অব্যবস্থা: স্যাঁতসেঁতে মেঝে ও নোনা ধরা দেওয়ালের ঘরেই চলছে পঠনপাঠন। —নিজস্ব চিত্র।
স্কুলের প্রতিটি দেওয়াল, ঘরের ছাদ জরাজীর্ণ। বৃষ্টি হলে শ্রেণিকক্ষে জল জমে যায়। হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকের গোবিন্দকাটি পঞ্চায়েতের উত্তর কাঁঠালবেড়িয়া এফপি স্কুলে ছুটির ঘণ্টা পড়ার আগেই বাধ্য হয়ে ছুটি দিতে হয়।
১৯৭৩ সালে প্রতিষ্ঠিত এই স্কুলে এখন পড়ুয়ার সংখ্যা ৫২ জন। প্রাক প্রাথমিক থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত মোট ৫টি শ্রেণি রয়েছে। এক জন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও এক জন সহকারী শিক্ষক আছেন। স্কুলে ঘর তিনটি। এরই মধ্যে একটি শ্রেণিকক্ষের অবস্থা জরাজীর্ণ। ফলে সেখানে পঠন-পাঠন করানো যায় না। ওই ঘরে আপাতত পড়ুয়ারা বসে মিড ডে মিল খায়। আর একটি ঘরে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বসেন। সেখানে অফিসের কাগজপত্র ও বই থাকে। অন্য বড় হল ঘরে সব শ্রেণির পড়ুয়াদের এক সঙ্গে বসানো হয়।
কিন্তু এই ঘরটি নেহাতই বেহাল। দেওয়াল ও পিলারে বড় বড় ফাটল ধরেছে। বৃষ্টি হলেই ছাদ চুঁইয়ে জল পড়ে মেঝেতে। বেশি বৃষ্টি হলে পড়ুয়াদের বসতে দেওয়ার জায়গা থাকে না। অগত্যা টিফিন পিরিয়ডে স্কুল ছুটি দিতে বাধ্য হন শিক্ষকেরা।
স্কুলের ঘরগুলিতে দরজা-জানালার পাল্লা নেই। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সুব্রত আচার্য জানান, হল ঘরে একটি গ্রিল বসানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু নড়বড়ে স্কুল ভবনে গ্রিল বসাতে গিয়ে বিভিন্ন জায়গা থেকে চাঙড় খসে পড়তে শুরু করে। স্কুলের তিনটি ঘরের দেওয়ালেই নোনা ধরে গিয়েছে। বহু আসবাব নষ্ট হচ্ছে।
জরাজীর্ণ এই স্কুলে অনেক অভিভাবক সন্তানদের ভর্তি করতে চাইছেন না। অসুবিধা সত্ত্বেও দূরের স্কুলে ভর্তি করছেন ছেলেমেয়েদের। অভিভাবক ভোলানাথ পাল, রোজিনা বিবি, শঙ্কর সর্দারেরা জানান, বৃষ্টি হলে বাচ্চাদের পাঠাতে ইচ্ছে করে না। ক্লাসঘরে জল জমে যায়। স্কুলের ভিতরে স্যাঁতসেঁতে পরিবেশ। যে কোনও দিন দুর্ঘটনা ঘটতে পারে চাঙড় খসে। বাচ্চাদের স্কুলে পাঠিয়ে চিন্তায় থাকতে হয়।
স্কুলে মাত্র দু’জন শিক্ষক থাকায় এক জন শিক্ষককেই একাধিক শ্রেণির পড়ুয়াকে এক সঙ্গে পড়াতে হয়। কখনও এক জন না এলে অন্য জনকে একাই ৫টি ক্লাস করাতে হয়। সুব্রত বলেন, “ভবনটি অত্যন্ত বিপজ্জনক হয়ে গিয়েছে। যে কোনও দিন দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে বার বার জানিয়েছি। এখনও সমস্যার সমাধান হয়নি। অভিভাবকেরা সম্প্রতি জানিয়েছিলেন, স্কুলে আর শিশুদের পাঠাবেন না। আমি দায়িত্ব নিয়ে স্কুলে তাদের ফেরানোর ব্যবস্থা করেছি। তবে স্কুলের অবস্থা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।”
স্কুল পরিদর্শক জানিয়েছিলেন, এই ভবন ছেড়ে আপাতত আশেপাশের কোনও ক্লাব বা কারও বাড়িতে পড়ুয়াদের নিয়ে পঠনপাঠন চালাতে। কিন্তু তেমন কোনও সুযোগ নেই বলে জানালেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। স্কুল পরিদর্শক সামসুদ্দিন লস্করকে ফোন করা হলে তিনি ধরেননি। মেসেজেরও উত্তর আসেনি। হিঙ্গলগঞ্জের বিডিও শাশ্বতপ্রকাশ লাহিড়ী বলেন, “জেলায় এই স্কুলের বিষয়ে জানাবো। আমাদের তরফেও যাতে এই স্কুলে নতুন একটি শ্রেণিকক্ষ করে দেওয়া যায়, তা দেখা হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy