বৃহস্পতিবার বন্ধের দিন পঞ্চায়েত অফিস বন্ধ থাকার জেরে সিপিএম পরিচালিত হাবরা-১ ব্লকের বেড়গুম-১ পঞ্চায়েত অফিসে তালা ঝুলিয়ে দেয় এলাকার কিছু লোকজন। তাতে তৃণমূলের মদত ছিল বলেও অভিযোগ। ওই ঘটনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার পূর্ব নির্ধারিত সরকারি সভা বয়কট করেছে সিপিএম তথা বামেরা। সিপিএমের অভিযোগ, তাদের এক পঞ্চায়েত সদস্যকে এ দিন বিকেলে তৃণমূলের লোকজন মারধরও করেছে।
মঙ্গলবার হাবরা-১ ব্লক অফিসে ব্লকের সাতটি গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য, পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য ও জেলা পরিষদের সদস্যদের নিয়ে বৈঠক করেন বিডিও। সভায় আলোচনার বিষয় ছিল, এমএসডিপি (মাল্টি পারপাস ডেভলপমেন্ট প্রজেক্ট) নিয়ে আলোচনা। প্রকল্পটি মূলত সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকার জন্য। এই বৈঠকে সিপিএম তথা বামেদের পঞ্চায়েত স্তরের কোনও জনপ্রতিনিধি উপস্থিত হননি। হাবরা ১ পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি তৃণমূলের জাকির হোসেন বলেন, ‘‘সিপিএম বাস্তবে যে সংখ্যালঘুদের উন্নয়ন চায় না, তা এ দিনের সভাতে তাদের অনুপস্থিতিই প্রমাণ করে দিল।’’
পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী দলনেতা সিপিএমের অসীম ঘোষ অবশ্য বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত অফিসে বন্ধের দিন থেকে তৃণমূলের পক্ষ থেকে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিডিও-সহ জেলা প্রশাসনের কর্তাদের জানানো হয়েছে। বিডিও কোনও পদক্ষেপ করেননি। সে কারণেই এ দিনের সভা আমরা বয়কট করেছি।’’ হাবরা-১ বিডিও সজল দাস অবশ্য এ দিনই পঞ্চায়েত অফিসে গিয়ে তালা খোলার ব্যবস্থা করেন।
সোমবার সকাল থেকে পঞ্চায়েতের সামনে তৃণমূলের পক্ষ থেকে গ্রামবাসীদের নিয়ে প্রতিবাদ সভা ও অবস্থান-বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হচ্ছিল। যার নেতৃত্বে ছিলেন ওই পঞ্চায়েতের বিরোধী দলনেতা তৃণমূলের অসিতকুমার নাগ। বেলা সাড়ে ৩টে নাগাদ বিডিও পঞ্চায়েত অফিসে যান। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনা করে পঞ্চায়েতের তালা খুলে দেন তিনি। অবস্থান-বিক্ষোভ কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। প্রশাসন সূত্রের খবর, সে সময়ে বিডিও পঞ্চায়েত প্রধান মধুমিতা সরকারকে ঘটনাস্থলে আসতে অনুরোধ করলেও তিনি ব্যস্ত থাকায় আসতে পারেননি।
সিপিএমের অভিযোগ, পরে ওই পঞ্চায়েতের সিপিএম সদস্য নন্দলাল খাঁকে মারধর করা হয়েছে পঞ্চায়েত অফিসের সামনেই। প্রধানকেও শারীরিক ভাবে নিগ্রহ করা হয়েছে। সিপিএম নেত্রী স্বপ্না ঘোষের দাবি, ‘‘প্রধানকে ফোন করে বিডিও ডেকেছিলেন। পঞ্চায়েত সদস্যদের নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে বিডিও চলে যেতেই তৃণমূলের লোকেরা নন্দবাবুকে ব্যাপক মারধর করেছে। ইট দিয়ে মাথায় আঘাত করা হয়েছে। প্রধানকেও শারীরিক ভাবে নিগ্রহ করা হয়েছে।’’
যদিও পুলিশের দাবি, পঞ্চায়েত অফিসের সামনে পুলিশ ছিল। ওই এলাকায় কোনও ঘটনা ঘটেনি। যদিও নন্দবাবুকে প্রথমে হাবরা স্টেট জেনারেল হাসপাতাল ও পরে বারাসত জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তাঁর সিটি স্ক্যান করানো হয়েছে। ঘটনার প্রতিবাদে এলাকায় এ দিন সন্ধ্যায় সিপিএমের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ মিছিল ও সভা করা হয়।
তৃণমূলের পক্ষ থেকে মারধরের ঘটনার কথা উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। দলের হাবরা-১ ব্লকের সভাপতি অজিত সাহা বলেন, ‘‘পঞ্চায়েতে তালা দেওয়ার ঘটনার সঙ্গে নন্দবাবুকে ধাক্কাধাক্কি করার ঘটনার কোনও যোগ নেই। নন্দবাবুর প্রতি তৃণমূলের কোনও আক্রোশ নেই। তাঁকে তৃণমূলের কেউ মারধরও করেনি।’’
তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলেও পঞ্চায়েতে তালা ঝোলানোর ঘটনায় মদত দেওয়ার কথা মানতে চায়নি তারা। দলের নেতৃত্বের দাবি, দীর্ঘ দিন ধরে এলাকার মানুষ নাগরিক পরিষেবা পাচ্ছেন না। এমনকী বিভিন্ন শংসাপত্রও ঠিকমতো পাওয়া যায় না। তা নিয়ে গ্রামবাসীদের মধ্যে ক্ষোভ ছিল। বন্ধের দিন পঞ্চায়েত বন্ধ থাকায় মানুষ পরিষেবা পাননি। সেই ক্ষোভেই তালা ঝুলিয়ে দেন কিছু মানুষ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy