কর্মসূচি: বাম-কংগ্রেসের
অশোকনগর-কল্যাণগড় পুরসভা থেকে বার্ধক্য ভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা এবং মিড ডে মিলের প্রায় তিন কোটি তছরুপের অভিযোগ উঠেছিল কয়েক বছর আগে। ওই টাকা পুরসভায় ফিরিয়ে আনার দাবিতে পুরপ্রশাসক প্রবোধ সরকারের কাছে মঙ্গলবার স্মারকলিপি দেওয়া হল বাম-কংগ্রেসের পক্ষ থেকে। পুরসভার সামনে অবস্থান-বিক্ষোভ এবং প্রতিবাদ সভা হয়। ২০১৯ সালেও সিপিএম পক্ষ থেকে একই দাবিতে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছিল।
অশোকনগরের প্রাক্তন বিধায়ক সিপিএমের সত্যসেবী কর বলেন, ‘‘গরিব মানুষের তছরুপ হওয়া প্রায় তিন কোটি টাকা ফেরানোর দাবিতে এর আগেও আমরা পুরসভায় স্মারকলিপি দিয়েছিলাম তৎকালীন পুরপ্রধান প্রবোধ সরকারের কাছে। উনি আশ্বাস দিয়েছিলেন, টাকা ফিরিয়ে আনার। উনি পুরপ্রধান থাকাকালীন টাকা ফেরাতে পারেননি। এখন উনি পুরপ্রশাসক। আমরা বলেছি, টাকা না ফেরালে মানুষ তার জবাব দেবেন।’’ পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, অতীতে তৃণমূল পরিচালিত পুরবোর্ডের আমলে টাকা তছরুপের অভিযোগ ওঠে। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, বিভিন্ন ভাতা এবং মিড ডে মিল প্রকল্পের টাকা পুরসভার অ্যাকাউন্টে ছিল। অভিযোগ, সেই টাকা থেকে ৫০ লক্ষ টাকার চারটি চেকে দু’টি সংস্থাকে ২ কোটি টাকা কোনও কারণ ছাড়াই দেওয়া হয়েছিল। কেন টাকা দেওয়া হল, তার কোনও সঙ্গত ব্যাখ্যা মেলেনি। একটি ব্যাঙ্কে ৯২ লক্ষ টাকা জমা করার কথা ছিল। সেই টাকা ব্যাঙ্ক কর্মীরা নগদে নিয়ে যান। কিন্তু টাকা তাঁরা ব্যাঙ্কে জমা করেননি বলে অভিযোগ। তৎকালীন পুরপ্রধান সমীর দত্ত দাবি করেছিলেন, তাঁর সই নকল করে সংস্থা দু’টিকে টাকা দেওয়া হয়েছে।
তছরুপের ঘটনাটি ঘটেছিল ২০১২-১৪ সালের মধ্যে। ২০১৫ সালে পুরসভা ভোটে জিতে তৃণমূল ফের পুরবোর্ড গঠন করে। এ বার পুরপ্রধান হন প্রবোধ সরকার। পুরসভা মেয়াদ শেষ হয়েছে কয়েক মাস আগে। পুরপ্রশাসক হয়েছেন প্রবোধ। তছরুপের ঘটনায় ২০১৬ সালে অশোকনগর থানায় লিখিত অভিযোগ করেন তিনি। তদন্তে নেমে পুলিশ দুই পুরকর্মী-সহ সাতজনকে গ্রেফতার করে। প্রবোধ বলেন, ‘‘ওই টাকা পুরসভার তহবিলে ফিরিয়ে আনতে আমরা বারাসত জেলা আদালত ও হাইকোর্ট মামলা করেছি। করোনা পরিস্থিতির কারণে আদালতে তারিখ পেতে দেরি হয়েছে। দোষীদের কাউকে ছাড়া হবে না। টাকা ফেরনোর জন্য সব রকমের চেষ্টা করা হচ্ছে।’’ এ দিন বাম-কংগ্রেসের পক্ষ থেকে আরও কয়েকটি দাবি তোলা হয়েছে স্মারকলিপিতে। অভিযোগ, পুর পরিষেবা বিপর্যস্ত। রাস্তা বেহাল। নিকাশি বলে কিছু নেই। মশার উপদ্রব শুরু হয়েছে। এ সবের সমাধান করতে হবে বলে দাবি জানানো হয়েছে। সেই সঙ্গে দ্রুত পুরভোট করার দাবিও তোলা হয়েছে। গরিব মানুষের পাকা বাড়ি তৈরির জন্য টাকা সময় মতো দেওয়া হচ্ছে না বলেও বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ। সত্যসেবী বলেন, ‘‘পুরপ্রশাসককে আমরা এ দিন বলেছি, অশোকনগরের তেল ও গ্যাস প্রকল্প এলাকায় চাষাবাদ করা কৃষকদের ব্যক্তি মালিকানা জমির খোঁজ না করে ন্যায্য ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যবস্থা করুক পুরসভা।’’
প্রবোধ বলেন, ‘‘রাজনৈতিক কারণে ওঁরা স্মারকলিপি দিয়েছেন। অভিযোগের সারবত্তা নেই। পুরভোট করার দায়িত্ব রাজ্য নির্বাচন কমিশনের। ২৩টি ওয়ার্ডে আলো, নিকাশি, রাস্তা ভাল। বাড়ি তৈরির টাকা করোনার সময়ে দীর্ঘ দিন আসেনি। কিছু দিন আগে টাকা এসেছে। টাকা দিয়ে দেওয়াও হয়েছে। ওএনজিসি প্রকল্প এলাকায় যাঁরা চাষাবাদ করতেন, তাঁরা ক্ষতিপূরণ পান সেটা আমরাও চাই। চাষিরা জমির নথিপত্র দেখাতে পারেননি। জমির নথিপত্র জমা দিলে আমরা লড়াই করব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy