প্রতীকী ছবি।
এলাকার ‘বেতাজ বাদশা’ রাজনৈতিক শিবির বদলের পর থেকেই শুরু হল অশান্তি। এলাকার রাজনৈতিক ক্ষমতা কার হাতে থাকবে, তা নিয়ে শুরু হল চাপানউতর। শুরু হল বোমা-গুলির লড়াই। খুনোখুনি।
চুম্বকে, কাঁকিনাড়া-ভাটপাড়ার এই হল পরিস্থিতি। মাঝে কিছু দিন শান্ত থাকলেও ফের চড়ছে উত্তেজনার পারদ। ভোটের আগে আরও অশান্ত হতে পারে এলাকা, মনে করছেন স্থানীয় বাসিন্দাদের বড় অংশ।
এই অঞ্চলের রাজনীতিতে এক সময়ে অর্জুন সিংহই ছিলেন শেষ কথা। বাম আমল থেকে তিনি দীর্ঘ দিনের তৃণমূল বিধায়ক। ভাটপাড়ার পুরসভার চেয়ারম্যানও ছিলেন। কিন্তু পরিস্থিতি বদলায় লোকসভা ভোটের আগে থেকে।
সে বার ভোটে ব্যারাকপুর কেন্দ্রে টিকিট চেয়েছিলেন অর্জুন। রাজি হননি দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মার্চের শেষ দিকে বিজেপিতে যোগ দিয়ে ব্যারাকপুরে প্রার্থী হন অর্জুন। বিধানসভা উপনির্বাচনে প্রার্থী করেন পুত্র পবন সিংহকে। গোলমালের সেই শুরু।
সব থেকে বড় গোলমাল হয় ভাটপাড়া বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনের দিন। বোমা-গুলির লড়াই বাধে দু’পক্ষের মধ্যে। পোড়ে পুলিশের গাড়ি।
লোকসভা ভোটের ফল প্রকাশের রাত থেকে পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ। অর্জুন জিতলেন সাডে ১৪ হাজার ভোটে। সেই রাতেই পুরো ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে তৃণমূলের শতাধিক দলীয় কার্যালয় ‘দখল’ হয়ে গেল। পরের দু’দিনে দখল হয়ে গেল তিনটি পুরসভা। সব থেকে অশান্ত হল অর্জুনের নিজের গড়, ভাটপাড়া-কাঁকিনাড়া। তাণ্ডব শুরু হল পথেঘাটে।
পরের তিন মাস শহরের কোনও দোকান খোলেনি। তালাবন্ধ ছিল স্কুল। এমনকী, টিউশন নিতে বাড়ির বাইরে বেরোতে পারেনি পড়ুয়ারা। দিনেদুপুরে লুটপাট চলেছে দোকানে দোকানে। গুলিতে প্রাণ গিয়েছে দুই নিরীহের।
প্রশাসনের বহু চেষ্টার পরে ধীরে ধীরে শান্ত হয়েছে ভাটপাড়া। কিন্তু, সে-ও খুব অল্প দিনের জন্য। মার্চে শুরু হল লকডাউন। ক্রমশ সেই পর্বেও তেতে উঠতে থাকল ভাটপাড়া। তিনটি ঘটনায় এক হাজারের বেশি বোমা উদ্ধার হয়েছে এখানে। গত তিন মাসে ২৫ বারের বেশি বোমাবাজির ঘটনা ঘটেছে বলে জানাচ্ছে পুলিশ। গুলি চলেছে অন্তত পাঁচবার।
মহরমের আগের সন্ধ্যায় মামুলি গোলমালের জেরে দুষ্কৃতীদের গুলিতে খুন হয় এক পড়ুয়া। সম্প্রতি দুই বিজেপি কর্মীকে জখম অবস্থায় পাওয়া গিয়েছিল। পরে হাসপাতালে মৃত্যু হয় দু’জনেরই।
দল বদলের পরে পুরপ্রধানের পদ গিয়েছে অর্জুনের। এখন নানা মামলায় জড়িয়ে কিছুটা ব্যাকফুটে। সম্প্রতি টিটাগড়ে খুন হয়েছেন তাঁর ঘনিষ্ঠ সঙ্গী, বিজেপি নেতা মনীশ শুক্ল। অর্জুন বলেন, “তৃণমূল রাজনৈতিক লড়াইয়ে এঁটে উঠতে না পেরে পুলিশ দিয়ে খুনের রাজনীতি করছে। টিটাগড়ে মণীশ শুক্লকে সে ভাবেই খুন করা হয়েছে।” নৈহাটির বিধায়ক পার্থ ভৌমিকের কথায়, “বিজেপি লাশ নিয়ে রাজনীতি করছে। এ ভাবেই ওরা মানুষের সহানুভূতি পেতে চাইছে। মানুষ ভাল করেই জানে, গত লোকসভা ভোটের পরে কারা এলাকা অশান্ত করে তুলেছিল।”
এই আকচাআকচি আগামী কয়েক মাসে আরও বাড়বে, তা বিলক্ষণ আন্দাজ করতে পারছেন বাসিন্দারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy