সুন্দরবনে পর্যটক। —ফাইল চিত্র।
সুন্দরবন ভ্রমণের জন্য দিনপ্রতি পর্যটক সংখ্যা বেধে দিয়েছে বন দফতর। এর জেরে সমস্যায় পড়ছেন বহু পর্যটক। সুন্দরবন ভ্রমণে এসেও ঘুরতে না পেরে ফিরে যেতে হচ্ছে।
শীতকালে পর্যটকের ঢল নামে সুন্দরবনে। তবে গত ১ ডিসেম্বর থেকে এক দিনে পাঁচ হাজারের বেশি পর্যটককে এক সঙ্গে সুন্দরবনে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। স্থানীয় সূত্রের খবর, দিনে শ’দেড়শো জলযানকে অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। এর ফলে সুন্দরবনে এসেও গভীর জঙ্গলে ঢুকতে পারছেন না অনেকে। হতাশ হয়ে ফিরে যেতে হচ্ছে। অথবা গভীর জঙ্গল লাগোয়া নদী-খাঁড়ির পরিবর্তে লোকালয় লাগোয়া এলাকায় নদীতে ভ্রমণ করেই দুধের স্বাদ ঘোলে মেটাতে হচ্ছে!
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এই নিয়ম আগেও ছিল। কিন্তু এত দিন অফলাইনে পর্যটকদের সুন্দরবন ভ্রমণের অনুমতি দেওয়া হত।
ফলে ঠিক হিসেব রাখা সম্ভব হত না। সম্প্রতি সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের তরফে সম্পূর্ণ অনলাইনে অনুমতি নেওয়ার ব্যবস্থা চালু হয়েছে। ফলে পর্যটক প্রবেশের ঊর্ধ্বসীমা অতিক্রম করা যাচ্ছে না।
পর্যটন ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, এখন প্রতি দিন গড়ে দশ-বারো হাজার পর্যটক আসছেন। সেখানে অর্ধেকের বেশি পর্যটক জঙ্গলের অভ্যন্তরে ভ্রমণের অনুমতি পাচ্ছেন না। এর জেরে পর্যটন ব্যবসায়ীদের সঙ্গে প্রতি দিনই বচসায় জড়াচ্ছেন পর্যটকদের অনেকে। ‘প্যাকেজ বুকিং’ করে এসে জঙ্গলে ঢোকার অনুমতি না পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করছেন বহু পর্যটক।
ক্যানিংয়ের পর্যটন ব্যবসায়ী নিউটন সরকার, নিতাই রায়েরা বলেন, “অন্তত ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত যদি বন দফতর এই ঊর্ধ্বসীমার নিয়ম শিথিল করত, তা হলেও কিছুটা সামলানো যেত। এখন প্রতি দিনই পর্যটকদের সঙ্গে ঝামেলায় জড়াতে হচ্ছে। বেড়াতে এসে জঙ্গল না দেখে ফিরতে হচ্ছে বলে ক্ষোভও প্রকাশ করছেন অনেকেই।”
সোদপুরের বাসিন্দা নির্মল সরকার, সুবোধ মজুমদারেরা বলেন, “ পর পর দু’দিন চেষ্টা করেও অনলাইনে বুকিং করতে পারিনি। তাই হতাশ হয়েই এ বার ফিরে যেতে হচ্ছে।”
সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের ডেপুটি ফিল্ড ডিরেক্টর জোন্স জাস্টিন বলেন, “অতিরিক্ত জলযান প্রবেশে পরিবেশ দূষণ বাড়বে। ফলে প্রকৃতি ও পরিবেশকে রক্ষার জন্যই এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আগে অফলাইনে বুকিং হওয়ায় নিয়ম থাকলেও তা কার্যকর হয়নি। কিন্তু এখন অনলাইনে সেই নিয়মের বাইরে কিছুই করা সম্ভব নয়।”
এ দিকে, এই ঘটনার জেরে শনিবার উত্তর ২৪ পরগনার ঝিঙেখালি বিট অফিসের কাছেও বিক্ষোভ দেখান বোট মালিকদের একাংশ। বিক্ষোভকারীরা জানান, আগে ঝিঙেখালি থেকে সুন্দরবনে যাওয়ার অফলাইন অনুমতি মিলত।
উত্তর ২৪ পরগনা থেকে সুন্দরবনে ঢোকা জলযানগুলি মূলত এখান থেকেই অনুমতি নিত। কিন্তু অফলাইন অনুমতি দেওয়া বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সমস্যা বেড়েছে বলে সূত্রের খবর। উত্তরের অনেক বোট মালিকের প্রয়োজনীয় নথি না থাকায় অনলাইনে অনুমতি নিতে পারছেন না বলেও অভিযোগ। তার জেরেই বিট অফিসে বিক্ষোভ চলে। সমস্যার বিষয় খতিয়ে দেখা হবে বলে বন দফতর ও স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy