নেতৃত্বে বামফ্রন্টের বিধায়ক প্রতিনিধি দল ও বিভিন্ন গণসংগঠনের নেতারা মাছিভাঙা, খামারআইট গ্রামে যান। নতুনহাট থেকে ঢিবঢিবা পর্যন্ত মিছিল করেন তাঁরা। পরিবেশ রক্ষা কমিটির অন্যতম সদস্য মির্জা হাসানের দাবি, যারা কোন দিনও আন্দোলনের সঙ্গে ছিলই না, এমন কিছু মানুষ এবং দুষ্কৃতীদের নিয়ে থানায় গিয়েছিলেন আরাবুল। এ দিন আন্দোলনকারীদের মিছিলে ভিড় হয়েছিল ভালই। সে কথা উল্লেখ করে সুজনবাবু বলেন, ‘‘ভাঙড়ের মানুষ আন্দোলনের সঙ্গেই আছেন। আন্দোলনকে দমাতে তৃণমূল এ সব করছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Arabul Islam Villagers Police Station
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE