লোপাট: সন্ধে নামলেই শুরু হবে মাটি কাটা। চলছে তারই তোড়জোড়। শাসনের গ্রামে ছবিটি তুলেছেন সুদীপ ঘোষ।
এ বার দিনের বদলে সন্ধ্যা থেকে রাত!
পুলিশ প্রশাসনের অভিযানের পরে দিন পনেরো বারাসত-২ ব্লকের শাসন-খড়িবাড়ি এলাকার কৃষিজমি থেকে বেআইনি ভাবে মাটি কাটা বন্ধ ছিল। এ বার মাটি-মাফিয়ারা সময়ই বদলে ফেলেছে। বড় বড় যন্ত্র এনে সেই কাজ শুরু হচ্ছে সন্ধ্যা থেকে। চলছে রাতভর। প্রশাসনের নিষেধের তোয়াক্কা না-করেই।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, দিনের বেলা দেখে কিছুই বোঝা যাবে না। সন্ধে নামতেই শুরু হয়ে যাচ্ছে মাটি কাটা। সে জন্য কিছু ক্ষেত্রে হুকিং করে বিদ্যুতের ব্যবস্থাও করা হচ্ছে। ৬০-৭০টি ট্রাকে প্রতিদিন সেই মাটি চলে যাচ্ছে ইটভাটা বা নিচু জমি ভরাটের কাজে। গভীর রাতে ট্রাকের যাতায়াতে ঘুম নষ্ট হচ্ছে গ্রামবাসীর।
কৃষিজমির মাটি কাটা যায় না বলে আগেই জানিয়েছিলেন উত্তর ২৪ পরগনার অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি ও ভুমি সংস্কার দফতর) দিব্যেন্দু ভট্টাচার্য। শাসন-খড়িবাড়িতে মাটি-মাফিয়াদের দৌরাত্ম্যের কথা জানতে পেরে দিন পনেরো আগে অভিযান চালিয়েছিল পুলিশ প্রশাসন। বাজেয়াপ্ত হয় ২০টিরও বেশি মাটি কাটার যন্ত্র, আটক হয় কিছু ট্রাক। গ্রেফতার হয় ১৫ জন মাটি-কারবারি। এর পরে এক ছটাকও মাটি কাটা হলে দোষীকে জামিনঅযোগ্য ধারায় গ্রেফতার করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন পুলিশ প্রশাসনের কর্তারা।
কিন্তু শনিবার থেকে রাতের অন্ধকারে ফের মাটি কাটা শুরু হয়েছে। শাসন থানার ৫০০ মিটার দূরে পাকদহে গোলাবাড়ি-আমিনপুর রোডের পাশেই চলছে সেই কাজ। দুগদিয়া মোড়েও একই ছবি। বৃহস্পতিবার দুপুরে সেখানে দেখা গেল, যেখানে মাটি কাটা হচ্ছে, সেখানে রাখা রয়েছে মাটি কাটার যন্ত্র। আমিনপুর রোডে সার দিয়ে দাঁড়িয়ে ট্রাক। অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি ও ভুমি সংস্কার দফতর) অবশ্য জানিয়েছেন, পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায়ের আশ্বাস, ‘‘দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
কিন্তু পুলিশেরই একটি অংশ মনে করছে, যে ব্যবসায় প্রতিদিন ৫০-৬০ লক্ষ টাকা লেনদেন হয়, তা সহজে বন্ধ করা যাবে না।
ওই পুলিশকর্মীরা মানছেন, যে মাটি-কারবারিদের নামে আগে এফআইআর হয়েছিল, তারা এতটাই প্রভাবশালী যে গ্রেফতার হয়নি। তারাই বুক ফুলিয়ে এ কাজ করছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, পুলিশের একাংশও ওই কাজে মদত দিচ্ছে। তাই মাটি কাটা বন্ধ হচ্ছে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy