খেতে জমা জল বের করছেন এক চাষি। নিজস্ব চিত্র ।
চৈত্র মাসে সকাল থেকে টানা বৃষ্টি। তার জেরেই ভাঙড়ের অধিকাংশ নিচু জমিতে জল দাঁড়িয়ে গিয়েছে। ফলে গ্রীষ্মকালীন আনাজের সঙ্গে ফুল চাষেও ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন চাষিরা। তবে এই বৃষ্টিতে ধান ও আম চাষের লাভ হবে বলে আশাও রয়েছে। বিশেষ করে বৃষ্টিতে আমের মুকুল ঝরে পড়বে না, বরং বোঁটা শক্ত হবে বলে জানাচ্ছেন আমচাষিরা। তাই এ যেন কার্যত আমের পৌষমাস, আনাজের সর্বনাশ!
মঙ্গলবার রাত থেকে শুরু হয়েছে টানা বৃষ্টি। বুধবার সকাল থেকে কখনও মাঝারি বৃষ্টি, কখনও হালকা বৃষ্টি নাগাড়ে হয়ে চলেছে। ভাঙড়ের বিভিন্ন এলাকায় নিচু জমিতে জল দাঁড়িয়ে গিয়েছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার হর্টিকালচার দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় প্রায় ৮৪ হাজার হেক্টর জমিতে গ্রীষ্মকালীন বেগুন, কুমড়ো, লাউ, পটল, উচ্ছে, ঝিঙে, লঙ্কা-সহ নানা ধরনের আনাজ চাষ হয়। এর মধ্যে ভাঙড় ১ ব্লকে ১২০০ হেক্টর জমিতে আনাজ চাষ হয়। ভাঙড় ২ ব্লকে প্রায় ২৫০০ হেক্টর জমিতে আনাজ চাষ হয়।
জেলায় প্রায় চার হাজার হেক্টর জমিতে ফুলেরও চাষ হয়। ভাঙড়ের সাতুলিয়া, গাবতলা, মাঝেরাহাট, পোলেরহাট, পানাপুকুর, ভুমরু, নওয়াবাদ, চিলেতলা, চন্দনেশ্বর, বোদরা, শাঁকশহরের সঙ্গে জেলার জীবনতলা, জয়নগর, কুলতলি সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় আনাজ ও ফুল চাষ হয়। সেই সব এলাকার চাষিরা উদ্বিগ্ন। ভাঙড়ের পানাপুকুর গ্রামের আনাজ চাষি আনোয়ার আলি বলেন, ‘‘মাঠে এই সময়ে আমার এক বিঘা জমিতে ফুলকপি, ১৫ কাঠা জমিতে লঙ্কা ও পটল চাষ করেছি। মাঠে জল দাঁড়িয়ে গিয়েছে। ফুলকপি পচে যাবে, লঙ্কা গাছ মরে যাবে।’’
চাষিরা জানাচ্ছেন, গত বছরও অকালবৃষ্টিতে ফসলের ক্ষতি হয়েছিল। মহাজনের ধারদেনা শোধ করে এ বছর গ্রীষ্মকালীন আনাজের চাষ করেছিলেন। কিন্তু যা পরিস্থিতি খরচের টাকা উঠবে কি না সন্দেহ। তবে উঁচু জমিতে জল না দাঁড়ানোয় সেখানে আনাজের ক্ষতির আশঙ্কা নেই বলে আশ্বাস দিয়েছে কৃষি দফতর।
জেলা হর্টিকালচার দফতরের কৌশিক চক্রবর্তী বলেন, ‘‘মাঠ থেকে জল অবিলম্বে বের করে দিতে হবে। যদি জল দাঁড়িয়ে যায়, তা হলে আনাজের ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।’’
তবে এতে আম চাষের ক্ষেত্রে লাভ হবে বলে ব্লক কৃষি দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে। ভাঙড়ে গত বছর আমের ফলন ভাল হয়নি। আম চাষি সেলিম মোল্লা বলেন, ‘‘৪টি আম বাগান কিনে গাছ পরিচর্যা করছি। ভাল মুকুল হয়েছে। বৃষ্টি হওয়ায় আমের মুকুল ঝরে পড়বে না। আমের গুটি শক্ত হবে। বাজার ভাল থাকলে এ বার কিছুটা লাভের মুখ দেখব।’’
ভাঙড় ১ ব্লকের কৃষি আধিকারিক সফিকুল হাসনাতের পরামর্শ, ‘‘যদি এ রকম আবহাওয়া চলতে থাকে তা হলে প্রতিষেধক ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। কীটনাশক স্প্রে করতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy