Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

তারা ‘বাংলাদেশি’, দাবি করেছিল জঙ্গিরা

পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে চোরাপথে মানুষ পারাপারের ঘটনায় জড়িত কয়েকজনকে বিএসএফ আটক করেছিল। তাদের জেরা করে বিএসএফের ১৯৩ ব্যাটেলিয়নের জি ব্রাঞ্চের কর্তারা জানতে পারেন, চারজন প্রশিক্ষিত লস্কর জঙ্গি বাংলাদেশ সীমান্ত পেরিয়ে ঢুকে পড়বে।

আদালতের পথে জঙ্গিরা।

আদালতের পথে জঙ্গিরা।

সীমান্ত মৈত্র
বনগাঁ শেষ আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০১৭ ০১:২৯
Share: Save:

পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে চোরাপথে মানুষ পারাপারের ঘটনায় জড়িত কয়েকজনকে বিএসএফ আটক করেছিল। তাদের জেরা করে বিএসএফের ১৯৩ ব্যাটেলিয়নের জি ব্রাঞ্চের কর্তারা জানতে পারেন, চারজন প্রশিক্ষিত লস্কর জঙ্গি বাংলাদেশ সীমান্ত পেরিয়ে ঢুকে পড়বে।

সে সময় স্থানীয় হরিদাসপুর ক্যাম্পের তৎকালীন অ্যাসিস্ট্যান্ট কমান্ডার অমিত যাদব ১২-১৩ জনের একটি বিশেষ দল তৈরি করেন। পেট্রাপোল সীমান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়েন সকলে।

সেটা ২০০৭ সালের ৪ এপ্রিল কথা।

পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে এ দেশে ঢুকতেই চারজনকে ধাওয়া করে ধরে ফেলেন জওয়ানেরা। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নিজেদের বাংলাদেশি বলে দাবি করেছিল ওই চারজন সন্দেহভাজন। পরে তদন্তে নেমে পুলিশ ও বিএসএফ জানতে পারে, ধৃতদের নাম শেখ সামির ওরফে শেখ নঈম, শেখ আবদুল্লা, মুজাফ‌্ফর আহমেদ রাঠৌর এবং মহম্মদ ইউনুস।

হরিদাসপুর ক্যাম্পে শুরু হয়েছিল বিএসএফ ও কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের দফায় দফায় জেরা। ক্যাম্পের বাইরে রাস্তায় বহু মানুষ জড়ো হন জঙ্গিদের দেখতে। ধৃতদের কাছ থেকে উদ্ধার হয় কলেজের পরিচয়পত্র, এ দেশের সচিত্র ভোটার পরিচয়পত্র, ড্রাইভিং লাইসেন্স, এ দেশের মানচিত্র, প্রচুর ডলার ও ভারতীয় টাকা।

ঢাকা থেকে তারা একটি বেসরকারি পরিবহণ সংস্থার বাসে বেনাপোলে এসে ব্যানাআচড়া গ্রামে ঘাঁটি গেড়েছিল। বেনাপোল সীমান্ত পেরিয়ে এ দেশে ঢোকার সময়ে এক জঙ্গি নিজের মোবাইল‌ের সিম কার্ড খুলে খেয়ে নিয়েছিল। পরে নানা চেষ্টায় তার পেট থেকে সেই সিমকার্ড বের করা হয়। অন্যেরা যে যার মোবাইল ফোন থেকে সিমকার্ড খুলে ফেলে ফেলেছিল। যা খুঁজতে বিএসএফ প্রশিক্ষিত কুকুরের সাহায্য নেয়।


পলাতক সামির।

ধৃতেরা পাকিস্তানের মাটিতে দু’দফায় অস্ত্র প্রশিক্ষণ নিয়েছিল বলে সিআইডি জানতে পেরেছিল। প্রশিক্ষণের সময়ে তাদের নির্দিষ্ট পোশাকও দেওয়া হয়। সেখানেই তারা একে-৪৭, হ্যান্ড গ্রেনেড চালানো শেখে বলে বিএসফের দাবি ছিল। রাওয়ালপিন্ডি থেকে বাগ এয়ারলাইন্সে চেপে ঢাকায় আসে সামির ছাড়া বাকি তিনজন। এ দিকে কলকাতা হয়ে চোরাপথে পেট্রাপোল দিয়ে সামির ঢাকায় যায়। সেখানে মতিঝিল এলাকায় একটি হোটেলে সে ওই তিনজনের সঙ্গে দেখা করে। দালাল ধরে কাশ্মীরের অনন্তনাগে সকলকে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্য ছিল সামিরের। এক সময়ে কলকাতাতেও ছিল এই জঙ্গি।

—নিজস্ব চিত্র।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE