ক্যামেরা খোলার সময়ে। সুন্দরবনে
বাঘ গণনার জন্য জঙ্গলে পাতা হয়েছিল ক্যামেরা। সেই ক্যামেরা থেকে বেশ কয়েকটি ক্যামেরা চুরি করে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। বনকর্মীদের নজরদারি এড়িয়ে কী ভাবে ক্যামেরা চুরি হল, তা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন।
গত কয়েক বছর ধরে বন দফতর বাঘ গণনার কাজে বিভিন্ন জঙ্গলে বিশেষ প্রযুক্তি সম্পন্ন ক্যামেরা পাতে। তাতে তোলা ছবি থেকে বাঘ পর্যবেক্ষণ করে পরিসংখ্যান জানার চেষ্টা চলে। তা ছাড়াও বাঘের মলমূত্র, পায়ের ছাপ-সহ অন্য নমুনা সংগ্রহ করে পর্যবেক্ষণ করা হয়। তারও আগে বাঘের পায়ের ছাপ পর্যবেক্ষণ করে বাঘের সংখ্যা গণনা করা হত। কিন্তু সেই তথ্যে অনেক ভুল থাকায় বাঘের গায়ের ডোরাকাটা দাগ পর্যবেক্ষণ করতে ক্যামেরা লাগানোর সিদ্ধান্ত নেয় বন দফতর।
১০ ডিসেম্বর থেকে সুন্দরবনে ব্যাঘ্র প্রকল্প দফতরের অধীনে বসিরহাট রেঞ্জ, সজনেখালি রেঞ্জ, জাতীয় উদ্যান পূর্ব-পশ্চিম রেঞ্জ এলাকায় বাঘ গণনার কাজে ১২০০ ক্যামেরা লাগানো হয়। দক্ষিণ ২৪ পরগনা বনবিভাগের অধীন রেঞ্জ অফিসের জঙ্গলগুলিতেও ক্যামেরা বসানো হয়েছিল। এ বছর জানুয়ারি মাসের ১৩-১৯ তারিখ জঙ্গলে ওই ক্যামেরা খোলার কাজ শুরু হয়। বনকর্মীরা জঙ্গল থেকে ক্যামেরা খুলতে গিয়ে দেখেন, বেশ কয়েকটি ক্যামেরা চুরি গিয়েছে।
ব্যাঘ্র প্রকল্প দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জাতীয় উদ্যান পূর্ব রেঞ্জ অফিসের অধীনে জঙ্গলে ১৮৭ জোড়া ক্যামেরা লাগানো হয়েছিল। তার মধ্যে ফুলখালি জঙ্গল থেকে ১টি ক্যামেরা চুরি হয়ে গিয়েছে। সজনেখালি রেঞ্জ অফিস থেকে জঙ্গলে ৬০ জোড়া ক্যামেরা পাতা হয়। দোবাঁকি জঙ্গল থেকে একটি ক্যামেরা চুরি গিয়েছে। বসিরহাট রেঞ্জ অফিসের অধীন জঙ্গলে ১২২ জোড়া ক্যামেরা পাতা হয়েছিল। তার মধ্যে উত্তর চড়া জঙ্গল থেকে ২টি ক্যামেরা চুরি যায়। জাতীয় উদ্যান পশ্চিম রেঞ্জ এলাকায় দু’টি ক্যামেরা দুষ্কৃতীরা খুলে ফেলে দিয়েছিল। পরে বন দফতরের কর্মীরা সেগুলি খুঁজে পান।
ব্যাঘ্র প্রকল্প দফতর ও স্থানীয় সূত্রের খবর, অনেক মৎস্যজীবী আছেন, যাঁদের কাছে বৈধ কাগজপত্র না থাকা সত্ত্বেও জঙ্গলে মাছ-কাঁকড়া সংগ্রহ করতে যান। তাঁদের অনেকেই নৌকো থেকে জঙ্গলে নেমে কাঁকড়ার ফাঁদ, মাছ ধরার জাল পাতেন। বনকর্মীদের হাতে ধরা পড়ার ভয়ে অনেক সময়ে তাঁরা ক্যামেরা চুরি করে থাকতে পারেন বলে অভিযোগ।
সুন্দরবনের অধিকাংশ জঙ্গল বাংলাদেশ-লাগোয়া হওয়ায় প্রায়ই বাংলাদেশি চোরাশিকারিরা সুন্দরবনের জঙ্গলে ঢুকে বন্যপ্রাণী শিকার করে। অতীতে ঝিলার জঙ্গলে বাঘের দেহ পাওয়া গিয়েছিল। এ ক্ষেত্রে চোরাশিকারিরাও ক্যামেরার নজরদারি এড়াতে ক্যামেরা চুরি করে থাকতে পারে।
ব্যাঘ্র প্রকল্প দফতরের এএফডি অনিন্দ্য গুহ ঠাকুরতা বলেন, ‘‘কয়েকটি ক্যামেরা চুরি হয়েছে বলে জানতে পেরেছি। পুরো বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এখনও কাউকে ধরা যায়নি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy